ময়মনসিংহ

কেন্দুয়ায় নদীর ভেতরে খাল খননের প্রকল্প! কথিত খালের পাড়ে লাগানো হচ্ছে গাছ

  প্রতিনিধি ৯ জুন ২০২১ , ৭:১৮:২৭ প্রিন্ট সংস্করণ

কেন্দুয়া (নেত্রকোণা) প্রতিনিধি:

নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় বেতাই নদীর ভেতরে চলছে ‘খাল খননের প্রকল্প’। ২ কোটি ৮ লাখ টাকা ব্যয়ের এমন প্রকল্পে বিস্মিত এলাকাবাসী। নদীকে খালে পরিণত হওয়া থেকে রক্ষার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। ইতোমধ্যে মানববন্ধনের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়েছেন তারা। অন্যদিকে প্রকল্প বাস্তবায়নে কমিটি নিয়েও রয়েছে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কেন্দুয়া উপজেলার সান্দিকোনা ও রোয়াইলবাড়ি ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে বয়ে চলেছে বেতাই নদী। শুকনো মৌসুমে শ্রীহীন থাকলেও বর্ষায় ফিরে আসে পূর্ণ যৌবন। কিন্তু সে নদীকেই খাল দেখিয়ে কোথাও ৪৪ ফুট, কোথাও ৩০ ফুট ও কোথাও ২৫ ফুট প্রস্থে প্রায় ১১ কিলোমিটার বেতাই খাল খনন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ক্ষুদ্রাকার পানিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প (জাইকা-২)।

প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করছে বেতাই খাল পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেড। ১৬ টি প্যাকেজ কার্যাদেশ দেয় এলজিইডি। খনন কাজে ব্যাপক অনিয়মের মাধ্যমে বৃহৎ এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলেও আজো টানানো হয়নি প্রকল্প কাজের সাইনবোর্ড। এই প্রকল্পের কাজ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় হলেও প্রশাসন নীরব ভূমিকায় রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, অসাধু এলজিইডির কর্মকর্তাদের যোগসাজশে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য এমন কাজ করছে একটি কুচক্রী মহল। যে কোনো মূল্যে নদীকে খালে পরিণত হওয়া থেকে রক্ষা করতে চান তারা।

 

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নদীর তীরবর্তী মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে উত্তেজনা ও ক্ষোভ। অভিযোগ রয়েছে, নদীর দুই পাড়ের মানুষকে না নিয়ে অন্য এলাকার লোক দিয়ে কমিটি তৈরি করে ভুয়া প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারের সঙ্গে প্রতারণা করছেন। এছাড়া নদী দখল করে ওই সমিতি খনন করা কথিত খালের পাড়ে লাগানোর হচ্ছে চারা গাছ।

এ ব্যাপারে হেল্পলাইন কেন্দুয়া প্রধান এডমিন শাহ আলী তৌফিকুল রিপর বলেন, একটি নদীকে খালে রূপান্তরিত করে ভুয়া নাম দিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের চেষ্টা সত্যিই ন্যক্কারজনক। ব্যক্তি স্বার্থের জন্য পুরো নদীর এমন ক্ষতি মেনে নেয়া যায় না। এটা রীতিমত নদীটিকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার চক্রান্ত চলছে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

 

এ প্রসঙ্গে বেতাই খাল পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান কাজল বলেন, সরকার প্রকল্পটি খাল হিসেবে দিয়েছে। আমরা শুধু সরকারি আদেশ বাস্তবায়ন করছি। এব্যাপারে কেন্দুয়া এলজিইডির প্রকৌশলী মো. জাকির হাসান বলেন, এটা যে নদী ছিল আগে জানা ছিল না। প্রকল্পের শতভাগ কাজ শেষ হয়েছে। এখন খনন করা খালের পাড়ে গাছ লাগানোর কাজ করা হচ্ছে। নদী-খাল বিষয়টি উপর মহলে কথা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। এব্যাপার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মঈনউদ্দিন খন্দকার বলেন, নদীতে যে খালের নাম দিয়ে প্রকল্প দেয়া হয়েছে তা আমি জানতাম না। প্রকল্পটির প্রক্রিয়া কার্যক্রম তো অনেক আগে থেকেই শুরু হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাছাড়া নদী ভিতরে গাছের চারা রোপন করতে দেয়া হবে না বলেও জানান তিনি।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by