রাজশাহী

রাণীনগরে গত চার দিনেও ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ ৭৮ পরিবারের পাশে দাঁড়ায়নি কেউ

  প্রতিনিধি ২৩ মে ২০২২ , ৯:২৪:১৬ প্রিন্ট সংস্করণ

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি : নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার পারইল ইউনিয়নের তিনটি গ্রামে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ ৭৮ পরিবারের পাশে এখনো দাঁড়ায়নি কেউ। স্থানীয়া বলছেন, গত চার দিন অতিবাহিত হলেও আর্থিক সহায়তা তো দূরের কথা সান্তনা দেয়ার মতো সরেজমিন এসে খোঁজও নেয়নি কোন রাজনৈতিক নেতা-কর্মি বা স্থানীয় প্রসাশনের কোন কর্মকর্তারা। ফলে হাতাশাগ্রস্থ হয়ে পরেছেন পরিবারের সদস্যরা। সোমবার দুপুরে হারাইল গ্রামে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, কেউ বাঁশ কাটছেন আবার কেউ ঘরের চালের উপরে ওঠে ছাউনি ঠিক করছেন। আবার অনেকেই অর্থাভাবে এখনো খোলা আকাশের নিচে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আছেন।

আবার কেউ তীব্র রোদের মধ্যে ভাত রান্না করছেন। হারাইল গ্রামের ভারত চন্দ্র জানান, ঝড়ের সময় বাড়িতে ছিলাম না। তার স্ত্রী আতশি রাণী সাত মাসের শিশু সন্তানসহ মায়ের সাথে ছিলেন। হঠাৎ ঝড়ে গাছ ভেঙে পরে বাড়ির উপর। এতে তার পুরো বাড়ি ভেঙে পরে। রাত থেকেই প্রতিবেশি হারান চন্দ্রের বাড়িতে বসবাস করছেন। টাকা যোগার করতে না পারার কারনে বাড়ি করতে পারছেন না। ওই গ্রামের প্রসান্ত কুমার জানান, টাকা পয়সা যোগার করতে দেরি হয়ে গেল তাই কোন রকমে বাড়ি মেরামত করছেন। বিধবা রাধারাণী বলেন, ঝড়ে সব উড়ে গেছে। টাকা পয়সা নেই মেরামত করতে পারছি না। তাই খোলা আকাশের নিচে তীব্র রোদের মধ্যেই ভাত রান্না করছেন।

পরেশ চন্দ্র বলেন, গ্রামে বসবাসরত আমরা সবাই হিন্দু পরিবার। এর মধ্যে প্রায় ৪৫টি বাড়ি লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। অনেকের বাড়ির তালার উপর থেকে ধান পর্যন্ত বাতাসে উড়ে গেছে। আমাদের আর্থিক সহায়তা দেয়া তো দূরের কথা স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বার এবং থানার ওসি মো. শাহিন আকন্দ ছাড়া সান্তনা দেয়ার মতো সরকারী কোন লোকজন আসেনি। তিনি বলেন, গ্রামের প্রায় সবাই গরীব এবং অস্বচ্ছল পরিবার। প্রতিটি জিনিস পত্রের দাম লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই বাড়ি মেরামত করার মতো সবার সামর্থ নেই। অর্থাভাবে একনো অনেকেই বাড়ী মেরামত করতে পরেনি। তাই জরুরী ভিত্তিতে সরকারী সহায়তা কামনা করেছেন।

স্থানীয় ইউপি মেম্বার মিজানুর রহমান বলেন, ওই তিনটি গ্রামে ঝরে প্রায় ৭৮টি বাড়ী লন্ড ভন্ড হয়ে গেছে। রোববার দিন এক থানার ওসি ছাড়া আর কেউ দেখতে আসেনি। আমরা ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা করে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দিয়েছি। রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেইন বলেন, ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা হাতে পেয়েছি, বরাদ্দ আসলেই পৌঁছে দেয়া হবে। এছাড়া বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে যেতে পারিনি। তবে আজকালের মধ্যেই সরেজমিন যাবো বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাত অনুমান সোয়া আটটায় প্রচন্ড ঝরে উপজেলার পারইল ইউনিয়নের হারাইল, সংকরপুর ও কামতা গ্রামের প্রায় ৭৮টি বাড়িঘর লন্ডভন্ড হয়ে যায়। এর মধ্যে শুধু হারাইল গ্রামেই ৪৫টি বাড়ি লন্ডভন্ড হয়ে যায়। ফলে ঘরের ছাউনি উরে যাওয়ায় ওই রাত থেকেই বৃষ্টির মধ্যে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করেন।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by