আন্তর্জাতিক

ইসরায়েলের সঙ্গে আমিরাত-বাহরাইনের চুক্তি, ফিলিস্তিনে বিক্ষোভ

  প্রতিনিধি ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ১১:৪৮:০৪ প্রিন্ট সংস্করণ

হোয়াইট হাউজে মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চুক্তিতে সই করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন। এই ঐতিহাসিক স্বাক্ষরকে ট্রাম্প ‘মধ্যপ্রাচ্যের নতুন সূর্যোদয়’ বললেও ফিলিস্তিনিদের দাবি, ইসরায়েলিরা দখলকৃত অঞ্চল ছেড়ে গেলেই কেবল মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি আসবে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বাহরাইন ও আমিরাতের দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওই চুক্তি সইয়ের পর শত শত ফিলিস্থিনির বিক্ষোভে সরগরম হয়ে ওঠে দখলকৃত পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকা। ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার ঘটনাও ঘটেছে।

হাতে ফিলিস্তিনি পতাকা ও করোনা প্রতিরোধে ফেস মাস্ক পরে গাজা ও পশ্চিম তীরের শহর নাবলুস ও হেবরনে বিক্ষোভকারীরা মিছিল করেন। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) সদর দপ্তর রামাল্লাহতেও বিক্ষোভে অংশ নেন অনেকে।

কারও কারও হাতে ব্যানার ছিল, যাতে লেখা ‘বিশ্বাসঘাতকতা’, ‘দখলদারের সঙ্গে কোনোভাবে সম্পর্ক স্বাভাবিক নয়’ এবং ‘লজ্জার চুক্তি’। গাজার ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারী এমাদ এসা বলেছেন, যদি কেউ উপকূলীয় ছিটমহল দিয়ে হেঁটে যায় ‘তাহলে শতশত গাজান যুবককে দেখতে পাবেন যারা ইসরায়েলি অবরোধের প্রতিবাদ করতে গিয়ে পা হারিয়েছে এবং আজীবনের জন্য খোঁড়া হয়ে গেছে।’

 

 

আল জাজিরাকে এমাদ আরও জানান, পশ্চিম তীর ও জেরুজালেমে ইসরায়েলি বুলডোজার এখনও ফিলিস্তিনিদের বাড়ি গুঁড়িয়ে দিচ্ছে এবং তাদের গ্রাম ছাড়া করছে। এসব দেখেও বাহরাইন ও আমিরাতের জন্য চুক্তি করা লজ্জাজনক মন্তব্য করেছেন তিনি, ‘এসব তো ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি অপরাধের অল্প কিছু উদাহরণ। অথচ এসব অপরাধের পুরস্কার হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন তাদের সঙ্গে চুক্তি করলো। এই চুক্তি ওইসব নেতাদের জন্য লজ্জার, যারা খুব সস্তায় ফিলিস্তিনিদের ভাগ্য বেঁচে দিলো।’

বিক্ষোভের এক পর্যায়ে নেতানিয়াহু, ট্রাম্প, বাহরাইনের বাদশাহ হামাদ বিন ইসা আল খলিফা, আবুধাবির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের ছবি পদদলিত করেন বিক্ষোভকারীরা এবং তা পরে পুড়িয়ে দেন। পিএ প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, কেবল দখলকৃত অঞ্চল থেকে ইসরায়েলিদের সরে যাওয়ায়ই মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফেরাতে পারে।

ফিলিস্তিনি ইউনিফাইড ন্যাশনাল কমান্ড অব পপুলার রেসিস্টেন্স এই চুক্তি বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে। শুক্রবার তারা শোক ঘোষণা করেছেন। ওইদিন সব চত্বর, ভবন ও বাসা-বাড়িতে কালো পতাকা উড়ানো হবে। এরই মধ্যে ‘ব্ল্যাক ডে’ হ্যাশট্যাগ দিয়ে প্রতিবাদ শুরু করেছে সোশ্যাল মিডিয়ার আন্দোলনকর্মীরা।

এদিকে চুক্তি সই অনুষ্ঠানের সময় গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলের দিকে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। সাইরেন বেজেছে উপত্যকার উত্তরের শহর আশকেলন ও আশদোদে। মাগেন ডেভিড অ্যাডম এজেন্সি সার্ভিস বলেছে, শ্রাপনেল থেকে দুজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। তবে তাদের অবস্থা প্রাণঘাতী নয়। এই হামলার দায় স্বীকার করেনি কোনও গোষ্ঠী।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by