দেশজুড়ে

রংপুরে তারাগঞ্জ উপজেলায় লাউ চাষে ভাগ্য বদল

  প্রতিনিধি ১০ নভেম্বর ২০২০ , ২:৫২:০৭ প্রিন্ট সংস্করণ

মো. আরিফ শেখ, তারাগঞ্জ (রংপুর) :

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নের আনাচে-কানাচে সর্বত্রই লাউয়ের ছড়াছড়ি। মাঠের পর মাঠজুড়ে, বাড়ির উঠানে, ঘরের চালায়, বড় বড় গাছে, রাস্তার দুই পাশে, এমনকি ঘরের সামনের ফাঁকা জায়গাগুলোতেও দুলছে লাউ আর লাউ। গাছের প্রতিটি কচি ডগায় লাউ আর সবুজ পাতার সমাহারে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন। সয়ার ইউনিয়নের গোয়ালবাড়ী গ্রামের অধিকাংশ পরিবার সবজি হিসেবে লাউ চাষ করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছে। এই গ্রামের কৃষকরা আশা করছেন এবার এই গ্রাম থেকে তারা প্রায় লক্ষাধিক টাকা লাউ বিক্রি করতে পারবেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, এক সময় তারাগঞ্জ উপজেলার গোয়ালবাড়ী গ্রামে দারিদ্রতা বিরাজ করছিল কৃষকদের মাঝে। আগে যেসব জমিতে গম, ভুট্টা, কলা উৎপাদিত হতো, এখন সেখানে বাণিজ্যিক ভাবে লাউয়ের চাষ হচ্ছে। কারণ অল্প জমিতে গম, ভুট্টা, কলার তুলনায় লাউয়ের আবাদ লাভজনক। তাই লাউই এখন এ গ্রামের প্রধান অর্থকরী ফসল। বর্তমানে সবজি চাষ করে তারা আয় করছেন। এখন আর নেই অভাব ও কষ্ট। প্রতিটি পরিবারে এসেছে সচ্ছলতা। সেই সঙ্গে পাল্টে গেছে পুরো গ্রামের দৃশ্যপট।

গোয়ালবাড়ী গ্রামের কৃষক সেরাজুল ইসলাম জানান, লাউ এবং অন্যান্য সবজি বিক্রির টাকা দিয়ে সন্তানদের লেখাপড়ার খরচসহ সংসার ভালোভাবে পরিচালনা করছেন। কয়েকটি গরুও কিনেছেন। ৪ শতক জমি কিনে এখন নিজের জমিতে বাড়ি করেছেন। সবজি চাষ করে তার ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমি এবার ১৫ শতক জমিতে লাউ চাষ করেছি। খরচ হয়েছে পাঁচ হাজার টাকা। এখন পর্যন্ত ৩০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছি আরও ২০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করবো। লাউয়ের পাশেই ২ বিঘা জমিতে বেগুন আবাদ করতে খরচ হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার টাকা আশা করছি লাভ হবে প্রায় ২ লাখ টাকার মতো। বর্তমানে ১৫ শতক জমিতে বছরে দুই মৌসুম ধান চাষ করতে ব্যায় হয় প্রায় পাঁচ হাজার টাকা। তবে ধান বিক্রি করে এর খরচ উঠেনা।

কিন্তু একই জমিতে বছরে তিন বার লাউ চাষ করে খরচ হয় ছয় হাজার টাকা। উৎপাদিত লাউ বিক্রি হয় প্রায় ৫০ হাজার টাকা।
একই গ্রামের কৃষক কেরুয়া মিয়া জানান, এবছর লাউ চাষে আমার ভাগ্য বদল হয়েছে। খরচের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি লাভ হয়েছে। তাছাড়া লাউয়ের কোন রোগ বালাইও দেখা যায়নি। বাজারে দামও পাওয়া যাচ্ছে চড়া। এখন বাজারে প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে কমপক্ষে ৫০ টাকা। কৃষি অফিসের আরো সহযোগিতা পাওয়া গেলে আগামী বছর লাউ চাষ বাড়াবো।

তারাগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঊর্মি তাবাচ্ছুম বলেন, উপজেলায় ৬০ হেক্টর জমিতে লাউ চাষ হয়েছে। আমরা উপজেলার সকল কৃষককে প্রশিক্ষণ ও সঠিক পরামর্শ দিয়ে স্বাবলম্বী করার চেষ্টা করছি। ফলে অনেক কৃষক আমাদের দিক-নির্দেশনা ও সঠিক পরামর্শে সাবলম্বী হয়েছে। বর্তমানে আমাদের তারাগঞ্জ উপজেলার চাষ করা লাউ জেলার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by