বাংলাদেশ

সরকারের নির্দেশ মানার কারণে র‌্যাবকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট : ড. খন্দকার

  প্রতিনিধি ১৮ জানুয়ারি ২০২৩ , ৭:২৯:১৪ প্রিন্ট সংস্করণ

ক্ষমতাসীন সরকার গায়ের জোরে দেশ চালাচ্ছে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘আজকে এই সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য দেশে আমাদের ছয় শতাধিক নেতাকর্মীকে খুন ও সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে গুম করেছে। সে কারণে আজকে এই অবৈধ সরকারের নির্দেশ মানার কারণে র‌্যাবকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট। অর্থাৎ স্যাংশন দিয়েছে। এটা আমাদের জন্য সুখকর খবর নয়। এটা আর্ন্তজাতিকভাবে লজ্জার। এই অগণতান্ত্রিক সরকার বিচারালয়কে ব্যবহার করছে। গায়ের জোরে শাসন চালাচ্ছে। যে কারণে এই সরকার আমাদের দেশের সাবেক প্রধান বিচারপতিকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছে। আজকে আমাদের দফা একটাই- সেটা হলো এই সরকারের পদত্যাগ।’

মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি অডিটোরিয়ামে দেশবরেণ্য আইনজীবী ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেনের জীবদ্দশায়, ‘গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় তার ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, প্রবীণ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব সারাজীবন আইনের শাসন ও গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন। তার দীর্ঘ জীবনে তিনি যা করেছেন তা স্বল্প সময়ে বলে শেষ হবে না। তার কাছে কেউ আসলে তিনি সদয় মনোভাবাপন্ন হয়ে কথা বলতেন। সুপরামর্শ দিতেন। বিচার প্রত্যাশীকে তিনি ভালো পরামর্শ দিতেন। আজকে মিথ্যা মামলায় ফরমায়েশি রায়ে তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে বন্দি করা হয়েছে। একইভাবে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও ফরমায়েশি রায়ে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে দেশে ফিরতে পারছেন না। দেশে আইনের শাসন থাকতো তাহলে বাংলাদেশের মতো একটি দেশে শুধু বিরোধী মতকে স্তদ্ধ করার জন্য লক্ষাধিক মামলায় ৩৬ লাখ আসামি হয়েছে। দেশে যে আইনের নেই তার প্রমান খন্দকার মাহবুব হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা। তাহলে এ দেশে যে আইনের শাসন নেই এটা নতুনভাবে বলার কিছু নেই।

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এই অবস্থায় দেশের মানুষ উপলব্ধি করেছে যারা গণতন্ত্র হত্যা করেছে, যারা আইনের শাসন দলীয়করণ করে ধ্বংস করেছে, তারা এইগুলো মেরামত করতে পারবে না। তিনি বলেন, এক লাখ মামলায় দেশের প্রায় ৩৬ লাখ মানুষ আসামি। মরহুম খন্দকার মাহবুব হোসেনও একাধিক মামলার আসামি। এ সরকারের সময় ৬০০ মানুষ গুম হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ হত্যার শিকার হয়েছেন। এজন্য র‌্যাব-পুলিশের ওপর যুক্তরাষ্ট্র স্যাংশন দিয়েছে। এটা আমাদের জন্য লজ্জাকর।

ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেন, আজ যে সরকার ক্ষমতায় আছে তাদের প্রতি মানুষের আস্থা নেই। তিনি বলেন, আমাদের এখন দেশ আছে। জনগণ আছে। কিন্তু গণতন্ত্র নেই। আইনের শাসন নেই। দেলে সার্বভৌমত্ব নেই। তিনি বলেন, খন্দকার মাহবুব হোসেন আইন জগতের দিকপাল ছিলেন। তিনি অত্যান্ত জনপ্রিয় ছিলেন, চার বার সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি হন। তিনি অত্যান্ত ভালো মানুষ ছিলেন।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আইন ও রাজনৈতিক জগতে খন্দকার মাহবুব হোসেনের চলে যাওয়া আমাদের খুবই ক্ষতি করেছে। তার সাহসিকতার যে প্রতিভা আজকের দিনে আমাদের খুবই বেশি প্রয়োজন ছিল। তিনি বলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক আদালতে আদেশ দেওয়ার ১৮ মাস পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার মামলার রায় পাল্টানো আমাদের গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও ভোটের অধিকার ধ্বংস করেছে। এ বিষয়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি মাহমুদুল আমিন চৌধুরী লিখেছেন, এটা একটা ক্রিমিনাল অ্যাক্ট। এরপরও সেই অর্থে আইন জগতে কোনো ঝড় দেখিনি। সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহাকে যেভাবে দেশ থেকে বের করে দেওয়া হয়, এরপর কি বিচারকরা মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবেন। এরপরও বিচার অঙ্গনে কোনো ঝড় উঠতে দেখিনি।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ রুল অফ ল’ নয়, রুল বাই ল’ তে চলছে। আমীর খসরু বলেন, খালেদা জিয়া ও তারেক রহামনকে সাজাপ্রাপ্ত বলার মধ্যদিয়ে এই অবৈধ ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, আইনের শাসন ফিরিয়ে আনতে হলে আইন অঙ্গনে একটি বড় ধরণের আন্দোলন করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।

ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন বলেন, ‘১০ দফা বা ১২ দফা নয়, এখন দরকার এক দফা। একটি অবৈধ অনির্বাচিত সরকারকে এই মুহূর্তে পদত্যাগ করতে হবে। এ জন্য জনগণের সঙ্গে আইনজীবীদের এক্যবদ্ধভাবে অংশ নিতে হবে। সরকারকে বলতে হবে, আপনারা নির্বাচিত নন, আপনারা বিদায় নেন।’

আরও খবর

Sponsered content

Powered by