চট্টগ্রাম

চাঁদপুরে জেলে পরিবারে কাটেনি কালবৈশাখী ঝড়: এখনো নিখোঁজ দুই জেলে

  প্রতিনিধি ৭ এপ্রিল ২০২১ , ৭:৫৯:১৫ প্রিন্ট সংস্করণ

মাহফুজুর রহমান, চাঁদপুর প্রতিনিধি:

 ‘বাবাগো, আমাদের ছাইড়া তুমি কই চইলা গেলা বাবা…। তুমি ছাড়া আমাদের আবদার কে পূরণ করবে বাবা। কেন আমাদেরকে একা ফেলে তুমি চইলা গেলা? আমি অহন কার কাছে কমু আমার মনে কথা…।’
বাবা আলমগীর হাওলাদারের মরদেহের সামনে বিলাপ করে কাঁদছিলেন ১৬ বছরের কিশোর নাজমুল হোসেন।
গত ৪ঠা এপ্রিল চাঁদপুরের হরিণা ফেরিঘাট এলাকায় মেঘনা নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে প্রচণ্ড ঝড়ের কবলে পড়ে নিখোঁজ হন আলমগীর হাওলাদার এবং আরও চার জেলে। পরে মঙ্গলবার সকালে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী এলাকার মেঘনা নদী থেকে আলমগীর ও মোহাম্মদ আলী দেওয়ানের মরদেহ উদ্ধার হয়।
চাঁদপুর সদর উপজেলার হরিণা ফেরিঘাটের গোবিন্দিয়া এলাকার বাসিন্দা আলমগীর এক ছেলে ছাড়াও দুই মেয়ের জনক। নাজমুল অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। বড় মেয়ে নাহিদা আক্তার পড়ে সপ্তম শ্রেণিতে। আর ছোট মেয়ে লামিয়ার বয়স সবে তিন।
নাজমুল বলে, ‘কিছু দিন আগে বাবাকে বলি, বাবা আমার তো কোন পাঞ্জাবি নাই, আমাকে পাঞ্জাবি কিন্না দেও। তহন বাবা আমাকে নিয়ে পছন্দ করে কাপড় কিনে পাঞ্জাবি (কাবুলি) বানাইয়া দিছে।
রবিবার বিকেলে বাবার সঙ্গে শেষবার দেখা এই কিশোরের। এরপর তিনি যান নদীতে।
নাজমুল বলে,
‘যদি জানতাম বাবা আর ফিরা আইবা না, তাইলে বাবাকে আমি একলা ছাড়তাম না। বাবাকে নদীতে যাইতে দিতাম না।’
আলমগীরের স্ত্রী নাজমা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী তো হাসিমুখ করেই বাইত্তনে বাইর অইছিল। আমারে কইয়া গেছিল রাইতের মইধ্যেই ফিরা আইব। এমনে তো আওনের কতা আছিল না হের। আমারে আর আমার সন্তানদের একলা থুইয়া হেয় কই চইল্লা গেছে। আল্লারে, আমার সন্তানদের অহন কী অইব?’ একই এলাকা থেকে সোমবার রাতে নিখোঁজ আরেক জেলে মনসুল আলী বেপারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এখন পর্যন্ত সদর উপজেলার চান্দ্রা এলাকার জেলে হানিফ মাল ও লক্ষ্মীপুর এলাকার জেলে জাকির হোসেন নিখোঁজ রয়েছেন।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by