ঢাকা

কেরানীগঞ্জে মাদ্রাসা ছাত্রকে অপহরণ-খুনে গ্রেপ্তার ১

  প্রতিনিধি ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ , ৫:৫৩:৩৬ প্রিন্ট সংস্করণ

কেরানীগঞ্জে মাদ্রাসা ছাত্রকে অপহরণ-খুনে গ্রেপ্তার ১

ঢাকার কেরানীগঞ্জে অপহরণের দুই দিন পর তাওহীদ ইসলাম (১০) নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার আব্দুল্লাহপুর এলাকার একটি জঙ্গলের ভেতরে ময়লার আবর্জনা থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয়।

ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তিপণের টাকা আদায়ের মূল পরিকল্পনাকারী ও হত্যাকারী মো. মকবুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব- ১০। বিষয়টি নিশ্চিত করেন, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুব আলমতাওহীদ উপজেলার আব্দুল্লাহপুর রসুলপুর জামিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার নাজেরা বিভাগের শিক্ষার্থী। তার পিতা উজ্জ্বল হোসেন(প্রবাসী) এবং মা তাসলিমা বেগম বলেন জানা যায়।

এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থী মা তাসলিমা বেগম বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পুলিশ ও নিহত তাওহীদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ওই শিক্ষার্থী প্রতিদিনের ন্যায় ক্লাস শেষে মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফিরতে বিলম্ব হওয়ায় তার মা তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। এর কিছুক্ষণ পর তার মোবাইলফোনে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি ফোন আসে।

মোবাইলফোনে বলা হয়, ‘আসসালামু আলাইকুম। আপনার ছেলে ভালো আছে। কেরানীগঞ্জেই আছে, আজকের মধ্যে তিন লাখ টাকা দিলে ছেলে পাবেন। বিষয়টি পুলিশ ও এলাকার কাউকে জানাবেন না। জানালে আপনার ছেলে তাওহীদের ক্ষতি হবে। অপহরণকারীদের কথামতো নিহতের মা তাসলিমা বেগম ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে ফুটওভার ব্রিজের নিচে পিলারের গোড়ায় ৩ লাখ টাকা রেখে আসে কিন্তু অপহরণকারী চক্র মুক্তিপণ পেয়েও তার ছেলে তাওহীদকে মুক্তি না দিয়ে হত্যা করে লাশ উপজেলার আবদুল্লাহপুর মধ্যপাড়া রাস্তার ময়লা আবর্জনায় পাশে রেখে যায়।

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুব আলম বলেন, মাদ্রাসা শিক্ষার্থী তাওহীদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। এ বিষয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের হয়েছে।

মুক্তিপণের টাকা আদায়ের মূল পরিকল্পনাকারী ও হত্যাকারীকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে র‌্যাব-১০ এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন জানান, র‌্যাব-১০ এর একটি অভিযানিক দল তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের পোস্তগোলা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চাঞ্চল্যকর মাদ্রাসা শিক্ষার্থী তাওহীদকে অপহরণ করে হত্যার পর সেপ্টিক ট্যাংকে লাশ গুমের পরও মুক্তিপণের টাকা আদায়ের মূল পরিকল্পনাকারী ও হত্যাকারী মকবুল হোসেন (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়।

এসময় মুক্তিপণের ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত মকবুল পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। ভিকটিমের পরিবার ও গ্রেপ্তারকৃত মকবুল একই এলাকায় বসবাস করতো এবং কিছুদিন পূর্বে গ্রেপ্তারকৃত মকবুল ভিকটিমের বাসায় রাজমিস্ত্রির কাজ করেছেন বলে জানায়।

একই এলাকায় বসবাস এবং বাসায় রাজমিস্ত্রির কাজ করার সুবাদে ভিকটিমের পরিবারের সাথে তার সুসম্পর্ক ছিল। ভিকটিম তাওহীদের বাবা একজন প্রবাসী বলে জানান র‍্যাব এর কর্মকর্তা।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by