ইউক্রেন ছেড়ে পালানো মানুষের মধ্যে ৮ লাখই শিশু

ভোরের দর্পণ ডেস্ক:

রাশিয়ার আগ্রাসনে ইউক্রেন ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া মানুষের মধ্যে আনুমানিক আট লাখের মতো শিশু আছে। ইতোমধ্যে ২০ লাখ লোক দেশটি ছেড়েছে বলে জাতিসংঘ ও সেভ দ্য চিলড্রেন।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনরা ফিলিপো গ্র্যান্ডি এ কথা জানিয়েছেন। এর আগে তিনি ইউক্রেনের পরিস্থিতিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে দ্রুত বাড়তে থাকা শরণার্থী সংকট বলে আখ্যায়িত করেছিলেন।

বেসরকারি সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন বলেছে, দেশ ছাড়তে শিশুদের অনেকে একাই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিচ্ছে আর কোনো সঙ্গী ছাড়াই সীমান্তে এসে হাজির হচ্ছে।

সংস্থাটির কর্মকর্তা ইরিনা সাগোয়ান বলেন, নিজেদের শিশুদের রক্ষার জন্য মা-বাবারা অত্যন্ত বেপরোয়া, হৃদয়বিদারক পদক্ষেপ নিচ্ছে। বাড়ি রক্ষার জন্য তারা নিজেরা বাড়িতে থেকে নিরাপত্তার জন্য সন্তানদের প্রতিবেশী ও বন্ধুদের সঙ্গে ইউক্রেইনের বাইরে পাঠিয়ে দিচ্ছে।

গতকাল মঙ্গলবার (৮ মার্চ) এক প্রতিবেদনে বিবিসি এ রকম একটি ঘটনার কথা তুলে ধরেছে। এতে ইউক্রেনের জেপোরোজিয়া থেকে ট্রেনে ১২’শ কিলোমিটারের বেশি পথ একা পাড়ি দিয়ে ১১ বছর বয়সী হাসানের স্লোভাকিয়া পৌঁছানোর কথা জানানো হয়েছে। হাসানের সাথে ছিল কেবল ছোট দুটি ব্যাগ, পাসপোর্ট ও স্লোভাকিয়ায় থাকা তার এক স্বজনের ফোন নম্বর।

জেপোরোজিয়া শহর মা ও নানীর সঙ্গে থাকতো হাসান। রুশ বাহিনী যখন শহরটিতে হামলা চালায় তখন হাসানের মায়ের পক্ষে তার বৃদ্ধা মা’কে নিয়ে শহর ছাড়া সম্ভব ছিল না। তাই তিনি হাসানকে একাই ট্রেনে তুলে দেন। দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে হাসান সীমান্তে পৌঁছায়।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর এখন পর্যন্ত দেশটি থেকে পালিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নেওয়া মানুষের সংখ্যা ২০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এদের মধ্যে প্রায় ১২ লাখ প্রতিবেশী পোল্যান্ডে গিয়ে উঠেছে। আর বাকিরা অন্য প্রতিবেশী দেশ হাঙ্গেরি, মলদোভা, স্লোভাকিয়া ও রোমানিয়ায় গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে।

ইউক্রেন ছেড়ে পালানোর মানুষের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো।