দেশজুড়ে

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি

  প্রতিনিধি ২৪ জুন ২০২০ , ৬:২৯:১১ প্রিন্ট সংস্করণ

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি

যশোর প্রতিনিধি : জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. হারুন অর রশীদকে উচ্চশিক্ষা ধ্বংসকারী ও এমপিওভুক্তির বিরোধিতাকারী ব্যক্তি আখ্যা দিয়ে তার পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফোরাম যশোর জেলা কমিটির সদস্যরা। এসময় চলতি প্রস্তাবিত বাজেটে অনার্স-মাস্টার্স শাখা এমপিও ভুক্তিকরণের দাবি জানান।

বুধবার দুপুরে প্রেসক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলন করে এসব দাবি জানানো হয়। দ্রুত দাবি না মানা হলে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার হুশিয়ারি দেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের আহ্বায়ক তরিকুল ইসলাম।

লিখিত বক্তব্য আরো বলা হয়েছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত বেসরকারি কলেজের অনার্স-মাস্টার্স কোর্সে শতভাগ বৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক। ১৯৯২ সালে জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে অদ্যাবধি সরকারি-বেসরকারি কলেজে নয় শতাধিক কলেজে অনার্স ও মাস্টার্স কোর্সে পাঠদান করা হচ্ছে।  যার মধ্যে সরকারি কলেজ ২৯৯ টি, সদ্য জাতীয়করণকৃত ৩০২ টি কলেজের অধিকাংশগুলোতে এবং বাকী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত বেসরকারি এমপিওভুক্ত কলেজগুলোতেও অনার্স-মাস্টার্স কোর্স চালু রয়েছে যেখানে পড়াশোনা করছে প্রায় ৪ লক্ষাধিক ছাত্র-ছাত্রী।

সদ্য জাতীয়করণকৃত কলেজ বাদে বর্তমানে যশোরে ২৫টি বেসরকারি এমপিওভুক্ত কলেজে অনার্স-মাস্টার্স কোর্স চালু আছে। সরকারি কলেজের বেশিরভাগ শিক্ষকগণই বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষা ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক, আর জাতীয়করণকৃত কলেজ এবং বেসরকারি কলেজের অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকগণের সবাই নিয়োগ বোর্ডের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক। বেসরকারি এমপিওভুক্ত কলেজগুলোতে অনার্স-মাস্টার্স কোর্সে পাঠদানকারি এসকল শিক্ষকগণ জনবলকাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত না।

নিয়মানুযায়ী, জনবলকাঠামোতে অন্তর্ভূক্ত নয় বা প্যাটার্ণ বহির্ভূত শিক্ষকদের শতভাগ বেতন ও ভাতা প্রদান করবেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু দুঃখের বিষয়, শিক্ষকদের সম্মানির কথা বলে পাঠদানরত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কলেজভেদে, অন্যান্য খরচবাদে মাসিক ৩০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা নিলেও কলেজ কর্তৃপক্ষ কখনই এ সকল শিক্ষকদের সাথে সুবিচার করেননি।

যশোরের ক্ষেত্রে, কলেজভেদে এসকল শিক্ষকদের সম্মানি সর্বনি¤œ ২০০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১৪০০০ টাকা দেওয়া হয়। অনেক কলেজ দীর্ঘদিন বেতন দেন না, অনেক কলেজ নানাভাবে ফান্ড শূণ্য দেখিয়ে বেতন বন্ধ করে দেন, বেতনের দাবি করলে চাকুরীচ্যুত করার হুমকিও দেন। আবার অনেক কলেজ কর্তৃপক্ষ অনার্স-মাস্টার্স কোর্স খোলা হয়ে গেলে এসকল শিক্ষকদের সাথে দুর্ব্যবহার করে তাড়িয়ে দেন। যশোরসহ সারাদেশের অবস্থা একই, যা করোনা প্রাদুর্ভাবে আরও প্রকট হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। আমরা শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা উপমন্ত্রী ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি, ডিসির মাধ্যমে স্মারকলিপি দিয়েছি এবং তাদের সঙ্গে বৈঠক করে যখন সবকিছু গুছিয়ে আনি, তখনই ভিসির বিরোধিতায় সব ভেস্তে যায়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির কারণে তিনি অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি করার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

তার মূল লক্ষ্য হলো উচ্চশিক্ষা নিয়ে বাণিজ্য করা। টাকার বিনিময়ে তিনি অযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনার্স-মাস্টার্স কোর্স চালু করার অনুমোদন দিচ্ছেন। যিনি শিক্ষকদের রুটি-রুজির বিপক্ষে অবস্থান নেন তিনি শিক্ষাবান্ধব উপাচার্য হতে পারেন না। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মত একটি বৃহৎ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাবান্ধব উপাচার্য প্রয়োজন। তাহলেই কলেজগুলো গতি ফিরে পাবে। সেকারণে সংবাদ সম্মেলনে দ্রুত উপাচার্য প্রফেসর ড.হারুন অর রশিদের পদত্যাগের দাবি করে প্রস্তাবিত বাজেটে তাদের এমপিওভুক্ত করার দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফোরাম যশোর জেলা কমিটির উপস্থিত ছিলেন, সদস্য শরিফুল ইসলাম, কামরুল ইনাম আহম্মেদ, ইকবাল হোসেন, প্রভাষক শরিফুল, বিপ্লব কুন্ডু, আব্দুল কুদ্দুস প্রমুখ।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by