চট্টগ্রাম

লাঙ্গলে নিরব, কেটলি ফুলকপিতেই সরব বোয়ালখালী আওয়ামী লীগ

  প্রতিনিধি ৪ জানুয়ারি ২০২৪ , ৩:৪০:৪৯ প্রিন্ট সংস্করণ

লাঙ্গলে নিরব, কেটলি ফুলকপিতেই সরব বোয়ালখালী আওয়ামী লীগ

চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী) আসনে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২৭ এপ্রিল, ২০২৩ইং। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ৮ মাস আগে অনুষ্ঠিত উক্ত উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকেটে এমপি হয়েছিলেন নোমান আল মাহমুদ। তিনি আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের নৌকাকে নিজের করে নিয়েছিলেন। কিন্তু বিধিবাম। আসন্ন নির্বাচনে সমঝোমতার অংশ হিসেবে আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিলে নোমান আল মাহমুদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।

ফলে সে আসনে আওয়ামী লীগের সমর্থনে নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে জাতীয় পার্টির সোলাইমান আলম শেঠ। তবে মনোনয়ন না পেয়ে এ আসনে আওয়ামী লীগের দুই নেতা চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম (কেটলি) এবং চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য বিজয় কুমার চৌধুরী (ফুলকপি) নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। ফলে লাঙ্গল বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দুইভাগে বিভক্ত হয়ে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষে অংশ নিচ্ছেন।

বোয়ালখালী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা করতে দেখা যায় লাঙ্গল প্রতীকে সোলাইমান আলম শেঠকে। তবে বোয়ালখালীতে আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মতো সাংগঠনিকভাবে শক্ত অবস্থানে নেই জাতীয় পার্টি। ফলে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ভিড়ে জাতীয় পার্টি ভোটের লড়াইয়ে শেষমেষ জয়ী হতে পারবেন কিনা এটাই এখন বোয়ালখালীর জনসাধারণের মাঝে আলোচনা চলছে। অন্যদিকে বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরী, বোয়ালখালী পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিউল আলম ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকারিয়াসহ তাদের নেতা-কর্মীরা কেটলি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুচ ছালামের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারনায় অংশ নিচ্ছেন।

অপরদিকে আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয় কুমার চৌধুরীর ফুলকপি প্রতীকের পক্ষে বোয়ালখালী পৌরসভার মেয়র ও দক্ষিণ জেলার যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম জহুর, বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বোয়ালখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রাজাসহ তাদের নেতা-কর্মীরা বোয়ালখালী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেছেন।

বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম-৮ আসনে আমাদের দলীয় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নেই। সেহেতু জেলা ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সিন্ধান্তের ওপর নির্ভর করে যার যে প্রার্থীকে ভালো লাগে, তারা তার পক্ষে কাজ করতে কোন বাধা নেই। তবে নির্বাচনের ২৪ ঘণ্টা আগেও যদি দলীয় কোনো সিন্ধান্ত আসে তা মাথা পেতে নিব।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও বোয়ালখালী পৌরসভার মেয়র জহুরুল ইসলাম জহুর বলেন, অসাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে আমরা বিশ্বাস করি। কে কাকে ভোট দিবে সেটা বলা যাচ্ছে না। আমি বিজয় কুমার চৌধুরীর পক্ষে কাজ করছি, সেটা সবাই জানে। বিজয় কুমার চৌধুরী আমাদের বোয়ালখালীর সন্তান বিধায় তার পক্ষে আমরা কাজ করছি।

কেটলি প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেন, নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রার্থী থাকুক আর না থাকুক জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন সাধারণ ভোটাররা যেনো ভোট কেন্দ্রে যায়, সে পরিবেশ সৃষ্টি করতে। সে হিসেবে প্রার্থী হয়েছি। মাঠে নৌকা না থাকায় সাধারণ জনগণ ও রাজনীতিবিদরা যাকে খুশি ভোট দিতে পারে। যে উন্নয়ন করবে জনগণ তাকেই ভোট দিবে। আমি নগরে ৪১টি ওয়ার্ড সাজিয়েছি। বোয়ালখালী উন্নয়ন করা কোনো বিষয় নয়।

ফুলকপি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য বিজয় কুমার চৌধুরী বলেন, আমি বোয়ালখালীর সন্তান। সুতরাং বোয়ালখালীর জনসাধারণ বোয়ালখালীর ছেলে হিসেবে আমাকে নির্বাচিত করবে।

জাতীয় পার্টির প্রার্থী সোলায়মান আলম শেঠ বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার উপর আস্থা রেখেছেন বলে আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দারা আমার জন্য কাজ করছেন। কেউ কেউ আমার বিপক্ষে থাকলেও তারাও নির্বাচনের আগে আমার পক্ষে চলে আসবেন ইনশাল্লাহ। তাছাড়া এখানে আমার সমর্থনে নৌকা তুলে নেয়া হয়েছে। সুতরাং কোনো ধুয়াশা থাকার কথা না।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by