রাজশাহী

মান্দায় দুইবছর পর চেনা রূপে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

  প্রতিনিধি ১৫ মার্চ ২০২২ , ৭:২৯:০৫ প্রিন্ট সংস্করণ

মান্দা (নওগাঁ) প্রতিনিধি: দুই বছর পর নওগাঁর মান্দায় আবার চেনা রূপে ফিরেছে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এখন থেকে প্রাক-প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক সব পর্যায়ে পুরোদমে চলবে পাঠদান কার্যক্রম। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ায় মঙ্গলবার সকাল থেকেই শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ছিল আলাদা উচ্ছ¡াস ও প্রাণচাঞ্চল্য। মঙ্গলবার সকাল থেকেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয় শিক্ষার্থীরা। রাস্তাঘাটে তাদের ভীড় ছিল লক্ষ্যনীয়। শিক্ষার্থীসহ অনেক অভিভাবকদেরও দেখা গেছে তাঁদের ছেলেমেয়েদের সঙ্গে। দুইবছর পর সহপাঠিদের কাছে পেয়ে শিক্ষার্থীদের চোখেমুখে ছিল উচ্ছ¡াস ও হাসির ঝিলিক।

শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রথম দফায় প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ধীরে ধীরে খুলতে থাকে শিক্ষাঙ্গনের দুয়ার। সশরীরে ক্লাস শুরু হয় মাধ্যমিক পর্যায়ে। এরপর কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়। সবার পরে সশরীরে ক্লাস শুরু হলো প্রাথমিকে। করোনাভাইরাসের তৃতীয় ঢেউয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সশরীরে ক্লাস বন্ধ করে দেওয়া হয় গত ২১ জানুয়ারি। এ দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে এক মাস। মঙ্গলবার উপজেলার প্রসাদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চকশ্যামরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কয়াপাড়া কামারকুড়ি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মান্দা থানা আদর্শ বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ, বুড়িদহ উচ্চ বিদ্যালয়, কয়াপাড়া কামারকুড়ি উচ্চ বিদ্যালয় ঘুরে শিক্ষার্থীদের উচ্ছ¡াস ও প্রাণচাঞ্চল্য দেখা গেছে। শিশুদের উচ্ছ¡াস ছিল চোখে পড়ার মতো। অনেকদিন পর ক্লাসে ফিরতে পারায় তাদের চোখেমুখে ছিল আনন্দের ছাপ। সবমিলিয়ে আবার চেনা রূপে ফিরেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো।

প্রসাদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী আরাধ্য সাহা ও মো. রাব্বি জানায়, বিদ্যালয় আবার খুলে দেওয়া হবে এমন খবরে অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করেছি। সবাই মিলে এক সঙ্গে ক্লাস করতে পারব। সহপাঠীদের সঙ্গে খেলাধূলা হবে, হইচই করব। অনেক মজা হবে।

রেবা আখতার আলিম মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী সালমা আক্তার জানায়, দীর্ঘদিন বাড়িতে বসে থাকায় লেখাপড়ায় মনোযোগ ছিল না। প্রতিষ্ঠানের চাপ না থাকায় বসে বসে অলস সময় কেটেছে। এখন থেকে শিক্ষার্থীরা হইচই করে ক্লাস করতে পারবে ভেবে খুব ভালো লাগছে।

শিক্ষার্থী অভিভাবক মোফাজ্জল হোসেন বলেন, বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় শিশুদের নিয়ে দুর্বিসহ দিন পার করতে হয়েছে। অনেক বলেও পড়ার টেবিলে তাদের বসানো যেত না। দিনের বেলা খেলাধূলা আর হইচই করেই তারা সময় কাটাতো। সন্ধ্যার পরেই ঘুমিয়ে পড়তো। ক্লাস শুরু হওয়ায় মনে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
প্রধান শিক্ষক রেজাউল ইসলাম বলেন, অনেকদিন পর স্কুল খুলে দেওয়ায় শিক্ষার্থীদের পদচারণা মুখর হয়ে উঠে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। শিশুদের আনন্দ ছিল চোখে পড়ার মতো। ক্লাসে আগের মতো আবারো পাঠদান দিতে পারব ভেবে আমাদেরও ভালো লাগছে।

প্রধান শিক্ষক মামুনুর রশিদ বলেন, বিদ্যালয়ে আগত শিক্ষার্থীদের জন্য হাত ধোয়ার ব্যবস্থা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও সব শিক্ষার্থীদের জন্য মাস্কের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এরপরও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পাঠদান করা হবে।

 

Powered by