রংপুর

সাদুল্যাপুরে ঘাঘট নদীর ভাঙন অব্যাহত: বাড়ি-ঘর নিয়ে ঝুঁকিতে ৪০ পরিবার

  প্রতিনিধি ২ সেপ্টেম্বর ২০২১ , ৬:২৮:৫৮ প্রিন্ট সংস্করণ

এম.এস সোহেল, সাদুল্যাপুর (গাইবান্ধা) :

গাইবান্ধার সাদুল্যাপুরে ঘাঘট নদীর অব্যাহত ভাঙনে বাড়ি-ঘর নিয়ে মারান্তক ঝুঁকিতে পরেছে ৪০ পরিবার। নদীর ভাঙনে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমিসহ বিস্তীর্ণ এলাকা। ঝুঁকিতে রয়েছে একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও রাস্তাঘাট। উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের জামুডাঙ্গা খুনিয়াপাড়া গ্রামে দেখা দিয়েছে ঘাঘট নদীর এই ভাঙন। তাই ভাঙন রোধে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে অনেকেই ভিটেমাটি ছাড়া হবেন।

স্থানীয় গ্রামের বাসিন্দা তোতা মিয়া বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে এই এলাকায় ঘাঘট নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে এলাকার প্রায় ৬০০ একর জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এর সঙ্গে স্থানীয়দের ঘর-বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার সংখ্যা কম নয়। এই অবস্থায় চলতি বন্যা মৌসুমে আবারো ভাঙন শুরু হয়েছে। এবারের ভাঙনে নদী তীরবর্তি প্রায় ৪০ পরিবার মারান্তক ঝুঁকির মধ্যে অবস্থান করছে। যেকোন সময় এই পরিবারগুলোর বাড়ি-ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।

নদীর তীরবর্তি মসিরন বেওয়া বলেন, তার মাত্র দুই শতাংশ জমি আছে। এছাড়া তার আর কোন জায়গা জমি নেই। কিন্তু যেভাবে নদী ভাঙছে তাতে করে যেকোন সময় তিনি ভূমিহীন হয়ে যাবেন। তার সবটুকু জমিই নদীগর্ভে চলে যাবে। বাড়িঘরের সঙ্গে তাকে হারাতে হবে স্বামীর ভিটে-মাটি।

নদীর তীরবর্তি আরেক ভুক্তভোগী হারেজ আলী বলেন, ঘাঘট নদীর ভাঙন ঠেকানোর জন্য স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্যের নিকটসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডে আবেদন করেও কোন প্রতিকার মেলেনি। কর্তৃপক্ষ কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় ঘাঘট নদীর ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। তাই এই এলাকা রক্ষায় কর্তৃপক্ষ যদি এখনই দ্রুত কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন, তাহলে এখানকার ৪০ পরিবারের ভিটে-মাটি ও ঘর-বাড়ি রক্ষা করা সম্ভব হবে না।

দামোদরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এজেডএম সাজেদুল ইসলাম স্বাধীন বলেন, তার ইউনিয়নের ওই গ্রামে (জামুঙাঙ্গা খুনিয়াপাড়া) ঘাঘট নদীর ভাঙন মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। তাই নদী ভাঙন রোধ প্রকল্পের আওতায় দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে ওই গ্রামের নদীর তীরবর্তি পরিবারগুলোকে রক্ষা করা যবে না। তাই তিনি এই বিষয়ে জরুরী ভাবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহায়তা কামনা করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোকসানা বেগম বলেন, তিনি এখানে নবাগত। তাই প্রয়োজনে সরেজমিনে দেখে নদী ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন।

গাইবান্ধা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান জানান, ইতিমধ্যে ঘাঘট নদীর ভাঙন কবলিত ওই এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত সেখানে ভাঙনরোধে কোন কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। তবে অর্থ বরাদ্দ পেলে দ্রুতই সেখানে ঘাঘট নদীর ভাঙন রোধে কাজ শুরু করা হবে।

 

আরও খবর

Sponsered content

Powered by