রংপুর

শালিক পাখিকে পোষ মানিয়ে ভালোবাসায় মেতেছেন আনোয়ারুল

  প্রতিনিধি ৪ এপ্রিল ২০২৪ , ৭:১৫:৪৬ প্রিন্ট সংস্করণ

শালিক পাখিকে পোষ মানিয়ে ভালোবাসায় মেতেছেন আনোয়ারুল

কুড়িগ্রামের উলিপুরের ঔষধ ব্যবসায়ী আনোয়ারুল হক (৪২)। গাং শালিক পাখিকে পোষ মানিয়ে তাক লাগিয়েছেন এলাকায়। আলোচনার ঝর উঠেছে সবার মনে। গাছের ডালে ডালে ঘুরে বেড়ানো পাখিকে চাইলেই পোষ মানানো যায় না। তাইতো অনেকেই শখের বসে অনেকে খাঁচায় পাখি পালন করে থাকেন। কিন্তু কেউ কেউ পাখিকে পোষ মানানোর মতো জটিল কাজটিও করে দেখিয়েছেন।

এমনকি এ প্রাণীটিকে কথা বলাও শিখিয়েছেন। পাখিকে পোষ মানা আনোয়ারুল হক উপজেলার পৌরসভাধীন ৭ নং ওয়ার্ডের রামদাস ধনিরাম এলাকার ডা. ওয়ালিউল্লার পুত্র। শালিক পাখির পোষ মানা দেখে চোখ আটকে যায় এলাকাবাসী ও পথচারীদের। আনোয়ারুল হক পৌরসভার তেতুলতলা এলাকায় ঔষধ ব্যবসার পাশাপাশি খাবার হোটেলও পরিচালনা করেন।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আনোয়ারুল হকের ঔষধের দোকান ঘরে শালিক পাখিটি একটি খাঁচায় রয়েছে। সেখানে বসে খুঁনসুটি করছে ।

আনোয়ারুল হক দোকান ঘরে ঢুকার সঙ্গে সঙ্গেই পাখিটি উড়ে এসে তার হাতে ও ঘাড়ে বসলো। পাখি তার ভাষায় অনেক অভিযোগ দিলো আনোয়ারুলকে। আনোয়ারুল তাকে অনেক আদর করে হাতের মধ্যে করে নিয়ে বসলো তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। তাদের মধ্যে ভালোবাসা দেখে হতবাক এলাকাবাসী ও পথচারীরা। আনোয়ারুল হক জানান, একদিন তার স্ত্রীকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে এম,এ পরীক্ষার জন্য রংপুর কারমাইকেল কলেজে নিয়ে যান। সেখানে উক্ত বিভাগের অ্যাকাডেমিক ভবন থেকে এক মাস বয়সী শালিক পাখিটি উপরের সানসেট থেকে মাটিতে পড়ার উপক্রম হয়। তা দেখে বাচ্চাটির উপর অনেক মায়া লেগে যায় আনোয়ারুলের।

সেখান থেকে বাচ্চাটিকে উদ্ধার করে বাসায় নিয়ে আসেন। প্রায় এক বছর ধরে খাঁচায় বন্দি রেখে বাচ্চাটিকে বিভিন্নভাবে সেবা ও চিকিৎসার মাধ্যমে বড় করে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে পোষ মানান তিনি। পাখিটিকে ভালোবেসে প্রতিদিন নিজ হাতে খাবার খাওয়ান, গোসল করিয়ে দেন। এখন শালিক পাখিটি শতভাগ পোষ মানিয়েছেন বলে জানান তিনি। পোষ মানা পাখিটির নাম দেওয়া হয়েছে মিঠু। আনোয়ারুল হক পাখিটিকে মিঠু বলে ডাক দিলেই খাঁচা থেকে বেড়িয়ে এসে হাতে ও ঘাড়ের উপরে বসে পড়ে। সে এখন অনেক কথা বলতে শিখেছে।

আনোয়ারুল জানান আমি শিষ দিলে সেও শিষ দেয়। আল্লাহ কথাটি বলতে শুরু করেছে। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ডাক শিখেছে। তিনি আরও বলেন, এখন শালিক পাখিটির বয়স মাত্র এক বছর। যেভাবে কথা বলতে শুরু করেছে কিছুদিনের মধ্যে সকল প্রকার কথা শেখাতে পারব বলে জানান তিনি। এদিকে প্রতিদিন পোষ মানা শালিক পাখিটিকে দেখতে এলাকার অনেক লোক আসেন। এমনকি পথচারীরাও দেখতে ভিড় করেন। শালিক পাখিটি প্রতিদিন বিভিন্ন তরকারির ঝোল দিয়ে ভাত, ডিম ভাজি, নুডলস্ ও চানাচুর খেয়ে থাকেন।

পোষ মানা শালিক পাখিটিকে দেখতে আসা দর্শনার্থীদের মধ্যে আব্দুর রশিদ (৪৫), নুরুল হুদা (৪৭), নুর আলম (৪২), আব্দুল মালেক (৫৬) ও এনামুল হক (৪৩) সহ আরও অনেকে বলেন, শালিক পাখির সাথে আনোয়ারুল হকের মিতালি এলাকায় চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকার লোক দেখতে আসেন। পাখিটির নাম দেওয়া হয়েছে মিঠু। মিঠু এখন অনেক ধরনের কথা বলতে চেষ্টা করেছে। অনেক ধরনের ডাকাডাকি করে যা দেখে আমাদের অনেক ভালো লাগে। উভয় উভয়ের প্রতি এত ভালোবাসা যা প্রশংসনীয়।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা রেজয়ানুল হক জানান, শালিক পাখি একটি বন্য প্রাণী। অন্যান্য প্রাণীর মত সাধারণ মানুষের কাছে পোষ মানে। এছাড়া মানুষ যে কথা গুলো বলে তাদের অনুসরণ করে দু’ একটা কথা মুখস্থ করে বলতে পারে। মানুষের মত সবগুলো কথা বলতে পারেনা বলে জানান তিনি।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by