দেশজুড়ে

বড়াইগ্রামে প্রধান শিক্ষকের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

  প্রতিনিধি ২৩ এপ্রিল ২০২৪ , ৩:৫৬:০৫ প্রিন্ট সংস্করণ

বড়াইগ্রামে প্রধান শিক্ষকের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

নাটোরের বড়াইগ্রামের রামেশ্বরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সরোয়ার হোসেন ওরফে পিঞ্জু মাস্টারের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপকর্মের অভিযোগ তুলেছে ভুক্তভোগীসহ এলাকাবাসী। থানায় তার বিরুদ্ধে ১০টিরও বেশি পৃথক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু পুলিশ রহস্যজনক কারণে তার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় ভুক্তভোগী সহ এলাকাবাসী সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন করেছে।

মঙ্গলবার দুপুরে রামেশ্বরপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সংবাদ সম্মেলন ও এর আগে গত বুধবার বিকেলে একই স্থানে মানববন্ধন করে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ ও যথাযথ বিচার দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা ও এলাকাবাসী। সংবাদ সম্মেলনে রামেশ্বরপুর গ্রামের জামাত হোসেন বলেন, আমার পিতা শমসের সরদার জীবিত থাকাকালীন ১৯৯৬ সালে বিদ্যালয়ের নামে ২৫ শতাংশ জমি দান করেন। এই দানের শর্ত ছিল আমার পিতাকে নাইট গার্ডের চাকরি দিবেন। কিন্তু সুচতুর প্রধান শিক্ষক সরোয়ার হোসেন পিঞ্জু রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে কৌশলে তার নিজ নামে ১২ শতাংশ ও বিদ্যালয়ের নামে ১৩ শতাংশ জমি লিখে নেয়। এরপরেও আমার পিতাকে চাকরি দেননি।

একই গ্রামের রিক্তা খাতুন বলেন, ২০১৬ সালে আয়া পদে চাকরি দেওয়ার কথা বলে আমার স্বামী হেলাল হোসেনের কাছ ৮ লক্ষ টাকা নেয় ওই প্রধান শিক্ষক। কিন্তু অদ্যাবধি চাকরিও দেয়নি এবং টাকা ফেরতও দেয়নি। কাউছার হোসেনের চাচা দুলাল হোসেন জানান, ১০ কাঠা তিন ফসলি জমি বিক্রি করে এবং সুদে আরও ৩ লক্ষ টাকা এনে মোট ৭ লক্ষ টাকা পিঞ্জু মাস্টারকে দেওয়া হয় ভাতিজা কাউছারকে পিয়ন পদে চাকরি দেওয়ার জন্য। দীর্ঘ বছর চলে গেলেও চাকরিও দেননি এবং টাকাও ফেরত দেননি।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্য ভুক্তভোগীরা জানায়, পিঞ্জু মাস্টারকে টাকা দিতে কেউ কেউ স্বর্ণালংকার বিক্রি করেছে। জমি বিক্রি করেছে। সুদে টাকা নিয়েছে। এখন তারা সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে।সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা থানায় দায়েরকৃত ১০টির অধিক অভিযোগপত্র দেখায়।

এতে জানা যায়, বিদ্যালয়ের ২ শতক জমি বিক্রি করার কথা বলে চন্ডিপুরের শাহাদৎ মোল্লার কাছ থেকে ৫৫ হাজার টাকা, মুরগির ফার্মে মুরগির বাচ্চা তুলবে বলে জোনাইলের রবিন হোসেনের কাছ থেকে ঋণ হিসেবে ১ লক্ষ টাকা, অন্য একটি বিদ্যালয়ে চাকরি দেওয়ার কথা বলে দাড়িকুশি গ্রামের রুস্তম মোল্লার কাছ থেকে দেড় লক্ষ টাকা, রয়না ভরাট গ্রামের ইলিয়াস পারভেজের কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আগে ইউপি সদস্য হিসেবে বিজয়ী ফলাফল এনে দিবে বলে চন্ডিপুর গ্রামের নজরুল ইসলামের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা, পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর হিসেবে চাকরি দেওয়ার কথা বলে চৌমুহান গ্রামের শহিদুল ইসলামের কাছ থেকে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, শিক্ষক পদে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে বোর্ণী গ্রামের প্রভাত কুমারের কাছ থেকে ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা আদায় করে।

এছাড়া সরোয়ার হোসেন পিঞ্জু’র বিরুদ্ধে বাজিতপুর এলাকায় খাল খনন কর্মসূচির ৭ লক্ষ ২৯ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ থানায় লিখিতভাবে জমা দিয়েছে তার পার্টনার মোস্তাফিজুর রহমান। এ ব্যাপারে মুঠোফোনে প্রধান শিক্ষক সরোয়ার হোসেন পিঞ্জুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ভিত্তিহীন।

টাকা-পয়সা লেনদেন যা হয়েছে তা কয়েকজনের সাথে বসে মীমাংসা করা হয়েছে এবং অবশিষ্টদের সাথে খুব শীঘ্রই বসে মীমাংসা করা হবে। বড়াইগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ শফিউল আযম খাঁন জানান, সরোয়ার হোসেন পিঞ্জুর বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by