দেশজুড়ে

বদলি হলেন বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির জুয়াড়ী ইনচার্জ শাহিন!

  প্রতিনিধি ১৭ অক্টোবর ২০২০ , ৪:০৮:১৯ প্রিন্ট সংস্করণ

বাপ্পা মৈত্র, সিলেট ব্যুরো:

বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশের নির্মম নির্যাতনে রায়হান আহমদ (৩৪) মৃত্যুর পর থেকেই সিলেটসহ সারাদেশে আলোচনায় রয়েছে সিলেট নগর পুলিশের বন্দরবাজার ফাঁড়ি। গত ১০ অক্টোবর রাতে ১০ হাজার টাকার জন্য বন্দরবাজার ফাঁড়িতে নির্যাতন করে রায়হান নামের এক যুবককে হত্যা করা হয়। রায়হান আহমদ হত্যার আভিযোগে প্রধান অভিযুক্ত এসআই আকবর হোসনেকে এই ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্ব থেকে সাময়িক বরখাস্থ করা হয়েছে। এরপর বন্দরবাজার ফাঁড়ির দায়িত্ব দেওয়া হয় নানা কান্ডে বিতর্কিত জুয়াড়ী এসআই শাহিন মিয়াকে।

এসআই শাহিন মিয়াকে বন্দরবাজার ফাঁড়ির দায়িত্বে দেওয়ার পর থেকেই শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। এই পুলিশ কর্মকর্তারা বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি-জুয়াখেলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের পাহাড়। এরইমধ্যে শাহিনের জুয়াখেলার ছবিও শুক্রবার দিনে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। সমালোচনার প্রেক্ষিতে এসআই শাহিনকে বন্দরবাজার ফাঁড়ির দায়িত্ব থেকে শুক্রবার অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তবে শাহিন মিয়াকে বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্ব প্রদানের বিষয়টি অস্বীকার করছেন সিলেট মহানগর পুলিশ কর্তৃপক্ষ।

এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) বিএম আশরাফ উল্যাহ তাহের বলেন, শাহিনকে বন্দরবাজার ফাঁড়ির দায়িত্ব দেয়া হয়নি। এখনও এই ফাঁড়ির ইনচার্জ হিসেব কাউকে দায়িত্ব দেয়া হয়নি। এসআই শাহিনকে বিমানবন্দর থানায় বদলি করা হয়েছে। জানা যায়, শাহিন মিয়ার বিরুদ্ধে জুয়াখেলা, মাদক ও চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।

২০১৮ সালে নগরের লামাবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ থাকা কালে তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ ওঠে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে শাহিনকে প্রত্যাহার করে কোতোয়ালি থানায় নেওয়া হয়। এরপর দক্ষিণ সুরমা থানার কদমতলী বাস টার্মিনাল ফাঁড়িতে বদলি হন তিনি। সেখানে দায়িত্ব পালনকালে শাহিন বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক হয়ে ওঠেন বলে অভিযোগ রয়েছে। কদমতলীতে এক বছর দায়িত্ব পালন শেষে বদলি হন নগরীর শাহপরান থানায়। দায়িত্ব নেন উপশহর পুলিশ ফাঁড়ির। এরপর বদলি হয়ে যান এসএমপির মোগলাবাজার থানাতে। সেখানে গিয়ে আলমপুর পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্ব পান তিনি। এর ৫-৬দিন পরই বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনের ফলে নগরের আখালিয়া নেহারিপাড়ার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে রায়হান আহমদের মৃত্যু হয়।

এ ঘটনার মূল অভিযুক্ত ফাঁড়ির ইনচার্জ আকবর। যিনি বরখাস্ত হয়ে পলাতক রয়েছেন। এরপর বুধবার বিকালে এসআই শাহিনকে বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্ব দেয় এসএমপি পুলিশ কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে এসআই শাহিন মিয়ার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, গত ১০ অক্টোবর রাতে ১০ হাজার টাকার জন্য বন্দর ফাঁড়িতে নির্মম নির্যাতন করে রায়হান নামের এক যুবককে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার মূল অভিযুক্ত বন্দরবাজার ফাঁড়ি ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন। আকবরের নেতৃত্বে এই নির্যাতন চালানো হয় বলে প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় আকবরসহ ৪ পুলিশকে সাময়িক বরখাস্ত এবং ৩ জনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। নির্যাতনের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার পর আকবর পালিয়েছেন।

 

আরও খবর

Sponsered content