প্রতিনিধি ৬ এপ্রিল ২০২১ , ৬:২৬:১৪ প্রিন্ট সংস্করণ
মাঠে ময়দানে যেভাবে মানুষকে নসিহত করছেন ও শিক্ষা দিচ্ছেন, কিন্তু নিজের মধ্যে ওইসব আমল না থাকায় পথভ্রষ্ট হয়েছেন, অন্যদেরও পথভ্রষ্ট করেছেন এবং দ্বীন ইসলামকে অন্য ধর্মের লোকদের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন!
মামুনুল হক দ্বিতীয় বিয়ে করতেই পারেন, এইজন্য হয়তো প্রথম স্ত্রীর অনুমতি লাগে না। সবই ঠিক আছে। কিন্তু দ্বিতীয় বিয়ে করার পর প্রথম বৌ তো জানার অধিকার রাখেন- নাকি? মামুনুল হকের স্ট্যাটাস অনুযায়ী এরমাঝে দুই বছর চলে গেছে। তো এই দুই বছরে উনি উনার প্রথমে স্ত্রীকে জানানোর প্রয়োজন মনে করেন নাই? উনার বোন জানেন, ভাগনে জানেন, দলের নেতাকর্মীরা জানেন, ফেসবুকের ডিফেন্ড করতে আসা সব পোলাপানও নাকি জানে মামুনুল বিবাহিত! অথচ ঘরের বৌ-ই জানেন না? মারাত্মক মানবতার বিয়ের গল্প ভাই!!
মামুনুল হক যখন তার বৌকে ঘটনা ফোনে বলেন- সেখানেও বলেন নাই যে মেয়েটাকে তিনি বিয়ে করেছেন! তিনি বলেছেন, সে শহীদুল ভাইয়ের স্ত্রী! আই রিপিট- শহীদুল ভাইয়ের স্ত্রী- ঠিক এই কথাটা বলেছেন। এরপর বৌকে বললেন, কেউ যদি তাকে কিছু বলে তাহলে সে যাতে বলে সব জানে! কেনো? কেনো বলবে সব জানে। হুজুর কেনো তার বৌকে মিথ্যা বলার ছবক দেবেন? মিথ্যা বলা তো মহাপাপ! হুজুর তার বৌকে মহাপাপ করতে বলতেছেন এটা কেমন কথা?
যে লোক নিজের বৌকে মিথ্যা কথা বলার জন্য প্ররোচিত করতে পারেন তিনি রিসোর্টে কট খেয়ে আজকে মানবিক বিয়ের গল্পের নামে মিথ্যা গল্প বানাননি তার নিশ্চয়তা কী?
দেখেন; মামুনুল হক তার নিজের ব্যক্তিগত জীবনে কী করবেন-এটা একান্তই তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। তিনি যদি মনে করেন আরেকটা বিয়ে করে প্রথম বৌকে কিছুই জানাবেন না, এটাও তার এবং তার বৌয়ের ব্যক্তিগত ব্যাপার। এইটা নিয়ে কথা বলার কিছু নেই!
কিন্তু উপরে এতোগুলো কথা বললাম একটাই কারণে। মানুষজন তাকে ডিফেন্ড করতে গিয়ে ইসলামকে টেনে আনে। ইসলামে এসবের কোনো জায়গা নেই।
আপনি যদি হেফাজতকর্মী হন, অথবা হেফাজত সমর্থক হন অথবা মামুনুল হকের ভক্ত; তার এই অসময়ে আপনি তাকে ডিফেন্ড করবেন, নানা যুক্তি দেবেন তার পক্ষে। তাতেও কোনো সমস্যা নেই। আপনি আপনার নেতার পাশে দাঁড়াবেন খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু মাঝখান থেকে কোরআনের আয়াত, হাদিসের বয়ান-এসব ব্যবহার করার মানে কী?
মামুনুল হক মানেই ইসলাম না; হেফাজত মানেই ইসলামের ধারক-বাহক না। তারা পলিটিশিয়ান! পলিটিক্স করতে গেলে অনেক কাহিনি থাকবে এটাও স্বাভাবিক। এর চেয়ে বড় কথা- এরা সবাই মানুষ। মানুষ মাত্রই ভুল করে, মানুষ মাত্রই তার জীবনের অন্ধকার দিক থাকে। সেটা আমার আপনার সবার। কেউই ধোয়া তুলসী পাতা না। সবার মধ্যেই ভেজাল আছে। কিন্তু ইসলামে কোনো ভেজাল নেই। আপনি যখন ভেজাল মানুষকে ইসলাম দিয়ে ডিফেন্ড করতে যাবেন তখন আপনি ইসলামকেও ভেজাল বানাচ্ছেন। কিসের জন্য?
কোরআনের সূরা বাকারাতে একটা আয়াত আছে বনী ঈসরাইলকে উদ্দেশে করে, ‘তোমরা আমার আয়াতকে স্বল্প মূল্যে বিক্রি করে দিও না।’ তবে এ আয়াতের তাফসির অনেক তাৎপর্যপূর্ণ। আপনি দুনিয়ার কোনো কাজেই, যেকোনো পার্থিব স্বার্থে কোরআনের আয়াত ব্যবহার করতে পারেন না।
আপনি আপনার নেতাকে ডিফেন্ড করেন যেভাবে ইচ্ছা। তাকে ডিফেন্ড করার অসংখ্য রকমের যুক্তি আছে। কিন্তু প্লিজ ইসলামকে টাইবেন না। কোরআনের আয়াত, হাদিস এসব নেতাকে বাঁচাতে গিয়ে বিক্রি করে দিয়েন না।
লেখক: শেখ মোহাম্মদ মুহিউদ্দিন।