রংপুর

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়ায় আদিবাসীদের কমিউনিটি সেন্টার : নানা সমস্যায় জর্জরিত

  প্রতিনিধি ২৪ অক্টোবর ২০২০ , ২:৫২:০৩ প্রিন্ট সংস্করণ

মো. আসাদুজ্জামান শামিম, ঠাকুরগাঁও :

সদর উপজেলার বড় বালিয়া মোলানী জলপাইতলা কমিউনিটি সেন্টারটি বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত। বছরে ২ দিন বিশেষ অনুষ্ঠান ব্যাতিত সেখানে আর জনসমাগম হয় না বললেই চলে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় করোনা ভাইরাসের কারনে আপাতত বন্ধ রয়েছে। সেন্টারটি পরিচাললিত হয় বেসরকারী কোম্পানী কাজী ফার্মস লিমিটেডের তত্ত্বাবধানে। ওই এলাকার আদিবাসীদের বিয়ে হলে এটা ভাড়া দেওয়া হয়। এছাড়াও আদিবাসী নারীদের সেলাই প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয় সেন্টারটি থেকে।

বড় বালিয়া আদিবাসি কল্যাণ সমিতি নামে সেন্টারটি কাজী ফার্মস লিমিটেড বাংলা সন ১৪১১ সালে প্রতিষ্ঠা করে। সেন্টারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মকসুদুল হাকিম চৌধুরী।

পরবর্তিতে সেখানে একটি টেলিভশন প্রদান করা হলেও বর্তমানে তা নষ্ট হয়ে পরে রয়েছে। এছাড়াও নারীদের সেলাই প্রশিক্ষণের জন্য ১২টি মেশিন থাকলেও বেশিরভাগ মেশিন নষ্ট এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক টেবিল না থাকায় সেলাই শিখতে সমস্যা হয়। এ বাদে অন্যান্য কোন খেলাধুলার সরঞ্জাম বা বিনোদনের ব্যবস্থা নেই সেন্টারে। তাই এলাকাবাসীর সেন্টারটি আধুনিক করে বিভিন্ন জরুরী সরঞ্জামাদি প্রদানের ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন।

স্থানীয়রা জানায়, এক সময় এই সেন্টারটি জাকজমকপুর্ন ছিল। প্রতি বছর ৩০ শে জুন পাশ্ববর্তী স্থানে মেলা লাগলে কিছু মেহমান এখানে থাকেন। তাছাড়া এটি জমে না। গত ১৮ সেপ্টেম্বর পাশ্ববর্তী পাঁচপীরডাঙ্গা গ্রামে ওরাঁওদের কারাম উৎসব পালিত হয়। পরিবারের সুখ-শান্তির জন্য ও নিজেদের সুস্থতায় কারাম নামের একটি বিশেষ বৃক্ষের বন্দনার মধ্য দিয়ে ওরাঁও সম্প্রদায়ের লোকজন এই উৎসব পালন করে। জাতীয় আদিবাসী পরিষদ ও ঠাকুরগাঁও কারাম পূজা উদযাপন কমিটির আয়োজনে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। উৎসবের সময় কিছু গেস্ট এখানে ওঠেন।

কমিউনিটি সেন্টারটি পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সাফা কিসটু জানান, সেন্টারটিতে কাজী ফার্মস এর পঞ্চগড় এরিয়া অফিস থেকে বেশ কয়েকটি সেলাই মেশিন প্রদান করা হয়েছে। বর্তমানে ১২ জন প্রশিক্ষণার্থী রয়েছেন। তারা এখানে বিভিন্ন ধরনের সেলাই শিখছেন। তবে বেশিরভাগ সেলাই মেশিন নষ্ট ও টেবিল না থাকায় এবং করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারনে আপাতত প্রশিক্ষণ বন্ধ রয়েছে।

আশ পাশে ৯০টি পরিবার আছে এতে প্রায় ৫শ মানুষ রয়েছেন। তবে প্রতি বছর ডিসেম্বরে আদিবাসীদের অংশগ্রহনে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয় বলে জানান তিনি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য রবিউল ইসলাম জানান, প্রয়োজনমত চেয়ার, টেবিল, বসার সিট কিছুই নেই। মেঝেতে বসে কোনমতে কাজ করা হচ্ছে। সেলাই মেশিনগুলি বেশিরভাগ নষ্ট হয়ে পরে রয়েছে। একটি টিভি ছিল সেটিও নষ্ট হয়ে পরে রয়েছে। বর্তমানে একজন নৈশ্য প্রহরী রয়েছেন তাকে কাজী ফার্মস বেতন দেন। সোলার দিয়ে কোন মতে ১/২টি বিদ্যুতের লাইট জ্বলে। বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়নি। গøাসগুলো ভেঙ্গে গেছে। খেলাধুলা ও বিনোদনের কোন উপকরণ নেই।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নূরে আলম মুক্তি বলেন, কেভিড পরিস্থিতি মোকাবেলায় আপাতত সেন্টারটি বন্ধ রয়েছে। সেলাই মেশিন, টিভি, টেবিল, চেয়ার, খেলাধুলার সরঞ্জাম সহ অন্যান্য সমস্যার ব্যাপারে পারিচালনাকারী কর্তৃপক্ষ কাজী ফার্মসকে জানানো হয়েছে। আশা করি তারা দ্রæত সমস্যাগুলো সমাধান করে সেন্টারটিকে পুনরায় জাকজমকপুর্ন অবস্থায় নিয়ে আসবেন।

 

আরও খবর

Sponsered content

Powered by