চট্টগ্রাম

হাটহাজারীতে প্রায় ৫ লাখ টাকায় নির্মিত ডাস্টবিন অব্যবহৃত

  প্রতিনিধি ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ , ৫:০৫:০৯ প্রিন্ট সংস্করণ

হাটহাজারীতে প্রায় ৫ লাখ টাকায় নির্মিত ডাস্টবিন অব্যবহৃত

হাটহাজারী সদর ভূমি অফিসের সামনে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক ঘেঁষে অপরিকল্পিতভাবে পৌরসভার নির্মাণ করা ভূগর্ভস্থ ডাস্টবিনটি কোনো কাজেই আসছে না। ব্যস্ততম মহাসড়ক ঘেঁষে এটি নির্মাণ করায় ব্যবহার করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ পৌরবাসীদের! জানা যায়, ডাস্টবিনটি বিগত ২৩.০৯.১৮ইং হতে ২৩.০৯.১৯ইং পর্যন্ত বাস্তবায়িত ও চলমান প্রকল্পে ৪,৯৪,৭৮৮ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়।

যথাযথ পরিকল্পনা ছাড়া এ ডাস্টবিন তৈরি করার ফলে জনগণের লাখ লাখ টাকা যেমন গচ্ছা যাচ্ছে, তেমনি পৌরবাসীদের যত্রতত্র ফেলা ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধের দুর্ভোগও দূর হচ্ছে না। ইতিমধ্যে প্রকল্পটির কাজ শেষ হলেও ব্যবহার করা যাবে না এই ডাস্টবিন এমনটা জানালেন পৌর প্রকৌশলী। পৌরবাসীর দাবি এই ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে করে বিকল্প জায়গায় এই আধুনিক ভূগর্ভস্থ ডাস্টবিন নির্মিত হলে বাসাবাড়ির আবর্জনা রাস্তায় ফেলা হয়ত বন্ধ হতে।

তবে ডাস্টবিনে ময়লা-আবর্জনা ফেলতে না পারলেও এতোদিন নির্মিত ডাস্টবিনের ৪টি কক্ষ অন্তত দেখা গিয়েছিলো কিন্তু বর্তমানে সেগুলো বাঁশের নিচে ঢাকা পড়ায় আর দেখা যাচ্ছে না। যার কাররে পথচারীদের চলাচলের রাস্তার উপরেই ফেলা হচ্ছে বিভিন্ন আবর্জনা আর পাশেই অকেজো অবস্থায় বাঁশের নিচে চাপা পড়ে আছে সেই ভূ-গর্ভস্থ ডাস্টবিন। এ ভূগর্ভস্থ ডাস্টবিন উপকারিতা হলো,ভূগর্ভস্থ বর্জ্য সংগ্রহাগার গড়ে তুলবে, ফলে ময়লা চোখেও পড়বে না এবং দুর্গন্ধও ছড়াবে না।

এই আধুনিক বর্জ্য সংগ্রাহাকারে থাকবে হাইড্রোলিক প্রেশারের মাধ্যমে ময়লাকে সংকোচনের প্রযুক্তি। ফলে একই স্থানে আগের তুলনায় দ্বিগুণ বর্জ্য সংগ্রহ করা যাবে।বর্জ্য সংরক্ষণাগারগুলো এমনভাবে নির্মাণ করা হবে, সেখানে কোনোভাবে বাইরে থেকে পানি ঢুকতে পারবে না। আর ভেতর থেকে ময়লার দুর্গন্ধও বাইরে ছড়াবে না। এটি খুবই পরিবেশবান্ধব। স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রকল্পটি যদি বাস্তবায়নই করা না হবে তবে এটার পেছনে জনগণের এতোগুলো টাকা নষ্ট করা কার স্বার্থে! এ দায়ভার কে নিবে ?

পথচারীরা বলেন, অনেক দুর্গন্ধ আর বাচ্চাদের নিয়ে এদিক দিয়ে স্কুলে যাওয়ার সুযোগ নেই। বৃষ্টি হলে পানি জমে যায় রাস্তায়। অনেকে অনেক কথা বলে কিন্তু কাজের বেলায় কেউ কিছু করে না। চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদের অধীনে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মুহাম্মদ রাশিদুল হাসান বলেন,ভূগর্ভস্থ স্মার্ট বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সঠিক ও সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে পারলে পরিবেশগতভাবে সুফল পাবেন পৌরবাসী। তবে এ ধরনের প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি করতে না পারলে রাষ্ট্র ও পৌর জনগণের টাকা অপচয় ছাড়া আর কিছুই না।

এ ক্ষেত্রে পরিকল্পনা ও সমন্বয়হীনতার অভাবে সরকারি আর জনগণের টাকা গচ্চা যায়।আক্ষেপ করে পৌরবাসিন্দা উদয় সেন বলেন, অভিভাবকবিহীন এই পৌরসভা দেখার কেউ নেই। বেলাল, মনোয়ার সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি পৌরবাসিরা। এই যে ভূগর্ভস্থ ডাস্টবিন নির্মাণ করে যে, ৫ লাখ টাকা নষ্ট করলেন বেলাল সেটা কি তার পকেট থেকে দেবে? নিশ্চয়ই না, বরং এই ধরনের প্রকল্প যতই করা যায়, ততই ২/৩ পার্সেন্ট টাকা তার পকেটে যায়। তাই যতই প্রকল্প ততই তাদের লাভ। পৌর বাসিন্দাদের লাভ হউক আর না হউক কিন্তু তাদের লাভ বাড়তেই থাকে।

প্রকল্প না দিলেই তাদের ক্ষতি হয়। এই মনোয়ার আর বেলাল এর বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ বলে কোন সীমা নেই। জনগুরুত্বপূর্ণ বিদ্যুৎ বিভাগের লাইনম্যান’স মনোয়ার সকল কাজের সুপারভাইজার করে। এমনকি এই মনোয়ার ইদানীং পৌর প্রশাসক এর সাথে উপজেলার অভিযানেও দেখা যায়। এটা কি উচিত। এত সাংবাদিক আছে কেউ তো কোন দিন পৌরসভার অনিয়ম দুর্নীতির সংবাদ তো দেখিনি।

এই অভিভাবকবিহীন পৌরসভার জন্মলগ্ন থেকে অদ্যাবধি বেলাল আর মনোয়ার সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি। গৃহ নকশা কনস্ট্রাকশন এর চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মুহিব বলেন, পৌর প্রকৌশলীর অদক্ষতা ও পরিকল্পনার অভাবের কারণেই সরকারি ও পৌরবাসীর টাকা নষ্ট হচ্ছে। হাটহাজারী পৌর প্রকৌশলী বেলাল আহমেদ খাঁন এ প্রতিবেদক কে বলেন, ৫ ফুট গভীর ওই ভূ-গর্ভস্থ ডাস্টবিনটির তৈরি কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

তবে এমন ভূগর্ভস্থ ডাস্টবিন দেশের আর কোথাও আছে বলে মনে হয় না। আমরাই প্রথম এমন ডাস্টবিন নির্মাণ করেছি। তবে কাজ শেষ হলেও এটি চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক ঘেঁষে হওয়ায় এবং মহাসড়কটি আবারও ৬ লেনে হবে তাই এটি আমরা আর চালু করব না।পৌর প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী ভূমি কমিশনার আবু রায়হান বলেন, ঠিক আছে। আমি এ বিষয়ে তদন্ত করে দেখবো।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by