চট্টগ্রাম

মতলব উত্তরে শুরু হচ্ছে সোলেমান লেংটার ৭ দিনব্যাপী মেলা

  প্রতিনিধি ৩১ মার্চ ২০২২ , ৬:৫২:০০ প্রিন্ট সংস্করণ

সম্রাট সিকদার, মতলব প্রতিনিধি:

চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার বদরপুর (বেলতলী) গ্রামে ঐতিহ্যবাহী শাহ্ সূফি সোলেমান লেংটার মাজারে ৭ দিনব্যাপী মেলা শুরু হচ্ছে ৩১ মার্চ বৃহস্পতিবার। মেলায় প্রতিদিন লক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটে এবং বিগত বছরগুলোতে এই মেলা যেন মাদকের স্বর্গরাজ্য এমন দৃশ্য দেখা গেছে।

সোলেমান লেংটা উপমহাদেশের একজন খ্যাতিমান আউলিয়ার দাবিদার। বাংলা ১২৩০ সালে কুমিল্লা জেলার মেঘনা উপজেলার গোবিনাদপুর ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামে এক দরিদ্র পরিবারে শাহ্ সূফী সোলেমান লেংটা জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম আলা বঙ্গ ভূঁইয়া। জীবনের অধিকাংশ সময়ই কাটিয়েছেন মতলবের বিভিন্ন অঞ্চলে। সোলেমান লেংটা কখনও তেমন পোশাক পরিধান করতেন না। তাই তার মাজারটি লেংটার মাজার হিসেবেই পরিচিত।

সোলেমান লেংটার বোনের বাড়ি মতলব উত্তরে সাদুল্যাপুর ইউনিয়নের বদরপুরে মাজারটি অবস্থিত। ১৩২৫ বাংলা সনের ১৭ চৈত্র শাহ্ সূফী সোলেমান লেংটা তার বোনের বাড়ি বদরপুর গ্রামে মৃত্যুবরণ করলে সেখানে কবর দিয়ে মাজার স্থাপন করা হয়। প্রতিবছর চৈত্র মাসের ১৭ তারিখে তার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ৭ দিনব্যাপী ওরস অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে এবং মেলা বসে। ওরস শুরু হওয়ার কয়েক দিন আগে ও পর পর্যন্ত মেলা স্থায়ী হয়। এ ছাড়া প্রতিবছর ভাদ্র মাসে ও সপ্তাহের বৃহস্পতিবার মাজারে ভক্তদের আগমন ঘটে। চৈত্র মাসের ১৭ তারিখের মেলায় দেশের বিভিন্ন স্থানসহ পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে প্রতিদিন লক্ষাধিক ভক্ত, আশেকান ও সাধারণ জনগণ আসা-যাওয়া করেন। ওরসকে কেন্দ্র করে কয়েক কিলোমিটারজুড়ে মেলায় বসেছে রকমারি দোকান ও বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ভক্তদের আস্তানা। মেলায় বিভিন্ন প্রকার পণ্য বিক্রয় ও ক্রয় হয়। অনেকে আবার মাদক ও অশ্লীলতার মাঝে নিজেকে ডুবিয়ে রাখে। ছোটখাটো অসংখ্য আসর বসে যার বেশির ভাগ স্থানেই নারী পুরুষ অশ্লীল নৃত্যে মগ্ন থাকে।

মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদ মসজিদের খতিব মাওলানা এনামূল হক জানান, কোন ওরসেই অশ্লীলতার কোন সুযোগ নেই। কিন্তু বদরপুর সোলেমান লেংটার মাজারে ওরসের সময় মাজারের আশপাশে যে অশ্লীলতা হয় তা ইসলাম সমর্থন করে না।

৭ দিনের এ মেলায় আগত দোকান থেকে অনুপাতে ৫ থেকে ১০/২০ হাজার টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়। মাজারে মানতে দেয়া হচ্ছে- গরু, ছাগল, নগদ অর্থ, আগরবাতি ও মোমবাতি। মাজারে প্রতিদিন উঠছে কয়েক লাখ টাকা। সব মিলে এখানে বাণিজ্য হচ্ছে কয়েক কোটি টাকা। এ টাকার কোনো রাজস্ব পাচ্ছে না সরকার। এ টাকায় অনেকেই আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছে। সারা বছর এ মাজারটি অর্থ পাওয়ার সেক্টরে পরিণত হয়েছে।

এ বিষয়ে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সদস্যরা বলেন, অতীতে কী হয়েছে তা নিয়ে ভাবার সময় নেই। এখনকার বিষয় হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে আমরা সর্বদা প্রস্তুত রয়েছি।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by