দেশজুড়ে

কক্সবাজার পৌরসভা কাল থেকে ১৪ দিনের কঠোর লকডাউন

  প্রতিনিধি ৫ জুন ২০২০ , ৬:৫৩:৪৪ প্রিন্ট সংস্করণ

ইসলাম মাহমুদ, কক্সবাজার : করোনা আক্রান্তের পরিমাণ আশঙ্কাজনক হারে দিনদিন বাড়তে থাকায় কক্সবাজার পৌরসভাসহ জেলার কয়েকটি এলাকাকে ‘রেড জোন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আর সেসব এলাকায় আগামী দুই সপ্তাহের জন্য কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছেন জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এবং করোনা সংক্রান্ত ওয়ার্কিং কমিটির আহবায়ক মোঃ আশরাফুল আফসার এর নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার (৪জুন) রাতে zoom ভিডিও কনফারেন্সে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভায় জানানো হয়, করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যার ভিত্তিতে কক্সবাজার জেলাকে তিনটি জোনে বিভক্ত করা হয়েছে। জেলার আটটি উপজেলাকে ইউনিয়নভিত্তিক ও চারটি পৌরসভায় ওয়ার্ড ভিত্তিক বিন্যাস করে ম্যাপ তৈরী করা হয়েছে। শনিবার (৬জুন) থেকে ১৯জুন শুক্রবার পর্যন্ত কক্সবাজার পৌরসভায় লকডাউন প্রাথমিকভাবে বলবৎ থাকবে। প্রয়োজন হলে পরে সিদ্ধান্ত নিয়ে সময় আরো বাড়ানো হবে।

এ সময়ে কক্সবাজার পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে ৩০জন করে স্বেচ্ছাসেবক থাকবেন। তাদেরকে কক্সবাজার সদর উপজেলার ইউএনও মাহমুদ উল্লাহ মারুফ পরিচয় পত্র ইস্যু করবেন। লকডাউন চলাকালে শুধু স্বেচ্ছাসেবক ও ইমার্জেন্সী কাজের লোকজন ছাড়া অন্য কেউ বাড়ি ঘর থেকে কোন অবস্থাতেই বের হতে পারবেন না। কক্সবাজার পৌর এলাকায় যাদেরকে বাড়ির বাইরে পাওয়া যাবে, তাদেরকে কঠোর আইনের আওতায় আনা হবে। প্রতি সাপ্তাহ রোববার ও বৃহস্পতিবার সীমিত সময়ের জন্য কাঁচাবাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রীর দোকান খুলতে পারবে।

সেসময় স্বাস্থ্য বিধি মানাতে, সামাজিক ও শারীরিক দুরত্ব বজায় রাখতে প্রশাসনের সেখানেও কঠোর মনিটরিং থাকবে। সাপ্তাহের অন্যান্য সময় সকল মার্কেট, শপিং মল, দোকান, কাঁচা বাজার সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। একইভাবে কক্সবাজার পৌর এলাকায় অবস্থিত বাণিজ্যিক ব্যাংক গুলোও প্রতি সপ্তাহ রোববার ও বৃহস্পতিবার সীমিত সময়ের জন্য খেলা থাকবে। কোন প্রকার গাড়ি লিংক রোড থেকে পশ্চিম দিকে শহরে আসতে পারবে না। শহরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালেও প্রবেশ করতে পারবেনা। লিংক রোড থেকেই সকল গাড়ি ছেড়ে যাবে এবং সেখানে এসে থামবে।

কক্সবাজারে কর্মরত আইএনজিও এবং এনজিও গুলোর কোন গাড়ি লিংক রোড থেকে পশ্চিমে শহরে আসতে পারবে না। শনিবার ৬ জুন থেকে ১৯জুন পর্যন্ত আইএনজিও এবং এনজিও গুলোকে লিংক রোডে তাদের গাড়ি রেখে ও সেখান থেকে গাড়ি ছেড়ে তাদের অফিস করতে হবে। কক্সবাজার জেলার বাইরের কোন লোককে এই ২ সপ্তাহ কক্সবাজার শহরে প্রবেশ করতে দেওয়া হবেনা।

গণমাধ্যমকর্মী, সংবাদ সংগ্রহকারী, ক্যামেরাম্যান ও সংশ্লিষ্টদের কক্সবাজার প্রেসক্লাব কর্তৃপক্ষ থেকে ইস্যু করা পরিচয়পত্র নিয়ে চলাচল করতে হবে। কক্সবাজার প্রেসক্লাব কর্তৃপক্ষের ইস্যুকৃত পরিচয়পত্র নিয়ে গণমাধ্যমের লোকজন ও সংশ্লিষ্টরা সংবাদ সংগ্রহ ও ভিজিলেন্স টিমের সাথে থাকতে পারবে। শহরের মসজিদগুলোতে কর্তৃপক্ষের নির্দেশিত সংখ্যার বেশী মুসল্লী জামাতে অংশ নিতে ও মসজিদে যেতে পারবে না। কর্তৃপক্ষের এসব নির্দেশনার বিষয়ে কক্সবাজার জেলা তথ্য অফিস, কক্সবাজার পৌরসভা, কক্সবাজার সদর উপজেলার ইউএনও এবং কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগ শুক্রবার পুরো কক্সবাজার শহরে মাইকিং করবে।

ভিডিও কনফারেন্স জানানো হয়, শুধুমাত্র কক্সবাজার পৌরসভায় ২৭৬ জন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছে। তন্মধ্যে সর্বনিম্ম হলো- ১ নম্বর ওয়ার্ডে ৫জন এবং ১২নম্বর ওয়ার্ডে ৩ জন। এরমধ্যে কক্সবাজার পৌরসভায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ১০জন।

উল্লেখ্য, কক্সবাজার জেলায় এ পর্যন্ত ৮৮৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। প্রায় আড়াইশতজন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। মারা গেছেন ১৮ জন। ৩৪ টি রোহিঙ্গা ক্যাম্প রয়েছে ঝুঁকিতে। ইতোমধ্যে একজন রোহিঙ্গা মারা গেছেন, ৩০ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by