রংপুর

অর্থের অভাবে চিকিৎসা বন্ধ নিজের লিভার দিয়ে সন্তানকে বাঁচাতে চান মা

  প্রতিনিধি ২৬ ডিসেম্বর ২০২২ , ৮:৫৩:৫৯ প্রিন্ট সংস্করণ

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি :

১১ বছর বয়সী ফারহান সাদিক। প্রতিবেশীরা সবাই ডাকেন বর্ষ নামে। ৮ বছর বয়সে অসুস্থ হয়ে পরে সাদিক। নিজ জেলা ও ঢাকায় চিকিৎসা করেও ধরা পরেনি কোন সমস্যা। কোন সমস্যা ধরা না পরলেও অসুস্থতা কাটেনা তার। ক্রমান্বয়ে অসুস্থতা বাড়তে থাকে সাদিকের। উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় ভারতের হায়দ্রাবাদে। ধরা পড়ে রোগ। বিকল হয়ে পরেছে সাদিকের লিভার। সুস্থ করতে দ্রæত করতে হবে লিভার পরিবর্তন। পরিবারে শুরু হয় নানা জল্পনা-কল্পনা। সব রেশ কেটে মায়ের লিভারের অংশ সাদিককে দেওয়া পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক। তবে সাদিককে সুস্থ করতে অপারেশন করতে হবে দ্রæত সময়ের মধ্যে। সন্তান সাদিককে সুস্থ দেখতে লিভার দিতে রাজি মা, থমকে আছে শুধু চিকিৎসা খরচ। নিজের জমানো টাকা, বসতভিটা বিক্রি ও আত্মীয়দের সহযোগিতা নিয়েও হচ্ছে না চিকিৎসা বাবদ খরচ। খরচ যোগাতে সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন সাদিকের পরিবার।
ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের সরকারপাড়া গ্রামের বাস পরিবহনের কন্ডাকটার দেলোয়ার হোসেন ও বাবলী বেগমের দম্পতির ছোট ছেলে ফারহান সাদিক বর্ষ। ২ ছেলের মধ্যে সাদিক ছোট। সে সরকারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় চালিয়ে নেওয়া হয়ে ওঠেনি তার পড়াশোনা। অসুস্থতা নিয়ে এখন সময় কাটে বাড়িতে শুয়ে। অপরদিকে চিকিৎসার খরচ যোগাতে দিশেহারা তার পরিবার।
সুস্থ হয়ে বেঁচে থাকার প্রত্যাশা নিয়ে শিশু সাদিক বলেন, আমি বড় হয়ে জাতীয় দলের খেলোয়াড় হতে চাই। সকলে আমাকে সুস্থ করতে সহযোগিতা করবেন।
সাদিকের মা বাবলী বেগম বলেন, ছেলেকে সুস্থ করার জন্য দেশের বড় বড় ডাক্তার দেখিয়েছি। ঢাকার পিজি হাসপাতাল সহ অনেক হাসপাতালে নিয়ে গেছি। কোন রোগ ধরা পরেনি। পরে ভারতে নিয়ে যাওয়ার পর লিভারের সমস্যা ধরা পরে। সাদিকের বাবা ও আমি দুজনে আমরা লিভার দেওয়ার কথা বলি। আমারটা তাকে দেওয়ার উপযোগী মনে করেন চিকিৎসক। উনারা বলেছেন জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে করাতে লাগবে। এতে চিকিৎসা খরচ ব্যয়বহুল। আমরা টাকা জোগানোর চেষ্টা করছি। আত্মীয় স্বজনদের বলছি তবুও হচ্ছেনা। যদি আপনারা সকলে আমাদের সহযোগিতা করে পাশে থাকেন। তবে আমি আমার সন্তানকে বাঁচাতে পারব। আপনারা সকলে আমার বুকের ধনকে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন।
সাদিকের বাবা দেলোয়ার হোসেন বলেন, ১৫ লাখ টাকা দেওয়ার পর তারা আমার ছেলেকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি নেবেন। সব মিলিয়ে ৩০ লাখ টাকার মত অপারেশনে খরচ লাগবে। আমার আয়ের উৎস তেমন নেই। কাজে গেলে টাকা আসে নাহলে আসেনা। তবুও সর্বো”চ চেষ্টা করে, সব আতœীয় স্বজনদের কাছে সাহায্য চাচ্ছি। আমাদের পক্ষে এত টাকা জোগাড় সম্ভব না। আপনারা এগিয়ে না আসলে সাহায্য না করলে আমার ছেলেকে বাঁচাতে পারবনা। নিজের ছেলে ভেবে সকলে এগিয়ে আসুন। আমার বিকাশ নাম্বার-০১৭১৬-৪১৪৯২৬৩ এর মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা পাঠানো যাবে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মো. শামসুজ্জামান বলেন, বিষয়টি আসলে বেদনাদায়ক। আর চিকিৎসার খরচ অনেক। আমাদের উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যতটুকু সম্ভব পাশে থেকে সহযোগিতা করা হবে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by