ঢাকা

সংসদে সাধারণ মানুষের জন্য কথা বলতে চাই

  প্রতিনিধি ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৬:০৬:১৩ প্রিন্ট সংস্করণ

সংসদে সাধারণ মানুষের জন্য কথা বলতে চাই

সাভার-আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল হওয়ায় অসংখ্য শ্রমিক জীবিকার তাগিদে বাস করেন এখানেই। ঢাকা-১৯ আসনটি এই শিল্পাঞ্চল নিয়েই গঠিত। যেখানে প্রায় দেড়যুগ ধরে শ্রমিক মেহনতী সাধারন মানুষের জন্য রাজপথে রয়েছেন শ্রমিক নেতা মোঃ সারোয়ার হোসেন। এই শ্রেণীর মানুষের সাথে মিশে তাদের দুঃখ কষ্টের ভাগিদার হয়েছেন তিনি। এসব মানুষের ভালবাসায় এবার সংসদে তাদের জন্যই কথা বলতে চান তিনি। 

১৯৮২ সালে লক্ষ্মীপুর জেলায় এই শ্রমিক নেতা জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৭ সালে এসএসসি পাশ করে পরে এইচএসসি, বিকম ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাষ্টার্স প্রথম পর্ব পর্যন্ত সম্পন্ন করেন। ছোটবেলা থেকেই ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে জড়িত ছিলেন এই তরুণ নেতা। লেখাপড়া শেষ করে চাকুরী জন্য ঢাকায় পাড়ি জমান তিনি। ২০০৩ সালে একটি পোশাক কারখানায় লাইন কোয়ালিটি পদে চাকুরী নেন। তখন থেকে শ্রমিক মেহনতী মানুষের দুঃখ কষ্টে মন কাঁদে তার। চাকরি ছেড়ে রাজপথে নেমে পড়েন শ্রমিক মেহনতী মানুষের জন্য। এখান থেকেই শ্রমিক রাজনীতির শুরু তার।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দীর্ঘ দেড় যুগ ধরে শ্রমিক মেহনতি ও সাধারন মানুষের দুঃখ কষ্টে পাশে আছেন এই শ্রমিক নেতা। কিছু পাওয়ার জন্য নয় “শ্রমিক মেহনতী ও সাধারন মানুষের জন্য কথা বলতে চান তিনি। দীর্ঘ শ্রমিক রাজনীতির জীবনে লাখ লাখ শ্রমিকের অধিকার আদায়ে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে আসছেন তিনি। এসব আন্দোলন সংগ্রামে বার বার হামলার শিকার হয়েছেন তিনি। তবুও তার হৃদয়ে লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নে পিছ পা হননি তিনি। নিজের উদ্যোগে গড়ে তোলেন শ্রমিক পরিবার ফাউন্ডেশন নামের একটি সংগঠন।

এই সংগঠনের মাধ্যমে তিনি তিলে-তিলে সামনের দিকে অগ্রসর হতে থাকেন। পোশাক কারখানার মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে কোন প্রকার বিরোধ হলে উভয়ের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ার মধ্য দিয়ে সমস্যা সমাধানে রেখেছেন অগ্রণী ভূমিকা। এর ফলে মালিক ও শ্রমিকের হৃদয়ে আলাদা একটা জায়গা করে নিয়েছেন। এছাড়া তিনি নানা সামাজিক কর্মকান্ডে সামনের দিকে এগিয়ে যান। ফলে সাভার ও আশুলিয়ার শ্রমিক শ্রেণীর কাছে আস্থায় পরিণত হন। পরবর্তীতে প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল (পিডিপি) নামের একটি সংগঠনের নজরে পড়েন এই তরুণ নেতা। গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৯ আসনের জন্য দলটির মহাসচিব প্রিন্সিপল এম এ হোসেন সরোয়ারের হাতে মনোনয়নপত্র তুলে দেন। এবার শ্রমিক মেহনতী ও সাধারন মানুষের ভালবাসা ও উৎসাহে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে জাতীয় দ্বাদশ নির্বাচনে লড়বেন তিনি।

গত দেড় যুগে শুধু সুনাম নয় অর্জণ করেছেন নানা পুরস্কার। ২০১৭ সালে পোমাক শিল্পে অবদান রাখায় আইজিপি পদক পান তিনি। প্রায় দেড় লাখ শ্রমিককে তার ন্যায্য পাওনা পরিশোধে প্রত্যক্ষভাবে ভুমিকা রেখেছেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাজেশনের (আইএলও) ট্রেইনার হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া হেলথ অ্যান্ড সেফটিসহ বিভিন্ন বিষয়ে আইএলও থেকে দেওয়া হয়েছে ১৫টি সনদ। করোনাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্থান থেকে ত্রাণ ও অনুদান সংগ্রহ করে বিলিয়ে দিয়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষের দোরগোড়ায়। এসময়ে ভাড়াটিয়া পরিষদ গঠন করে ভাড়াটিয়াদের বাড়ি ভাড়া মওকুফে রাখেন জোড়ালো ভুমিকা।

সুবিধাভোগী শ্রমিক আকলিমা বলেন, করোনাকালে আমার চাকরি চলে গেলে আমার পরিবারসহ মহাবিপদে পড়ে যাই। দুই বেলা খাবার ব্যবস্থা ছিল না। ঘর থেকে কেউ বের হতো না। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সরোয়ার ভাই কারখানা থেকে প্রাপ্য বুঝিয়ে দিয়েছেন। প্রতিদিন খোঁজখবর রেখেছেন। করোনার সময় যখন সন্তান পিতামাতার কাছেই যেতো না, তখন তিনি আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি এমপি হলে আমরা সরাসরি তার কাছে যেতে পারবো। আমাদের দুঃখ কষ্টের কথা বলতে পারবো। তিনি আমাদের লোক, আমাদের ভাষা বুঝবেন। আমরা সবাই একযোগে সরোয়ার হোসেনকে ভোট দেবো। সুজন নামের আরেক শ্রমিক বলেন, আমি যখন প্রথম চাকরি নেই, তখন থেকে তাকে শ্রমিকের পাশে দাঁড়াতে দেখেছি। রাত নেই, দিন নেই, খেয়ে না খেয়ে শ্রমিকের অধিকার আদায়ে লড়াই করেছেন। আমরাই তাকে নির্বাচন করার অনুরোধ জানিয়েছি। আমরা জানি তিনি আমাদেরই লোক, আমাদের হয়েই সংসদে কথা বলবেন। আমরা আমাদের প্রতিনিধি হিসাবে সংসদে চাই।

শ্রমিক নেতা ইমন শিকদার বলেন, আমি শ্রমিক রাজনীতি সরোয়ার ভাইয়ের কাছে শিখেছি। তার আদর্শ নিয়েই রাজনীতি করছি। তিনি কোনদিন নিজের দিকে দেখেন নি। তিনি শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে গেছেন। আমরাও চাই তিনি শ্রমিক মেহনতী ও সাধারন মানুষের প্রতিনিধি হয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করুক। আমরা শ্রমিক মেহনতী ও সাধারন মানুষ তার পাশে আছি।

স্বতন্ত্র প্রার্থী সারোয়ার হোসেন বলেন, আমার স্লোগান হচ্ছে “শুধু বিত্তশালীদের সংসদ নয়, শ্রম এবং কর্ম পরিবেশের সাথে যারা সম্পৃক্ত তাদের অংশগ্রহণে সংসদ চাই”। বাংলাদেশ বলতে শ্রমজীবী মানুষের সংখ্যাটাই বেশি, সুতরাং আমরা বোঝাতে চাই শ্রমজীবীদের অধিকার আদায়ে, জাতীয় সংসদে জোরালো ভূমিকা রাখার জন্য, শ্রমজীবীদের পক্ষের প্রতিনিধি অত্যাবশ্যক। এছাড়াও শ্রমিকদের আত্ম মর্যাদা রক্ষা, শ্রমিকদের দাবি আদায়ে রাজপথের আন্দোলন এবং জাতীয় সংসদে শ্রমিকদের পক্ষে আইন প্রণয়নের কথা বলার জন্য, শ্রমিকদের প্রতিনিধি জাতীয় সংসদে থাকা উচিত বলে আমি মনে করি। সেটাকে মাথায় রেখেই শ্রমিক ও মেহনতি মানুষের পক্ষে কথা বলতে, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ  নির্বাচনে ঢাকা ১৯ আসেন সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

ঢাকা ১৯ আসনে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হলে প্রথমেই কোন কোন বিষয়কে গুরুত্ব দিবেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সর্বপ্রথম শ্রমিক ও মেহনতী মানুষের অধিকার নিয়ে জাতীয় সংসদে আইন প্রণয়নে সোচ্চার হব। ঢাকা ১৯ আসন যেহেতু শ্রমিক অধ্যুষিত  এলাকা, তাই একটি শ্রমিক বান্ধব হাসপাতাল নির্মাণ এবং সাভার আশুলিয়ার রাস্তাঘাট সামান্য বৃষ্টির পানিতে কৃত্রিম বন্যায় ডুবে যাওয়া সমস্যার নিরসন, কিশোর গ্যং নির্মূল সহ নির্বিঘ্নে চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে আমার প্রথম উদ্যোগ। 

আরও খবর

Sponsered content

Powered by