চট্টগ্রাম

পরকিয়া প্রেমিকসহ স্ত্রীকে হত্যায় যুবকের আমৃত্যু ও তহসিলদার হত্যায় দুই ব্যাক্তির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

  প্রতিনিধি ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ৭:২৭:৩৯ প্রিন্ট সংস্করণ

লক্ষীপুর প্রতিনিধি:

লক্ষীপুরের রামগতিতে পরকিয়া প্রেমিক ইউসুফসহ স্ত্রী রিনা বেগমকে হত্যার দায়ে ইব্রাহিম খলিল (৪০) নামে এক যুবককে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তার ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
অপরদিকে, একই উপজেলায় মোশাররফ হোসেন নামে এক তহসিলদারকে কুপিয়ে হত্যার ২৫ বছর পর হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুই আসামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছে আদালত।
বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম পৃথক এ দুই মামলার রায় দেন।

আদালত ও এজাহার সূত্র জানায়, রামগতির চরলক্ষী গ্রামের ইব্রাহিমের স্ত্রী রিনার সঙ্গে ইউসুফের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ২০১৭ সালের ৩ জুন সন্ধ্যায় ফেনী থেকে ইব্রাহিম বাড়িতে এসে রিনা ও ইউসুফকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ইব্রাহিম দু’জনকেই ঘরে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। ইউছুফের পেটে আঘাত করায় নাড়িভুড়ি বের হয়ে যায়। এতে খবর পেয়ে বাদী তছলিমা বেগম ঘটনাস্থল থেকে ইউছুফকে উদ্ধার করে চিকিৎসকের কাছে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় ইউছুফকে হত্যার ঘটনায় তছলিমা বেগম বাদি হয়ে রামগতি থানায় মামলা দায়ের করা হয়। এছাড়া আহত অবস্থায় স্ত্রী রিনাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৬ জুন চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে রিনা মারা যান। পরে নোয়াখালীর সুধারাম থানায় নিহতের মা জানু বেগম আরও জিডি করেন। পরে ১১ জুন হত্যা দুটি একই ঘটনাটি হওয়ায় মামলাটি রামগতি থানার মামলার সঙ্গে সংযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়৷ একই বছরের ১২ নভেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও রামগতি থানা পুলিশ আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেন। রায়ের সময় আসামী আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।

অপরদিকে, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে রামগতির চর সেকান্দর গ্রামের বাসিন্দা মৃত দ্বারা বক্স মাঝির দুই ছেলে আবদুল গোফরান ও মোশাররফ হোসেন তহসিলদারের সাথে বিরোধ দেখা দেয়। এর সূত্র ধরে ১৯৯৮ সালের ১৭ জুলাই সকালের দিকে আবদুল গোফরান ও তার ছেলে মো. ইদ্রিস ওরফে কালাসহ তার অন্য ছেলেরা মিলে মোশাররফ তহসিলদারকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। তাকে উদ্ধার করে জেলা শহরের আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করে। এ ঘটনায় ওইদিন মোশাররফ তহসিলদারের ছেলে আবুল হাসান চৌধুরী ওরফে রাশেদুল আলম বাদি হয়ে ১২ জনের বিরুদ্ধে রামগতি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ১৯৯৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর আদালতে এ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেন সে সময়ের রামগতি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সালাহ উদ্দিন আল মাহমুদ। এতে মামলার ১ নম্বর আসামী মো. ইদ্রিস ওরফে কালাকে প্রধান অভিযুক্ত ৬ জনের নামে অভিযোগপত্র দেন তিনি।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, রামগতি চর সেকান্দর গ্রামের আবদুল গোফরানের ছেলে মো. ইদ্রিস ওরফে কালা ও এবাদ উল্যার ছেলে মো. চৌধুরী বকত। রায়ে ওই মামালর ৭ আসামীকে খালাস দেওয়া হয়। রায়ের পর আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত আসামীদের স্বজনেরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়।

লক্ষীপুর জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by