রংপুর

কুড়িগ্রামে হিমাগারে স্থান সংকট : আলু নিয়ে বিপাকে ব্যবসায়ী ও চাষি

  প্রতিনিধি ৫ এপ্রিল ২০২১ , ৮:১৬:৩৮ প্রিন্ট সংস্করণ

এস এম আশরাফুল হক রুবেল, কুড়িগ্রাম :

 

কুড়িগ্রামের হিমাগারগুলোতে স্থানাভাবের কারণে আলু নিয়ে বিপাকে পড়েছে আলু চাষিরা। অতিরিক্ত আলুর চাপে হিমাগারগুলোর সামনে ট্রলি, ঘোড়ার গাড়ি, ভ্যান ও মহিষের গাড়ির দীর্ঘ সারি। ফলে সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের। হিমাগার কতৃপক্ষ জানিয়েছেন, ধারণ ক্ষমতা প্রায় নি:শেষ হওয়ায় তারা হিমাগারের প্রধান ফটক বন্ধ করে দিয়েছেন। তারপরেও ভিড় করছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।

 

বাজারে আলুর দাম হ্রাস, ক্রেতার অভাব ও বিদেশে রপ্তানি কমে যাওয়ায় আলু উৎপাদন করে এখন মাথায় হাত বহু কৃষকের। গত বছর আলুর ভালো দাম পাওয়া এবং এ বছর আলুর ভালো ফলন হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান অনেকে। গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কুড়িগ্রামের কয়েকটি হিমাগার ঘুরে দেখা গেছে, হিমাগারগুলো প্রধান ফটক বন্ধ। মাঠে ও রাস্তায় শত শত বস্তা আলু নিয়ে অপেক্ষমান কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে দুটি পিকআপ নিয়ে বাবর কোল্ড স্টোরেজের সামনে রাস্তায় বসে আছেন পিকআপ চালক সাইদুল মিয়া। কিন্তু ভেতরে ঢুকতে পারছেন না।

একই অবস্থা হক হিমাগারের সামনে বসে থাকা রাজারহাটের ঘড়িয়াল ডাঙার কৃষক রিয়াজুল ইসলাম। তিনি জানান, ৭০ বস্তা আলু নিয়ে দুদিন ধরে অপেক্ষা করেও হিমাগার কর্তৃপক্ষের সাড়া পাচ্ছেন না। হক হিমাগারের কর্মচারি নুর ইসলাম জানান, এই হিমাগারে ১ লাখ ৭০ হাজার বস্তা ধারণ ক্ষমতা প্রায় পূর্ণ হয়ে গেছে। আর আলু নেয়ার সুযোগ নেই। সেকেন্দার কোল্ড স্টোরেজের স্টোর কিপার আইয়ুব আলী জানান, এই হিমাগারে ১ লাখ ৮০ হাজার বস্তা ধারণ ক্ষমতার পুরোটাই পূরণ হওয়ায় আলু নেয়া যাচ্ছে না। জমিতে এখনও প্রচুর আলু তোলা বাকী। এই অতিরিক্ত আলু কৃষকদের বাড়িতে সংরক্ষণ করা ছাড়া উপায় নেই।

 

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কুড়িগ্রামের ৪টি হিমাগারে মোট ধারণ ক্ষমতা ৬ লাখ ২০ হাজার বস্তা। ধারণ ক্ষমতার প্রায় পুরোটাই পূরণ হওয়ায় অতিরিক্ত কিছু আলু সংরক্ষণের চেষ্টা করছে এসব হিমাগার কর্তৃপক্ষ।

সদর উপজেলার সন্ন্যাসী গ্রামের কৃষক আব্দুল বাতেন, রাজারহাটের দেবালয় গ্রামের কৃষক আজম আউয়াল দোলনসহ কয়েকজন কৃষকরা জানান, প্রতি কেজি আলুর মূল্য ৬-৭ টাকায় নেমে গেছে। তাও ক্রেতা মিলছেনা। হিমাগারেও জায়গা মিলছে না। ফলে আলু চাষ করে তারা বিরাট লোকসানের মুখে পড়েছেন। তারা জানান, এবছর আলু বীজের দাম বেশি থাকায় প্রতি একর জমিতে আলু চাষ করতে প্রায় এক লাখ টাকা খরচ পড়েছে।

সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী বাজারের আলু ব্যবসায়ী ছোলেমন আলী জানান, অন্যান্য বছর বিদেশে আলু রপ্তানির কারণে আলুর বাজার স্থিতিশীল থাকলেও এবছর রপ্তানি চাহিদা কম থাকায় এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে আলুর বাজারে। প্রতিদিন কমছে দাম।

 

আলু রপ্তানি কারক প্রতিষ্ঠান এগ্রি কনসার্ন এর ডেপুটি ম্যানেজার সাহানুজ্জামান জানান, বর্তমানে তারা শ্রীলংকা ও সিঙ্গাপুরে সীমিত পরিমাণ আলু রপ্তানি করছেন। তবে ডোনাটা, সানসাইন ও কুম্বিকার মতো কিছু জাতের আলুর ব্যাপক চাহিদা থাকলেও বাংলাদেশে এসব জাতের আলু আবাদ কম হওয়ায় রপ্তানির সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।

 

আরও খবর

Sponsered content

Powered by