মোঃ আরাফাত রহমান: জাককানইবি:
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় (জাককানইবি) ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ নিষিদ্ধ থাকলেও দিন দিন তাদের উৎপাত বেড়েই চলেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়ায় প্রতিনিয়ত নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা ।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের আবাসিক এলাকা থেকে শুরু করে খেলার মাঠ সর্বত্রই বহিরাগতদের অবাধ চলাফেরা। এতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ইভটিজিং, মাদক সেবন, চুরিসহ নানা অপ্রীতিকর ঘটনা বেড়েই চলছে । শিক্ষার্থীরা রাতের বেলা এমনকি দিনেও বহিরাগতদের দ্বারা হামলার শিকার হচ্ছেন ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির নজরদারির অভাবে দিনরাত ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের আনাগোনা, অবস্থান লেগেই আছে । ক্যাম্পাসে বহিরাগতরা যে কোন সময়ে প্রবেশ করছে। দূর-দূরান্ত থেকে এসে ‘মানবিক আবেদন’ জানিয়েও প্রবেশ করছে অনেকেই । বহিরাগতদের অবাধ প্রবেশে বিভিন্ন পয়েন্টে সর্বদা লোকারণ্য হয়ে থাকে পরিবেশ। এছাড়াও ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে উচ্চ গতিতে বহিরাগতদের মোটরসাইকেল চালনা লক্ষ্য করা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে বহিরাগতদের এমন নিয়ন্ত্রনহীন চলাফেরায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ ও নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়ছে।
রাতের বেলা বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে মাদক নিয়ে । নিরিবিলি যায়গায় বসে মাদকের আসর । তাছাড়া বহিরাগত প্রেমিক যুগল এসে লিপ্ত হচ্ছে বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকান্ডে, যা শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট করছে বলে জানায় শিক্ষার্থীরা ।
হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের শিক্ষার্থী তারেক রহমান অভিযোগ করেন, ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে প্রতিদিন বিকেলে দলবেঁধে বহিরাগতরা এসে পুরো মাঠ দখল করে খেলাধুলা করে । শিক্ষাথীঁরা কিছু বলতে গেলে তারা ঝামেলা বাঁধায়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এ বিষয়ে অসংখ্যবার অবহিত করা হলেও তারা কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মানব সম্পদ ব্যাবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন বলেন , বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে এসে বিভিন্ন ধরনের সভা ও মিটিং করে এবং অনেক সময় ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের সাথে বিভিন্ন বিষয়ে ঝামেলা বাঁধিয়ে মারামারি পর্যন্ত করে। এতে ক্যাম্পাসের পরিবেশ নষ্ট হয় এবং শিক্ষার্থীরা ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ ও অবাধ কর্মকান্ড বন্ধে কি ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছেন ? -এমন প্রশ্নের জবাবে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. উজ্জল কুমার প্রধান বলেন , বিশেষ প্রয়োজন ব্যাতিত ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষেধ । ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ ও অবাধ চলাফেরা নিয়ন্ত্রনে জাককানইবি প্রক্টরিয়াল বডি সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে । প্রতিদিন রাতে দুজন করে সহকারী প্রক্টর এবং বাড়তি নিরাপত্তা প্রহরীদের টহলের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে । কোথাও বহিরাগতদের সন্দেহজনক অবস্থান লক্ষ করলে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যাবস্থা নিচ্ছি । পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে বহিরাগত মুক্ত এবং নিরাপদ রাখতে তিনি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা কামনা করেন ।