ঢাকা

কোটালীপাড়ায় রাবেয়া নামে এক গৃহবধূর আত্মহত্যা, লালসার বলি বলে দাবি স্বজনদের

  প্রতিনিধি ৩ জানুয়ারি ২০২৩ , ৬:২৯:৩৯ প্রিন্ট সংস্করণ

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

পৃথিবীতে লোভ লালসা নেই এমন প্রাণি একটিও আছে বললে ভুল হবে। আর এই লোভ-লালসার শিকার হয়ে বলিরপাঠা হতে হয় এমন ঘটনাও আছে অসংখ্য। এই লালসার পরিমান প্রাণিকুলের মধ্যে মানুষ নামক প্রাণিটিরই সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। প্রবাদ আছে “মানুষ যত পায়, তত চায়”। সেই লালসা নামক ঘৃন্য শব্দটির শিকার হয়ে এবার অকালেই বলি হয়েছেন গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার নববধূ রাবেয়া (২০)। নিহত রাবেয়া কোটালীপাড়া উপজেলার কুশলা ইউনিয়নের কান্দি গ্রামের ইউনুস আলী শেখের মেয়ে। সাত মাস পূর্বে মা-বাবা ব্যাপক আয়োজন করে রাবেয়াকে বিবাহ দেন পার্শ্ববর্তী মধ্য মাঝবাড়ী গ্রামের হারুন দাড়িয়ার ছেলে সাদ্দাম দাড়িয়া (২৭) এর সাথে। সাদ্দাম বর্তমানে সাভার সেনা নিবাসে সেনা সদস্য হিসেবে কর্মরত আছেন। বিয়ের সময় শ্বশুর বাড়ী থেকে স্বার্ণালঙ্কার ও ফার্নিচার সহ বিভিন্ন সামগ্রী উপহার দেওয়া হয় মেয়ের জামাইকে। কিন্তু তাতে চাহিদা মেটেনি স্বামী শাশুড়ী দেবরদের বলে দাবি নিহতের পরিবারের। আরো যৌতুক ও দেবর হাকিম দাড়িয়ার চাকুরি এবং একটি নলকুপের জন্য শ্বশুর বাড়ীর লোকজন প্রায়শই চাপ দিতে থাকে নববধূকে বলে দাবি করেন নিহতের পরিবার।

এ নিয়ে স্বামীর পরিবারে কথায় কথায় শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতনের শিকার হতেন রাবেয়া। অত্যাচারের মাত্রা সহ্য করতে না পেরে সোমবার (০২-০১-২০২৩) বিকালে স্বামীর সাথে মোবাইলে কথা শেষ করে বাবার বাড়িতে গলায় ফাঁস দেয় রাবেয়া। স্বজনেরা তাকে চিকিৎসার জন্য কোটালীপাড়া হাসপাতালে নিয়ে আসে। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। আমির আলী শেখ, মান্নান শেখ, দেলোয়ার হোসেন, আনিস সহ একাধিক এলাকাবাসী এই প্রতিবেদককে জানান—শ্বশুরবাড়ীর লোকজন কারনে অকারনে নির্যাতন চালাত রাবেয়ার ওপর। নিহতের পিতা ইউনুস আলী শেখ ভাই মেহেদী হাসান বলেন—বিয়ের সময় ১৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, ৪ লক্ষ, ৫০ হাজার টাকার ফার্নিচার সহ বিভিন্ন উপহার দিয়েছি, বিয়ের পর থেকে আরো যৌতুক, দেবরের চাকুরি ও নলকুপের জন্য চাপ দিয়ে আসছে রাবেয়াকে, সাদ্দাম বলে আমার মায়ের কথামতো না চললে তোমাকে ডিভোর্স দেব, স্বামী শাশুড়ির মানুষিক নির্যাতনের কারনেই রাবেয়া আত্মহত্যা করেছে। এ ব্যাপারে নিহতের স্বামী সাদ্দাম দাড়িয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, যৌতুক, চাকুরির জন্য চাপ মানুষিক নির্যাতন এ সব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এ বিষয়ে কোটালীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ জিল্লুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন—থানায় একটি অপ মৃত্যুর মামলা হয়েছে, লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছি। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by