রংপুর

চিলমারীতে নদ-নদী নাব্য হারিয়ে ধু-ধু বালুচর

  প্রতিনিধি ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ , ৭:৪৮:১০ প্রিন্ট সংস্করণ

জলুল হক, চিলমারী (কুড়িগ্রাম) :

ব্রহ্মপুত্রসহ বিভিন্ন নদ-নদী নাব্য হারিয়ে ধু-ধু বালুচরে পরিণত হয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে এ অঞ্চলে কৃষি জমিতে যে সেচ দেয়া হয় তা এখন প্রায় অকার্যকর হয়ে পড়েছে। প্রভাব পড়ছে কৃষি, মাছ, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ওপর। ফলে শতশত জেলে পরিবার খাদ্যাভাবে দুর্বিসহ জীবনযাপন করছে। দীর্ঘদিন ধরে খনন না করায় ভরাট হয়ে যাচ্ছে এক সময়ের প্রমত্ত ব্রহ্মপুত্র, তিস্তাসহ কয়েকটি নদ-নদী।

শুষ্ক মৌসুমে নদের পানি একেবারেই কমে যায়। এতে নদের দুই পাশের শত শত জমি অনাবাদি হয়ে থাকে। পানি শূন্য নদে মাছ ধরতে না পেরে জেলেরা পড়েছেন কষ্টে।

নদ, নদীর এ বৈরি আচরণে অনেক জেলে পরিবার তাদের বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে জীবন-জীবিকার তাগিদে চলে যাচ্ছেন অন্য পেশায়। আর প্রকৃতি হারাচ্ছে তার আপন সৌন্দর্য। এমনকি বিভিন্ন চরে নানা ধরনের সবজি আবাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে চর অঞ্চলের হাজার হাজার কৃষক। জানা গেছে, ভারতের আসাম রাজ্য হয়ে বাংলাদেশ অংশের কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী, উলিপুর হয়ে রৌমারী রাজিবপুর এলাকায় বিস্তৃত হয়েছে প্রায় ৭৫ কিলোমিটার ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ধরলা, সোনাভরি, হলহলিয়া, দুধকুমার, বুড়ি তিস্তসহ ১৬টি ছোট-বড় নদী। পানিশূন্য হয়ে ব্রহ্মপুত্রসহ প্রমত্তা এই নদীগুলোর অস্তিত্ব এখন বিলীন হতে চলেছে। এলাকার প্রধান ব্রহ্মপুত্র নদ ও তিস্তা নদী এরই মধ্যে শুকিয়ে গেছে। খর¯্রােতা ব্রহ্মপুত্র নদী নাব্য হারিয়ে সংকুচিত হয়ে অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়েছে, কোথাও হাঁটু পানির নদীতে পরিণত হয়েছে, শুকিয়ে যাওয়া নদীর বুকে জেগে উঠেছে ধু-ধু বালুচর।

ফলে বিভিন্ন নৌপথগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। নদীর ওপর নির্ভরশীল মাঝি মাল্লাসহ কর্মজীবী মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে। বন্ধ হয়েছে তাদের রুজি-রোজগার। ফকিরেরহাট কাঁচকোল এলাকার জেলে চন্দ্র দাস (৪৫) বলেন, ‘বাহে, এই নদীত সারা বছর মাছ ধরি ছাওয়া-পোওয়া নিয়ে সংসার খরচ চলাং। এই মৌসুমে নদীর পানি শুকিয়ে যায় ফলে খুব কষ্ট হয় সংসার চালাইতে।

ব্রহ্মপুত্র নদীপারের সোনারী পাড়ার লিপু, নুরআমিন, বড়চরের মাহফুজার, ইউছুফ জানান, নদী শুকিয়ে যাওয়ায় সেচ কাজে পানি সংকটসহ নদী পদ পরির্বতনসহ বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে আবার অন্যদিকে বর্ষা মৌসুমে ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে আর ভারতের সব বাঁধ খুলে দেয়ায় শুকনো নদীগুলো পানিতে ভরে দুই কূল ভাঙ্গতে থাকে, প্লাবিত হয় বিস্তীর্ণ আবাদি জমি ও এলাকা।

ফলে নদীপারের মানুষের দুর্ভোগ বৃদ্ধি পায়। ভেঙে যায় মানুষের সাজানো ঘরসংসার, জমিজিরাত ও ফসল। এ ভাঙনে শত শত মানুষ হয় গৃহহারা ও ভূমিহীন।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by