প্রতিনিধি ২ অক্টোবর ২০২১ , ৬:৩৮:৪৬ প্রিন্ট সংস্করণ
মোহাম্মাদ মানিক হোসেন, চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) :
ভাল আবহাওয়া ও পর্যাপ্ত বর্ষার পানি পাওয়ায় আমন ধানের ক্ষেত যেন এবার হাসছে। ধান চাষে খ্যাত দিনাজপুরের মাঠে মাঠে এখন আমনের হলদে রংঙের সমারোহ। আমন ধান ক্ষেতে বাতাসে দুলছে কৃষকের সবুজ স্বপ্ন। দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে এবার আমন ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখছেন কৃষকরা। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, এ মৌসুমে উপজেলায় ২৩ হাজার ৪৩৫ হেক্টর জমিতে আমনের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ২২ হাজার ৭৩৫ হেক্টর জমিতে উফসি, ৩৫৫ হেক্টর জমিতে স্থানীয় ও ৩৪৫ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড জাতের রোপা আমন ধান চাষ করা হয়েছে। আর এক মাসের মধ্যেই কৃষক তাদের কাঙ্খিত আমন ধান কেটে ঘরে তুলতে পারবেন।
জানা গেছে, করোনাকালীন সময় থেকে কৃষকদের নিরবিচ্ছিন্ন সেবা দিতে ছুটির দিনসহ কৃষি বিভাগের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী আমন ধান নির্বিঘেœ ঘরে তুলতে কৃষকদের মাঝে লিফলেট বিতরণ, ভ্রাম্যমাণ ফসল ক্লিনিক সেবা, আলোক ফাঁদ, সন্ধ্যাকালীন ভিডিও প্রর্দশন, উঠান বৈঠক, দলীয় আলোচনা, সচেতনামূলক আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে কৃষকদের উদ্ধুদ্ধ করছে।
এছাড়া পিপি স্কোয়াড গঠন করে মাঠের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যাবেক্ষণ পরামর্শ ও অতন্দ্র জরিপ ব্লকের মাধ্যমে নিয়মিতভাবে রোগ ও পোকার আক্রমণ সংক্রান্ত পূর্বাভাস জরিপ করছেন কৃষি কর্মকর্তারা। তাছাড়া উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিকভাবে কৃষকের জমিতে গিয়ে ফসলের তদারকিসহ নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছেন।
উপজেলার সাতনালা গ্রামের ধানচাষি ছপির উদ্দীন বলেন, আমার ২১ বিঘা জমি আছে। গতবার বোরো মৌসুমে ১৪ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছিলাম। এবার পুরো ২১ বিঘা জমিতে আমন চাষ করেছি। তিনি আরো বলেন, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পরামর্শে এ ফসল ফলিয়েছি। এই ফসলের সবুজ ঢেউ এখন আমাকে স্বপ্ন দেখায় ভালো ফলন ও ভালো দামের।
পশ্চিম সাইতাড়া গ্রামের কৃষক রশিদুল ইসলাম বলেন, আমি গরিব মানুষ, চার বিঘা জমি বর্গা নিয়ে চাষ করেছি। এই মাঠে সবার চেয়ে আমার জমিতে আমন চাষ ভাল হয়েছে। প্রতিদিন ধান ক্ষেতে আসি আর স্বপ্ন দেখি, ধান কেটে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে সুখে দিন কাটাবো।
এ বিষয়ে চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ জোহরা সুলতানা বলেন, গত কয়েক বছর ধরে স্থানীয় জাতের ধানের আবাদ কমে উফশী জাতের আবাদ বেড়েছে। বেশি ফলন হওয়ায় কৃষকদের হাইব্রিড ও উফশীতে আগ্রহ বেশি। আশা রাখছি এসব ধানে এবারও বাম্পার ফলন হবে। কৃষকের স্বপ্ন পূরণ হবে।