চট্টগ্রাম

হাঁস চুরির ঘটনায় মাকে অশ্লীল ভাষায় অপমান, কিশোর ছেলের আত্মহত্যা

  প্রতিনিধি ২৫ মার্চ ২০২১ , ১০:১০:৪৬ প্রিন্ট সংস্করণ

হাঁস চুরির ঘটনায় মাকে অশ্লীল ভাষায় অপমান, কিশোর ছেলের আত্মহত্যা। নিহত শাহিনের বোন সুমাইয়ার আহাজারি।

মাহফুজুর রহমান, চাঁদপুর প্রতিনিধি:

 চাঁদপুরের মতলব উত্তরে হাঁস চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছেলের সামনে মাকে অশ্লীল ভাষায় অপমান করায় সহ্য করতে না পেরে মোঃ শাহিন নামের (১৪) কিশোর ছেলে আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বুধবার (২৪ মার্চ) সকালে উপজেলার গজরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। কিশোর শাহিন রহমত উল্যাহ প্রধানের ছেলে এবং স্থানীয় আওলিয়াবাগ দাখিল মাদ্রাসার ৪র্থ শ্রেনীর শিক্ষার্থী। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।

ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয়দের থেকে জানা গেছে, ‘গত ২১ মার্চ রোববার প্রতিবেশী মিয়াজ উদ্দীন বেপারীর ছেলে সিএনজি চালক বাবুদের বাসায় চুরির ঘটনায় কিশোর শাহিনকে চোর সাব্যস্ত করা হয়। এতে কয়েক দফায় ধরে নিয়ে ছেলেকে মারধর, মাকে অপমান করে গ্রাম থেকে বিতাড়িত করার হুমকি দিলে সহ্য করতে না পেরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে কিশোর শাহিন।

স্থানীয় ব্যবসায়ী মো: সেলিম জানায়, ‘গতকাল মঙ্গলবার চুরির ঘটনায় স্থানীয় মেলা থেকে রাতে শাহিনকে ধরে নিয়ে বাবু সহ কয়েকজন তাদের বাড়িতে আটকে রাখে। পরে বিষয়টি জেনে শাহিনের মা শান্তি বেগম ছেলেকে ছাড়িয়ে আনতে না পেরে আমাকে ফোন দেয়। রাত ১১টার দিকে আমি ছুটে যাই। তখন শাহিনকে জিজ্ঞেস করলে শাহিন বলে, ‘কাকা আমি চুরি করিনাই’।

‘এসময় চুরির ঘটনা তারা নিশ্চিতভাবে দেখেছে কিনা তা জিজ্ঞেস করলে বাবুদের লোকজন জানায় তাদের স্বাক্ষী-প্রমান আছে। পরে গভীর রাত হয়ে যাওয়ায় বিষয়টি পরেরদিন সকালে মিমাংশার কথা বলে আমি মা-ছেলেকে ছাড়িয়ে আনি’।

‘পরের দিন সকালে আমি আবার ফোনে জানতে পারি, বাড়ি থেকে আবার মা-ছেলেকে ধরে আনা হয়েছে এবং তাদেরকে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করা হয়েছে। আমি ছুটে এসে বাবুসহ লোকজনদের ডেকে বলি, তোদের একটা হাঁস নিয়ে থাকলে ওদের খোয়ার থেকে একটা হাঁস আছে নিয়ে যা। এসময় বাবু একটি হাঁসের বদলে ৭টি হাঁস দাবী করে।

তখন শাহিনের মা বলে, আমার ছেলে যদি সত্যিই চুরি করে থাকে তাহলে ৭টা নয় ১০টা দিবো। পরে বিষয়টি সমাধা করতে না পেরে আমি বিচারটি এলাকাবাসী করবে জানিয়ে দু’পক্ষকে বাড়িতে পাঠিয়ে চলে আসি’। পরে ফোনে জানতে পারি ভাতিজা আর নেই!

এ ঘটনায় আত্মহত্যা প্ররোচনায় মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বজনরা। মামলায় মো: বাবুসহ অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।

মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ শাহজাহান কামাল ভোরের দর্পণকে বলেন, এজাহার নামীয় ৩ জন সহ অজ্ঞাত ৪-৫ জনকে আসামী করে মামলা করা হয়েছে। তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by