খুলনা

মহম্মদপুরে ভয়াবহ পার্থেনিয়াম!

  প্রতিনিধি ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ , ৭:১৯:৫৭ প্রিন্ট সংস্করণ

রাসেল মিয়া, মহম্মদপুর (মাগুরা):

মানুষের জুতা স্যান্ডেল ও বাতাসে সাহায্যে অনায়াসে এই বীজ ছড়িয়ে পড়তে পারে।
এই গাছ এক ধরণের বিষাক্ত রাসায়ানিক পদার্থ নিঃসরণ করে যা মাঠের ফসল ও কীট পতঙ্গের ক্ষতি করে।

মাগুরার মহম্মদপুরের নহাটা ইউনিয়নের ইছামতী বিলে রাস্তার ধারে নয়নাভিরাম সবুজ দৃশ্যে কয়েক কিলোমিটার জুড়ে দাড়িয়ে আছে এক ধরণের আগাছা জাতীয় উদ্ভিদ।

পথচারিরা এক পলকে গাছটির পাশে দাড়িয়ে তার সৌন্দর্য্য উপভোগ করছেন। কিন্তু পথচারী সহ এলাকার কেউই জানেন না আগাছা জাতীয় এই উদ্ভিদটির নাম। ধারণা করা হচ্ছে এই গাছটির নাম পার্থেনিয়াম। জীবণ ধারণের জন্য মানব সভ্যতার মূল স্তম্ভ হচ্ছে গাছ। গাছের অক্সিজেন ব্যতিত মানব জীবনের অস্তিত শূন্যের কোঠায়। সকল গাছ বা উদ্ভিদই মানুষের কল্যানে। তবে পার্থেনিয়াম গাছটি তার ব্যতিক্রম।

জানা গেছে, পার্থেনিয়াম এক ধরণের বিষাক্ত আগাছা। এর উৎপত্তিস্তল মেক্সিকো। তিন থেকে চার মাস স্থায়ী গাছটি অন্তত তিন বার ফুল ফল দিয়ে থাকে। স্বল্প আয়ুকাল হলেও এই সময়ের মধ্যে ৪ থেকে ২৫ হাজার পর্যন্ত বীজ দিতে সক্ষম হয়। অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্থান, ভারত, নেপাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ, চীন, বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন দেশে পার্থেনিয়ামের বংশ বিস্তার ঘটেছে। ত্রিভুজ আকৃতির পাতা ও ঝোপ আকারের সাদা ফুল আঠালো পিচ্ছিল হয়ে থাকে। পার্থেনিয়াম গাছের বীজ এতটায় সুক্ষ যে সাধারণত গবাদী পশু, মানুষের জুতা স্যান্ডেল ও বাতাসে সাহায্যে অনায়াসে এই বীজ ছড়িয়ে পড়তে পারে।

 

এই গাছ এক ধরণের বিষাক্ত রাসায়ানিক পদার্থ নিঃসরণ করে যা মাঠের ফসল ও কীট পতঙ্গের ক্ষতি করে।  এই বিষ মানুষ সহ অন্যান্য প্রাণীদের জন্য ক্ষতিকর। পার্থেনিয়ামের কারণে উৎপাদিত ফসলের ৪০ শতাংশ ফসল কম হতে পারে। গবাদী পশুর শরিরে লাগলে বদহজম, জ¦র, ফুলে যাওয়া সহ বিভিন্ন রোগের উপসর্গও দেখা দেয়। মানুষের শরিরের লাগলে হাত পায়ে চুলকানি, জ¦র, ত্বক লাল হওয়া, মাথা ব্যথা সহ ক্যান্সারেও আক্রান্ত হতে পারে।

 

তথ্য মতে পার্থেনিয়ামে কিছু উপকারীতাও রয়েছে। পার্থেনিয়াম থেকে বদহজম, টিউমার, ক্যান্সার, আমাশয় রোগের ঔষধও তৈরি করা হচ্ছে। ইছামতী বিলের কৃষক শাহীন মিয়া বলেন, গত তিন চার বছর ধরে বিলের রাস্তার পাশে এই গাছ দেখছি। তবে গাছটির নাম জানিনা। ফসলের ক্ষতি হয় সেটাও জানা ছিলনা। বর্তমানের বিলের মাঝে জমির পাশ দিয়েও এই গাছ বিস্তার লাভ করেছে। এবিষয়ে নহাটা ইউনিয়ন ডেভলপমেন্ট সোসাইটি (ঘটউঝ) এর প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান, সহ-সভাপতি হাবিবুল্লাহ ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মিয়া বলেন, ইছামতী বিলের রাস্তার ধারের গাছগুলো যদি ক্ষতিকর পার্থেনিয়াম হয়ে থাকে তাহলে খুব তাড়াতাড়ি আমাদের সংগঠন থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করে এগুলো অপসারণ করার ব্যবস্থা করবো। মহম্মদপুর উপজলোর উপসহকারী উদ্ভদি সংরক্ষণ র্কমর্কতা অসীম কুমার সাহা বলেন, পার্থেনিয়াম খুব ভয়াবহ এক ধরণের আগাছা। এই গাছে এবং চধৎধযুফৎড়ীু নবহুড়রপ ধপরফ, অহংরপ ধপরফ, ঈযষড়ৎড়মবহরপ ধপরফ, ঠধহরষষরপ ধপরফ, ঈধভভবরপ ধপরফ রয়েছে যার দ্বারা মানব দেহের বিভিন্ন ধরণের ক্ষতি হয়ে থাকে। মহম্মদপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আব্দুস সোবহান বলেন, পার্থেনিয়াম এক ধরণের ক্ষতিকর আগাছা। কৃষকেরা এখনো পার্থেনিয়াম আগাছার ক্ষতির বিষয়ে পুরোপুরি জানেননা। আমরা কৃষি অফিসের মাধ্যমে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের দিয়ে প্রতিটি গ্রামে মাঠ দিবসের মাধ্যমে কৃষকদেরকে সচেতন করে তুলবো। জমির ফসলের উৎপাদন ক্ষমতা হ্রাস পাবার হাত থেকে রক্ষা করতে পার্থেনিয়াম নির্মূলের বিকল্প নেই।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by