শিক্ষা

সড়ক দেবে যাওয়ায়  দুর্ঘটনার আশঙ্কা, দ্রুত সংস্কার চান নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা 

  প্রতিনিধি ৬ ডিসেম্বর ২০২১ , ৫:৪৩:০৯ প্রিন্ট সংস্করণ

নোবিপ্রবি প্রতিনিধি:

নোয়াখালী জেলা শহর থেকে আট কিলোমিটার দক্ষিণে সদর-সুবর্ণচর সড়কের পশ্চিম পাশে অবস্থিত নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি)। নোয়াখালী সদর-সুবর্ণচর সড়ক বিশ্ববিদ্যালয়টির সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যাতায়াতের একমাত্র উপায়। এ সড়কের সোনাপুর, ঠক্কর এবং ইনকাম চৌধুরীর পুল পয়েন্টে সড়ক দেবে যাওয়ায় প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।

জানা গেছে, ২০১৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতির আগমন উপলক্ষে এ সড়কটি সংস্কার করা হয়। সংস্কারের কিছুদিন পরই রাস্তার বিভিন্ন অংশের পিচ উঠে যায়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে পিচ উঠে যাওয়া অংশগুলো আবারো সংস্কার করা হয়। সর্বশেষ গেল মাসে পিচ ওঠে যাওয়া অংশগুলো আবার সংস্কার করা হয়। দফায় দফায় সংস্কারের পরও এই সড়কটি এখন অনিরাপদ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের বিভিন্ন অংশ দেবে যাওয়ায় হেলেদুলে চলছে শিক্ষার্থীদের বহনকারী বিআরটিসির ডাবল ডেকার বাস। সড়কের দেবে যাওয়া অংশে বাসের চাকা পড়তেই একপাশে কাত হয়ে পড়ছে বাস।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বহনকারী ৪০টিরও অধিক বাস এ সড়কে আপ-ডাউন করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহণ সঙ্কটের কারণে ধারণক্ষমতার অধিক যাত্রী নিয়েই প্রতিদিন আপ-ডাউন করে বাসগুলো। বিআরটিসির ৮টিরও অধিক দ্বিতল বাস যেগুলোতে অধিক ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করেন শিক্ষার্থীরা। প্রায়ই এ বাসগুলো নিয়ন্ত্রণ হারানোর পর্যায়ে চলে যায়। ঝুঁকিপূর্ণ এই সড়কটির দ্রুত সংস্কার চান বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমরা প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করি। যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সড়ক ও জনপদ বিভাগ এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের প্রতি অনুরোধ থাকবে দুর্ঘটনা লাঘবে অতিদ্রুত সড়কটি সংস্কারের পদক্ষেপ নেওয়ার।

অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রাজিব হোসেন বলেন, বিগত কয়েকবছরে এই রাস্তাটি বেশ কয়েকবার সংস্কার করা হলেও তা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি । কারণ, এই রাস্তার যে জায়গাগুলোতে দেবে যায় ওই জায়গাগুলোর পাশে তেমন মাটি নেই। এ কারণে রাস্তার নিচের মাটি সরে গিয়ে দেবে যায় বারবার। দেবে যাওয়া জায়গাগুলোর পাশে কংক্রিটের দেয়াল দিয়ে রাস্তা আর.সি. ঢালাই করাটাই হবে এর স্থায়ী সমাধান। এমনটা করলে আশা করি বারবার আর সমস্যা হবে না।

এদিকে সড়কটিতে চলাচলের সময় বাসের নিয়ন্ত্রণ রাখাটা কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায় বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস চালকরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস চালক খাইরুল ইসলাম বলেন, রাস্তা ঢাল হওয়ায় বাস নিয়ন্ত্রণ রাখাটা কঠিন হয়ে যায়। সড়কটি দ্রুত সংস্কার না করলে বড় ধরণের দুর্ঘটনার কবলে পড়তে পারে বাস।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সড়কের বেহাল দশার কারণে বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনা ঘটে। সড়কটি নিয়ে উদ্বিগ্ন স্থানীয়রাও। দ্রুত সড়কটি সংস্কারের পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তারা। শাহাব উদ্দিন নামের স্থানীয় এক অটোরিকশাচালক বলেন, সড়কের এক পাশ ঢাল হওয়ায় গাড়ির নিয়ন্ত্রণ রাখা যায় না। আমি নিজেও কিছুদিন আগে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছি। আমাদের এলাকার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই সড়কে যাতায়াত করে। রাস্তার পাশেই খাল। যেকোনো সময় বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে গিয়ে পড়লে অনেক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হতে পারে। আর ভালো মানের জিনিস ব্যবহার করে সড়ক সংস্কার করা হোক। নিম্নমানের কাঁচামাল ব্যবহারের কারণে সড়ক সংস্কার করলেও টেকে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর বলেন, সড়কটি সংস্কারের জন্য আমরা একটি চিঠি দিয়েছি সড়ক বিভাগকে। জেলা প্রশাসক মহোদয়কেও জানিয়েছি বিষয়টি। এরাস্তা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাবল ডেকার বাস নিয়মিত চলাচল করে। আশা করি বিষয়গুলো বিবেচনা করে দুর্ঘটনা এড়াতে সড়কটি দ্রুত সংস্কার করবে সড়ক বিভাগ।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে নোয়াখালী সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার কুতুব উদ্দিন বলেন, সড়কটি মাইনর সংস্কার গত মাসে আমরা করেছি। মেজর সংস্কারের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হতে ১৫ দিন লাগবে। কবে নাগাদ সংস্কার কাজ শুরু হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ মাসেই সংস্কার কাজ শুরু হবে আশা করি।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by