দেশজুড়ে

সীমান্তে ব্যাপক গোলাগুলি, হেলিকপ্টার থেকে বোমা বর্ষণ

  প্রতিনিধি ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ , ৭:২৮:২৪ প্রিন্ট সংস্করণ

সীমান্তে ব্যাপক গোলাগুলি, হেলিকপ্টার থেকে বোমা বর্ষণ

বাংলাদেশ মায়ানমার সীমান্তের তুমব্রু রাইট ক্যাম্প ও ডেকুবুনিয়া ক্যাম্পে ব্যাপক গুলি বিনিময় ও বোমা বর্ষণ চলমান রয়েছে বিদ্রোহী গ্রুপ আরকান আর্মি ও মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর সাথে।

শনিবার দিবাগত রাত ৩টা থেকে এই রিপোর্ট পাঠানো পর্যন্ত বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্তে থেমে থেমে গুলি ও বোমা বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে । আতঙ্কে ঘর ছেড়েছে ৩ গ্রামের মানুষ।নাইক্ষ্যংছড়ি তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতরভাবে আহত হয়েছে ৩ জন।

আহতরা হলেন, কোনার পাড়ার বাসিন্দা প্রবীন্দ্র ধর (৫০)। পিতা জোতিষ্ট ধর,রহিমা বেগম( ৪০) এবং শামশুল আলম। এদিকে বিদ্রোহী গ্রুপের ব্যাপক গুলাগুলির কারণে টিকতে না পেরে মায়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ বিজিপির ৩৭ জনেরও বেশি সদস্য বাংলাদেশের ভূখণ্ডে তুমব্রু বিজিবি ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে।

সীমান্ত পথে আরো ৩০ জনেরও বেশি বিজিপি সদস্য বাংলাদেশে ঢোকার জন্য অবস্থান নিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।মিয়ানমারের তুমব্রু রাইট ক্যাম্পের চতুর্পাশে বিদ্রোহী গ্রুপ আরকান আর্মি ঘিরে রেখেছে এবং বর্ডার অবজারভেশন পোস্ট বিদ্রোহী গ্রুপ আরকান আর্মি দখলে নিয়েছেন। ঘুমধুম ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ জানিয়েছেন, মিয়ানমারের বিজিপির কিছু সদস্যরা তুমব্রু সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশ আশ্রয় নিয়েছে।

এদিকে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড বিজিবি নিরাপত্তা বাড়িয়েছে সীমান্তে। নিরাপত্তা চৌকিগুলোতে সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে বিজিবি। এই রিপোর্ট লিখা ও পাঠানো পর্যন্ত হেলিকপ্টার থেকে গোলা বর্ষণ চলছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য দীল মোহাম্মদ জানান ৩ গ্রামের হাজারো মানুষ গত রাত থেকে বসতবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। গরু, ছাগল, হাস, মুরগী ঐ অবস্থায় রেখে ঘরবাড়ি ছেড়েছে। মালামাল নেওয়ার ও সুযোগ হয়নি।

বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন জানিয়েছেন, সীমান্তে যাতে অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সীমান্তের দিকে নজর রাখতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এদিকে মিয়ানমার সেনা/বিজিপি এবং আরাকান আর্মির মধ্যে চলমান সংঘর্ষে আরাকান আর্মির তীব্র আক্রমণের ফলে প্রাণহানির ভয়ে তুমব্রু রাইট ক্যাম্প হতে ক্যাম্প কমান্ডার লেফটেন্যান্ট থিন উই (Thin Wai) সহ ১৪ জন মিয়ানমার বিজিপি সদস্য পালিয়ে আত্মসমর্পণ করেছে বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিবির কাছে।

এসময় বিজিপি’র ব্যবহৃত ৫ টি রাইফেল, ২ টি পিস্তল,১৪ টি হ্যান্ড গ্রেনেড,মর্টার শেল,ফিউজ সহ গোলাবারুদ জব্দ করে বিজিবি।এসময় পালিয়ে আশা তুমব্রু রাইট ক্যাম্পের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট Thin Wai জানায় বর্তমানে তুমব্রু রাইট ক্যাম্পে আনু. ৩ লক্ষ RPG অস্ত্র রয়েছে কিন্তু মর্টার শেল নাই ক্যাম্পে ১৪২ জন সৈনিকের মধ্যে ক্যাম্প কমান্ডার সহ ১৪ জন তুমব্রু বিওপিতে আত্মসমর্পণ করে।

অবশিষ্ট বিজিপি সদস্যরা আরাকান আর্মির সাথে তীব্র সংঘর্ষ চালিয়ে যাচ্ছে।এদিকে সংঙ্ঘর্ষে দুপুর দেড়টার দিকেঘুমধুম ইউপির ৩ নং ওয়ার্ডের, বাইশফাড়ি সীমান্ত পিলার-৩৭ কাছাকাছি সীমান্তের চাকমাপাড়া আমবাগান হয়ে আরাকান আর্মির ৬ (ছয়) জন আহত গুলিবিদ্ধ সদস্যকে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়।

পরবর্তীতে চাকমাপাড়া থেকে একটি মাইক্রোবাস যোগে চিকিৎসার জন্য কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানা যায়। সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে ৩৪ বিজিবির পক্ষ হতে সংবাদ সম্মেলনের কথা থাকলেও পরে তা অনুষ্ঠিত হয় নি।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by