দেশজুড়ে

ভূমি অধিগ্রহনের টাকা পায়নি ক্ষতিগ্রস্থরা পটিয়ায় সেতু নির্মাণ কাজ অর্ধেক ফেলে ঠিকাদার উধাও

  প্রতিনিধি ৬ ডিসেম্বর ২০২০ , ৬:৩০:০৪ প্রিন্ট সংস্করণ

ভূমি অধিগ্রহনের টাকা পায়নি ক্ষতিগ্রস্থরা পটিয়ায় সেতু নির্মাণ কাজ অর্ধেক ফেলে ঠিকাদার উধাও

সনজয় সেন, পটিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের পটিয়ায় একটি গার্ডার সেতুর নির্মাণ কাজ ৫৭ ভাগ অসম্পন্ন রেখেই ঠিকাদার উধাও হয়ে যাওয়ায় এক বছর ধরে কাজ বন্ধ রাখার অভিযোগ উঠেছে। এদিকে এলজিইডি অফিসের কতিপয় কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ১৪ কোটি টাকার বিলও উত্তোলন করেছে ঠিকাদার বলে জানা যায়। স্থানীয়দের অভিযোগ সেতুর উভয় পাড়ের জায়গা সরকার অধিগ্রহণ করলেও ক্ষতিপূরণের টাকা পরিশোধ করা হয়নি। ভূমির মালিকেরা টাকা না পাওয়ায় এলাকার মানুষের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। এ সুযোগে ঠিকাদারও নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে বলে স্থানীয়রা জানায়।
তবে পূর্বের টেন্ডার বাতিল করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) গত ২৪ নভেম্বর পুনরায় টেন্ডার দেন। অভিযোগ ওঠেছে, সেতুর উভয় পাড়ে যে ভুমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে, তার টাকা এখনো ক্ষতিগ্রস্থদের পরিশোধ করেনি কর্তৃপক্ষ। অথচ চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের এলএ শাখায় ক্ষতিগ্রস্থদের টাকা এলজিইডি নির্দিষ্ট সময়ে হস্তান্তর করেছে। কিন্তু এলএ শাখার কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবহেলার কারণে ভুমি অধিগ্রহনের টাকা পরিশোধ হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলার জিরি ইউনিয়নের শিকলবাহা খালের উপর ২০১৭ সালে এলজিইডির অর্থায়নে ৩৯০ মিটারের একটি গার্ডার সেতু নির্মাণ কাজ শুরু করে। সেতু নির্মান কাজের জন্য শুরুতে ৪১ কোটি ২৫ লাখ ৪২ হাজার ২৭৮ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স আল-আমিন কনস্ট্রাকশন কোঃ লি: তাহের ব্রাদার্স লিমিটেড জেভি নির্মাণ কাজের কার্যাদেশ পান। সেতুর পূর্ব পাড়ে কাজের গতি থাকলেও ভুমি অধিগ্রহনের জটিলতা নিয়ে ঠিকাদার খালের পশ্চিম পাড়ে কোন কাজ করতে পারেনি। ২০১৭ সালের ৩০ ডিসেম্বর পটিয়ার সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। পূর্বের ঠিকাদারকে প্রায় ১৪ কোটি টাকা বিল দেওয়া হয়েছে বলে এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে। বর্তমানে অসমাপ্ত কাজের জন্য নতুন টেন্ডার প্রক্রিয়ায় আরো ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম ভোলা জানান, সেতু নির্মান কাজ করতে গিয়ে কিছু ভূমি অধিগ্রহণ করেছে সরকার, ভূমির টাকাগুলো নাকি কারা খেয়ে ফেলছে, বিভিন্ন দপ্তরে গিয়েও ক্ষতিগ্রস্থরা টাকা পাননি, আমি নিজেও এলাকার ক্ষতিগ্রস্থদের বিষয়ে বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করেছিলাম কাজ হয়নি, এলাকার মানুষ আগে বাপ দাদার জমির টাকা চান পরে সেতু হবে কি হবে না সেটা নিয়ে চিন্তা করবে বলে তিনি জানান। এ বিষয়ে হুইপের উন্নয়ন সমন্বয়কারী ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সদস্য দেবব্রত দাশ দেবু বলেন, ঠিকাদার কাজ ফেলে চলে যাওয়ায় নতুনভাবে টেন্ডার দেয়া হয়েছে। আগামী বছরের শুরুতে কাজ আবার শুরু হবে, অধিগ্রহণকৃত ভূমির মালিকদের ক্ষতিপূরণের টাকাও এ মাসের মধ্যে প্রদান করা হবে বলে তিনি জানান।
এলজিইডির পটিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী বিশ্বজিৎ দত্ত জানিয়েছেন, শিকলবাহা খালের উপর পিসি গার্ডার সেতুর বিষয়ে বাংলাদেশ অভ্যান্তরিন নৌ-পরিবহন (বিআইডাব্লিউটিএ) খালের ওয়াটার লেভেলের রির্পোট দেওয়ার পর এলজিইডির অর্থায়তনে সেতুটি নির্মাণের জন্য টেন্ডার হয়। সেতুর কাজ ইতোমধ্যে ৪৩% সম্পন্ন হয়েছে। পূর্বের ঠিকাদার কাজ না করায় টেন্ডার বাতিল করে স¤প্রতি নতুনভাবে ৩০ কোটি টাকার টেন্ডার করা হয়েছে। ভুমি অধিগ্রহণের টাকার ভূমির মালিকেরা না পাওয়ার বিষয়টি রহস্যজনক বলে তিনি জানান।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by