নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় তাহের-আজাদ প্যানেলের মা ও শিশু হাসপাতাল জয়

আবু তাহের, চট্টগ্রাম :

নির্বাচনের আগেই প্যানেল থেকে দু’জন বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া জয়রথের সফল পরিসমাপ্তি হলো প্যানেলের নিরঙ্কুশ বিজয়ের মধ্য দিয়ে। চট্টগ্রাম মা শিশু ও জেনালের হাসপাতালের কার্যনির্বাহী কমিটির ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনে ডা.আঞ্জমান আরা- ডা. আরিফুল আমিন প্যানেলকে এক প্রকার বিধ্বস্ত করে একটি মাত্র সদস্য পদ ছাড়া সবকটি পদে জয় পেলো তাহের-আজাদ প্যানেল।

শনিবার (৩০ অক্টোবর) সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ৩১বুথে এ ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান নির্বাচন শেষে রাতে ফল ঘোষণা করেন। নির্বাচনে দুটি প্যানেল থেকে ৫২ জন এবং স্বতন্ত্র ৩ জন মিলে মোট ৫৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করেন। নির্বাচনে ৯ হাজার ৭২৪ জন লাইফ মেম্বারের মধ্যে ৪০০৩ জন এবং ৩২৩ জন ডোনার মেম্বারের মধ্যে ১৪০ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।

প্রেসিডেন্ট পদে ডা. এম এ তাহের খান ২৪১৩ ভোট পেয়ে এবং জেনারেল সেক্রেটারি পদে রেজাউল করিম আজাদ ২৪৯১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী হিসেবে প্রেসিডেন্ট পদে ডা. আঞ্জুমান আরা ইসলাম ১৫১৯ ভোট এবং জেনারেল সেক্রেটারি পদে ডা. মোহাম্মদ আরিফুল আমীন পেয়েছেন ১৩৬৪ ভোট।

বিজয়ী প্যানেল থেকে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে আবদুল মান্নান রানা (২৮৫৪ ভোট), ইঞ্জিনিয়ার লায়ন মোহাম্মদ জাবেদ আবছার চৌধুরী (২৫৭৮ ভোট), ডা. মোহাম্মদ পারভেজ ইকবাল শরীফ (২৫১৮ ভোট), জয়েন্ট জেনারেল সেক্রেটারি ডা. কামরুন নাহার দস্তগীর (২৬৬২ ভোট), ট্রেজারার পদে অধ্যক্ষ লায়ন মোহাম্মদ সানাউল্লাহ (২৫৮৩ ভোট), জয়েন্ট ট্রেজারার পদে লায়ন এস এম কুতুব উদ্দীন (২৫৭৩ ভোট), অর্গানাইজিং সেক্রেটারি পদে মোহাম্মদ সাগির (২৮৩৯ ভোট), স্পোর্টস অ্যান্ড কালচারাল সেক্রেটারি পদে মোহাম্মদ আহছান উল্লাহ (২০৫১ ভোট), কার্যকরী পরিষদের ১০ জন মেম্বার পদে ডা. আবু তৈয়ব (২৫৫১ ভোট), ডা. কামরুন নেসা রুনা (২৫৫০ ভোট), মোহাম্মদ আলমগীর পারভেজ (২২১৫ ভোট), ডা. নাসির উদ্দিন মাহমুদ (২১৩৪ ভোট), খায়ের আহমদ ভুঁইয়া (১৯৭৬ ভোট), ডা. ফজল করিম বাবুল (১৯১৮ ভোট), ডা. মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন শরীফ (১৮৮৯ ভোট), মোহাম্মদ হারুন ইউসুফ (১৮১৩ ভোট), এ এস এম জাফর (১৭৬১ ভোট) এবং ছৈয়দ ছগীর আহমদ (১৬৭৭ ভোট) পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। ডা.আঞ্জুমান আরা-ডা.আরিফুল আমীন প্যানেল থেকে কেবলমাত্র ছৈয়দ ছগীর আহমদ কার্যকরী পরিষদের দশম সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। এই প্যানেলের আর কেউ নির্বাচিত হননি।

পরাজিত প্যানেল থেকে নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী হিসেবে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে আবুল হোসেন ১২৯৮ ভোট, ডা. এম মাহফুজুর রহমান ১৫৪৭ ভোট, জয়েন্ট জেনারেল সেক্রেটারি পদে রেখা আলম চৌধুরী ১১৮০ ভোট, ট্রেজারার পদে মোহাম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম ১৩৩০ ভোট, জয়েন্ট ট্রেজারার পদে ডা. মোহাম্মদ লিয়াকত আলী ভূঁইয়া ১৩২৬ ভোট, অর্গানাইজিং সেক্রেটারি পদে মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম ১০৫৮ ভোট, স্পোর্টস অ্যান্ড কালচারাল সেক্রেটারি পদে মোহাম্মদ জাহিদুল হাসান ১৮৩৯ ভোট, সদস্য পদে যথাক্রমে নাজমুল হক ডিউক ১৪২৭ ভোট, ওসমান গনি মনসুর ১৩৩১ ভোট, ডা. মোহাম্মদ ওয়াজেদ চৌধুরী অভি ১৩২৩ ভোট, ডা. হোসেন আহমদ ১২৯৯ ভোট, এয়াছিন চৌধুরী ১২৪২ ভোট, মোহাম্মদ রাশেদুল আমীন ১২২৪ ভোট, নুর নবী লিটন ১১৬৫ ভোট, গোলাম বাকি মাসুদ ৮৮৪ ভোট, নাজমুল করিম চৌধুরী ৭৪০ ভোট পেয়েছেন।

স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করে যারা পরাজিত হয়েছেন তারা হলেন মাহমুদুর রহমান শাওন ৯৩৫ ভোট, লায়ন মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন ৭৫৪ ভোট, হাজী জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ৬৩৫ ভোট, ইঞ্জিনিয়ার মাশুকুর রহমান ৪১৯ ভোট, এসএম হাসান উদ্দীন ৩২৬ ভোট, সেলিম হোসেন চৌধুরী ২৮২ ভোট এবং নুর মোহাম্মদ চৌধুরী ১৬৮ ভোট।

এদিকে, নির্বাচনে ডোনার মেম্বারের দুটি পদে তিনজন প্রতিদ্বন্ধীর মাঝে তাহের খান-রেজাউল করিম আজাদ প্যানেলের মোহাম্মদ শহীদ উল্ল্যাহ (১২৩ ভোট) এবং ড. ইঞ্জিনিয়ার রশীদ আহমদ চৌধুরী (১১৯ ভোট) নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী ডা. আঞ্জুমান আরা ইসলাম-ডা. মোহাম্মদ আরিফুল আমীন পরিষদের লায়ন ডা. দুলাল দাশ পেয়েছেন ১৪ ভোট।

নির্বাচনের আগেই তাহের খান-রেজাউল করিম আজাদ প্যানেল থেকে ভাইস প্রেসিডেন্ট (ডোনার) পদে সৈয়দ মোহাম্মদ মোরশেদ হোসেন এবং জয়েন্ট জেনারেল সেক্রেটারি (ডোনার) সৈয়দ মোহাম্মদ আজিজ নাজিম উদ্দীন বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হয়ে নিজেদের প্যানেলের বিজয়ের ব্যাপারে আভাষ দিয়েছিলেন, যা ভোটে প্রতিফলিত হয়েছে।

ভোটকেন্দ্র পরিবর্তনের জন্য আদালতে রিটসহ নানা জটিলতায় শঙ্কা থাকলেও শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। নিরাপত্তার দায়িত্বে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও আনসার সদস্য ভোটে দায়িত্ব পালন করেছে।