রাজশাহী

রাণীনগরে পুকুরে বিলীন হচ্ছে গ্রামীণ রাস্তা

  প্রতিনিধি ৩০ মার্চ ২০২১ , ৮:০৭:৩৫ প্রিন্ট সংস্করণ

মো. ওহেদুল ইসলাম মিলন, রাণীনগর (নওগাঁ) :

 

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার গ্রামীণ জনপদের বিভিন্ন পাকা রাস্তাগুলো ভেঙে একের পর এক পুকুরে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। উপজেলাজুড়ে ১৫৯টি রাস্তার প্রায় ২৫৯টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

 

সংশ্লিষ্টদের অবহেলায় এবং নজরদারীর অভাবে প্রতি বছর এসব রাস্তার ভাঙন রোধে সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় হচ্ছে। আসন্ন বর্ষা মৌসুমের আগেই সংস্কার করা না হলে বেশ কয়েকটি রাস্তা ধসে চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশংকা করছেন এলকাবাসি।

রাণীনগর উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার আটটি ইউনিয়নে গ্রামীণ যোগাযোগ ও চলাচলের জন্য প্রায় ১৫৯টি রাস্তা মিলে মোট ৩৯০ কিলোমিটার রাস্তা রয়েছে। এর মধ্যে পাকা রাস্তা ১৯২ কিলোমিটার, এইচ বিবি সোলিং ৯২ কিলোমিটার, সিসি রাস্তা রয়েছে ১ কিলোমিটার এবং এখনো কাঁচা রাস্তা রয়েছে ১০৫ কিলোমিটার।

 

এলাকাবাসী বলছেন,

এসব রাস্তা ঘেষে পুকুর খনন করায় ধীরে ধীরে রাস্তা ভেঙে পুকুরের মধ্যে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এসব রাস্তা ভাঙন রোধে প্রতি বছর বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে প্যালাসাইড তৈরি করতে হচ্ছে। ফলে প্রতি বছর সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা শুধু রাস্তা রক্ষার্থে ব্যয় হচ্ছে।

উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের দেয়া সম্ভাব্য তথ্য মতে, কালীগ্রাম ইউনিয়নে প্রায় ৩০ টি, একডালা ইউনিয়নে ৩০টি, পারইল ইউনিয়নে ৪৩ টি, খট্রেশ্বর ইউনিয়নে ২৫টি, বড়গাছা ইউনিয়নে ৭৫টি, কাশিমপুর ইউনিয়নে ২০টি, মিরাট ইউনিয়নে ১৬ টি, গোনা ইউনিয়নে ২৫টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। এর মধ্যে কাশিমপুর ইউনিয়নের নিজামপুর গ্রামে সরকারী রাস্তাকে পুকুর পাড় বানিয়ে পুকুর খনন করা হয়েছে।

 

আবাদপুকুর-পতিসর রাস্তার কালীগ্রাম কসবা পাড়ার শাজাহানের দোকানের কাছে পাকা রাস্তা ভেঙ্গে পুকুরের মধ্যে বিলিন হয়ে যাচ্ছে। প্রতি নিয়ত সেখানে দূর্ঘটনা ঘটলেও সংশ্লিষ্ঠরা কোন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। কসবা পাড়া-ভেবড়া-রাতোয়াল রাস্তার কসবা পাড়া আয়েত আলী মেম্বারের বাড়ির পিছনে পাকা রাস্তা ভেঙে পুকুরের মধ্যে চলে গেছে। বড়গাছা-রাণীনগর পাকা রাস্তার বড়বড়িয়া পূর্ব চকবলরাম নামকস্থানে এবং একটু অদূরে গোবিন্দপুর নামকস্থানে একইভাবে পুকুরের মধ্যে পাকা রাস্তা ভেঙে পরেছে।

 

এই স্থানগুলো এতোটায় ঝুঁকিপূর্ণ যে যেকোন মহুর্তে পুরো রাস্তা ভেঙে চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশংকা করছেন এলাকাবাসী। এতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে পরিবহন ও পথযাত্রীদের।

 

আসন্ন বর্ষা মৌসুমের আগে এসব ভাঙা স্থানগুলো যদি সংস্কার না করা হয় তাহলে বেশ কয়েকটি রাস্তায় চলাচল একদম বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশংকা করছেন স্থানীয়রা। এতে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে দুর্ভোগে পরবে গ্রামীণ জনপদের সাধারণ মানুষ।

 

স্থানীয়দের অভিযোগ,

সংশ্লিষ্টদের অবহেলায় এবং নজরদারি না থাকায় নিয়ম নীতি উপেক্ষা করে একের পর এক পুকুর খনন অব্যাহত থাকলেও এর কোন প্রতিকার হচ্ছে না। ফলে প্রতি বছর সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা রাস্তার ভাঙন রোধ করতেই ব্যায় হয়ে যাচ্ছে।

কালীগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বাবলু মন্ডল বলেন, রাস্তাকে পাড় বানিয়ে পুকুর খননের সময় কয়েকটি পুকুর খনন বন্ধ করে দিয়েছি। অত্র ইউনিয়নে অধিকাংশ পাকা রাস্তার ধারে পুকুরের পাড় না থাকায় ভেঙে পুকুরের মধ্যে চলে যাচ্ছে। রাস্তার পার্শ্বে পুকুর খননে নিয়ম না মানায় প্রতি বছর রাস্তা ভাঙনের ঘটনা ঘটছে।

রাণীনগর উপজেলা এলজিইডি ইঞ্জিনিয়ার শাহ মো. শহিদুল হক বলেন, রাস্তা থেকে নির্দিষ্ট সীমানা বাদ দিয়ে পুকুর পাড় তৈরি করে পুকুর খননের নিয়ম রয়েছে।

কিন্তু সাধারণ মানুষ রাস্তাকে পুকুর পাড় বানিয়ে করে পুকুর খনন করে। বিষয়গুলো নিয়ে আমরা খুবই বিব্রতকর অবস্থায় আছি জানিয়ে তিনি বলেন, পুকুর মালিকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে গত এক মাস আগে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে একটি নির্দেশনা এসেছে। নির্দেশনা অনুযায়ী খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by