দেশজুড়ে

বগুড়ায় বিএনপি-আওয়ামী লীগ সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত ৩৫

  প্রতিনিধি ১৫ নভেম্বর ২০২৩ , ৫:০৪:২৪ প্রিন্ট সংস্করণ

বগুড়ায় বিএনপি-আওয়ামী লীগ সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত ৩৫

বগুড়ার শেরপুরে অবরোধের পক্ষে-বিপক্ষে মিছিল করা নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় পুলিশের ওসিসহ দুই দলের অন্তত ৩৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত ৪ জনকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর পঞ্চম দফা অবরোধের প্রথমদিন দিন বুধবার বেলা ১২টার দিকে শহরের হাসপাতাল রোডের খেজুরতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন- শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবু কুমার সাহা, উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাসান আলী, কনস্টেবল মো. শামীম হাসান, মো. রেজাউল করিম ও আফজাল হোসেন। এ ছাড়া আহত বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে চলে যাওয়ায় তাদের পরিচয় জানা যায়নি।

সংঘর্ষের পর এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবির সদস্যরা শহরে টহল দিচ্ছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অবরোধের সমর্থনে উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে শহরের স্থানীয় বাসস্ট্যান্ডস্থ দলীয় কার্যালয় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের ধুনট মোড় এলাকার দিকে যাচ্ছিল। একই সময় বাসস্ট্যান্ডস্থ দলীয় কার্যালয় থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে একটি শান্তি মিছিল বের হয়। মিছিলটি বিএনপির পেছন পেছন যাচ্ছিল। একপর্যায়ে শহরের খেজুরতলা এলাকায় পৌঁছালে অবরোধের পক্ষে-বিপক্ষে স্লোগান দেওয়া নিয়ে দুই দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। পরে উভয়পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে পাল্টাপাল্টি স্লোগান দিতে শুরু করে। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। দুই দলের সংঘর্ষে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

পরবর্তীতে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দুই পক্ষের সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে শেরপুর থানার ওসিসহ ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

শেরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদের অভিযোগ, তাদের শান্তি মিছিলে বিএনপির নেতাকর্মীরা অতর্কিতে হামলা চালিয়েছে। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপসহ হাতবোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন। এতে তিনিসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের অন্তত ১১ নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, অবরোধের সমর্থনে আমরা একটি শান্তিপূর্ণ মিছিল করি। মিছিলটি কয়েকশ গজ না যেতেই কোনোপ্রকার উসকানি ছাড়াই আওয়ামী লীগের শান্তি মিছিল থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়া হয়।

তার অভিযোগ, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে বিএনপির শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলা চালায়। এ সময় বিএনপির এক কর্মীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও ভাঙচুর করা হয়। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হামলায় বিএনপিসহ সহযোগী সংগঠনের অন্তত ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলেও দাবি করেন তিনি।

শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবু কুমার সাহা বলেন, বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ বাঁধলে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুঁড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। এ সময় তিনিসহ পুলিশের ৫ সদস্য আহত হন।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ ঘটনায় কোনো পক্ষ এখনও লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by