ময়মনসিংহ

বকশীগঞ্জ সাব রেজিস্ট্রারের ওপর হামলা চেষ্টা,থানায় অভিযোগ

  ম‌তিন রহমান ২৮ মার্চ ২০২৪ , ৭:০৯:২২ প্রিন্ট সংস্করণ

বকশীগঞ্জ সাব রেজিস্ট্রারের ওপর হামলা চেষ্টা,থানায় অভিযোগ

জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার সাব রেজিস্ট্রি কার্যালয়ে নিজ এজলাসে হামলা চেষ্টার শিকার হন সাব রেজিস্ট্রার আব্দুর রহমান মোহাম্মদ তা‌মিম। এসময় হামলাকারীরা এজলা‌সে থাকা দ‌লিল, দ‌লি‌লের অবকল নকল, ৫২ ধারার র‌শিদসহ দাপ্ত‌রিক কাগজ পত্র ছি‌ড়ে ফে‌লেন।

এ ঘটনায় সাব রে‌জিস্ট্রার আব্দুর রহমান মোহাম্মদ বাদী হ‌য়ে বকশীগঞ্জ থানায় ৭ জন নামীয় ও ১০ থে‌কে ১৫ জন‌কে অজ্ঞাতনামা এক‌টি অ‌ভি‌যোগ দায়ের ক‌রে‌ছেন। বুধবার (২৭ মার্চ) বিকেলে ৩টায় অফিস চলাকালীন সময়ে সাব রেজিস্ট্রার আব্দুর রহমান মোহাম্মদ তা‌মিমের ওপর হামলা চেষ্টা ও দ‌লিল পত্র তছরু‌পের ঘটনাটি ঘটে। রাতে এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন বকশীগঞ্জ সাব রেজিস্ট্রার আব্দুর রহমান মোহাম্মদ তা‌মিম।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,বকশীগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রার আব্দুর রহমান মোহাম্মদ তামিম এজলাসে দলিল রেজিস্ট্রি সময় দেওয়াগঞ্জের সাপমারী কলেজ পাড়ার মো. ইদ্রিস আলীর স্ত্রী রেহেনা বেগম (৪৬) দাতা হিসাবে দলিল লেখক মো. শহীদুল্লাহ কর্তৃক একটি হেবা ঘোষণার দলিল এজলাসে উপস্থাপন করেন। দাতার শুনানিকালে দাতা স্বীকার করেন যে, সমুদয় টাকা বুঝিয়া পেয়েছে এখন বকশীগঞ্জ চরকাউরিয়া চন্দেরবন তিনানীপাড়া মো. আলমগীর হোসেনের স্ত্রী তার বোন রুবিনা আক্তার (৪৫) কে দান করবেন।

এসময় সাব রেজিস্ট্রার বলেন টাকা বুঝিয়া পাইলে সেটা দান পত্র হয় না, সাব কবলা করতে হয়। দলিল হেবা করিলে সরকার রাজস্ব পায় মাত্র ২,০১০/- টাকা। অপরদিকে সাব কবলা করলে সরকার রাজস্ব পায় প্রায় চার লক্ষ টাকার উপরে। একই দলিল খন্দকার মোহাম্মদ আলী হাসান (৬০), আমার এজলাসে দাখিল করেন। আমি আবার দলিল দাতার শুনানি করলে আগের মতই টাকা বুঝিয়া পেয়েছেন মর্মে স্বীকার করেন। এসময় তিনি দলিল টা করার জন্য জোরাজুরি করেন।

সাব রেজিস্ট্রার তাহাকে বুঝায় যে, সরকার আপনাকে লাইসেন্স প্রদান করেছেন সরকারি রাজস্ব আদায়ের সাহায্য করার জন্য আপনি কেন সরকারের রাজস্বের ক্ষতি করতে চাচ্ছেন। একথা বলার পর এজলাসের সামনে সেবা গ্রহীতাদের উপস্থিতি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। পরবর্তীতে অসৎ আচরণের জন্য সতর্ক করে অর্ডার বুকে লিখেন। এসময় ক্ষীপ্ত হয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন তিনি।

পরে সকল বিবাদী সহ অন্যান্য অজ্ঞাতনামা ১০/১৫ জন নিয়া আক্রমণ করার জন্য এজলাসে প্রবেশ করেন।পরিস্থিতি বুঝিতে পারিয়া সাব রেজিস্ট্রার খাস কামরায় চলিয়া যায়। বিবাদীগণ সাব রেজিস্ট্রারকে না পাইয়া এজলাসে থাকা দলিল, দলিলের অবিকল নকল, ৫২ ধারা রশিদ সহ অন্যান্য দাপ্তরিক কাগজ পত্র ছিড়ে ফেলেন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে করতে খাস কামরার দরজায় লাথি দিয়ে দরজা ভাঙার চেষ্টা করেন। অবরুদ্ধ হয়ে বিবাদীদের ভয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বকশীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জকে ফোনে পরিস্থিতি জানাইলে বকশীগঞ্জ থানা পুলিশ আসিয়া সাব রেজিস্ট্রারকে উদ্ধার করেন।

সাব-রেজিস্ট্রার আব্দুর রহমান মোহাম্মদ তামিম বলেন, আমি বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ থাকাকালীন সময়ে আমাকে সাংবাদিকরা জানান যে, আমার অফিসে ০৩টি বালাম কাটা ছিঁড়া ও ঘসা মাজা হয়েছে। আমি প্রশিক্ষণ শেষে যোগদানের পরে মাননীয় জেলা রেজিস্ট্রার জামালপুর আমাকে উক্ত ঘটনার প্রতিবেদন দিতে বলেন।

প্রতিবেদনে অভিযোগকারী কর্তৃক কিছু দলিল লেখকের টাকা লেনদেনের বিষয়ে অবহিত করে দলিল লেখক সমিতির সভাপতি ফিরোজ সরকারের নাম চলে আসলে তিনি সহ অন্য বিবাদীরা ক্ষোভের বর্হি প্রকাশ হিসাবে এই ঘটনাকে আরো ধ্বংসাত্মক করে তুলেন।

এ ব্যাপারে বকশীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল আহাদ খাঁন জানান, অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত কাজ চলছে,আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by