সিলেট

সুনামগঞ্জে ফের বাড়ছে নদনদীর পানি

  প্রতিনিধি ২৯ জুন ২০২২ , ৬:২৯:০২ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্কঃ

টানা চতুর্থ দফা বন্যার ধকল যেতে না যেতেই আবার বাড়ছে সুনামগঞ্জের নদনদীর পানি। নিম্নাঞ্চল এলাকার পানি এখনো না কমলেও আবারও নতুন করে আসতে শুরু করেছে পাহাড়ি ঢলের পানি।

মঙ্গলবার রাত থেকে ভারতের মেঘালয়ে ও সুনামগঞ্জে দফায় দফায় বৃষ্টিপাতের ফলে এ পানি বেড়েছে।

ইতোমধ্যে সুনামগঞ্জর সদর, দোয়ারাবাজার ছাতক উপজেলার সীমান্তবর্তী খাসিমারা ও চেলা নদী এবং পানি বেড়ে গিয়ে প্রবেশ করছে নিম্নাঞ্চল এলাকা দিয়ে। এ ছাড়া সুনামগঞ্জের প্রধান নদী সুরমার পানি গেল ২৪ ঘণ্টায় বেড়েছে ১৪ সেন্টিমিটার, তবে তা এখনো বিপদসীমার নিচে।

দোয়ারাবাজার উপজেলার খাসিয়ামারা নদীতীরবর্তী এলাকার বাসিন্দা মনোয়ার হক জানান, পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নদীটির ভাঙন থাকায় পানি দ্রুত প্রবেশ করছে উপজেলার বাংলাবাজার, আলীপুর বাজার, চকবাজার, বোগলাবাজার, পূর্ব বাংলাবাজার, টেংরাবাজার লিয়াকতগঞ্জ এলাকা দিয়ে।

দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল করিম বলেন, ‘ঘরের পানিই এখনো রয়ে গেছে, এর মধ্যে আবার পানি। এখন আমরা কই যাইতাম। ইলা যদি পানি বাড়তে তাকে তাইলে পানিত পড়িয়া মরা লাগব।’

ছাতক উপজেলার উত্তর খুরমা ইউপির দাহারগ্রাও গ্রামে আব্দুস ছোবহান, মোহাম্মদ আলী সুহেল মিয়া ও আলমপুর গ্রামের শ্রমিক নেতা খছরু মিয়া জানান, ‘অনেক কষ্টে পানি থাকি ঘরটা বাঁচাইয়া রাখছি, কিন্তু ঘরও পানি ডুকছিল কোমর পর্যন্ত। এই দুই দিনে পানি অনেকটা কমি গেছিল, মঙ্গলবার সকাল থাকি আবার পানি বাড়া শুরু হইছে। আশ্রয়কেন্দ্র থাকি ফিরিয়া আইয়া লাগের আবার ওইখানেই ফিরিয়া যাওয়া লাগব।’

দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা প্রিয়াংকা বলেন, গত মঙ্গলবার থেকে এখানে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। পাশের দেশ ভারতের মেঘলায়েও বৃষ্টিপাত হওয়ায় এ উপজেলার সীমান্তবর্তী খাসিমারা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে নিম্নাঞ্চল এলাকায় প্রবেশ করেছে।

ছাতক উপজেলা নির্বাহী অফিসার মামুনুর রহমান জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১৩টি ইউনিয়নের ১২০ টন চাল বরাদ্দ করা হয়। ২৩০০-এর মতো শুকনা খাবার বানভাসিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। প্রতিটি এলাকায় সরকারি ও বেসরকারিভাবে ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এ ছাড়া এখনো যারা আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন তাদের খাবারের ব্যবস্থাও প্রশাসন করছে।

এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিফের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, এটি হাঁওড় এলাকা হওয়ায় এখানে পানি থাকবেই। গেল ২৪ ঘণ্টায় সুরমা নদীর পানি ১৪ সেন্টিমিটার বেড়েছে, তবে বিপদসীমা অতিক্রম করেনি। দোয়ারাবাজার উপজেলার খাসিমারা নদী সীমান্তবর্তী নদী গতকাল রাতে বৃষ্টিপাত হয়েছে আর পাহাড়ি ঢলও অব্যাহত থাকায় ২৪ ঘণ্টায় ১০ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে, এলাকাটি নিম্নাঞ্চল হওয়ায় পানি প্রবেশ করেছে।

প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে এখানে সুরমা, চেলা ও পিয়াইন নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লক্ষাধিক মানুষ। চরম দুর্ভোগের শিকার বানভাসি মানুষগুলো।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by