চট্টগ্রাম

উন্নয়নে আলোকিত হচ্ছে উত্তর হামছাদী ইউনিয়ন, অর্ধশতাধিক পরিবার এখন স্বাবলম্বী

  প্রতিনিধি ৩১ আগস্ট ২০২২ , ৭:২১:০২ প্রিন্ট সংস্করণ

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:

নুন আনতে পান্তা ফোরাত জাহানারা বেগমের। দিনমজুর স্বামীর জীবদ্দশায় সংসার চলতো টানাপোড়নে। এক দূর্ঘটনায় স্বামীর মৃত্যুর পর জাহানারা চোখে শর্ষের ফুল দেখে। টানাপোড়ন করেও সংসার চলতোনা তার। কষ্ট সইতে না পেরে একমাত্র ছেলে সন্তানকে একটি গ্রিল ওয়ার্কশপের কাজে দেন। কিন্তু তাতেও চলছিল না সংসার। এমন আর্তনাতের ও দুঃসহ জীবনের গল্প শুনে সাহায্যের হাত বাড়ান ধর্ণাঢ্য ব্যক্তি নজরুল ইসলাম। তার দেয়া অর্থে ছেলেকে প্রবাসে পাঠিয়ে বিধবা জাহানারার পরিবার এখন ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সংসারে এসেছে স্বচ্ছলতা। শুধু জাহানারা নয় লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তর হামছাদী ইউনিয়নে নজরুল ইসলামের দেয়া ব্যক্তিগত আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে অর্ধশতাধিক পরিবার এখন স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন।

এদিকে, দৃশ্যমান উন্নয়নে আলোকিত হচ্ছে উত্তর হামছাদী ইউনিয়ন। একটি মডেল ইউনিয়নে রূপান্তর করতে কাজ করে যাচ্ছেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম। ইতোমধ্যে তার কর্মদক্ষতার ফলে এ ইউনিয়নে রাস্তা-ঘাট, মসজিদ-মাদ্রাসা, স্কুলসহ নানামুখী উন্নয়ন হয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের। এ ইউনিয়নকে দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি মডেল ইউনিয়ন হিসেবে গড়ে তুলতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তার পরিষদ।

বেকারত্বে দিশেহারা হয়ে উঠা মো. ইউছুফ জানান, ঢাকায় একটি প্রাইভেট কোম্পানীতে দারোয়ানের চাকরি করতেন। কিন্তু হঠাৎ করোনাকালীন সময়ে চাকুরী চলে যায়। ছেলে-মেয়েকে নিয়ে দিশেহারা হয়ে যায়। নজরুল চেয়ারম্যান একটি ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা উপহার দেন তাকে। এখন ছেলে মেয়ে নিয়ে ভাল আছেন। একই রকম জীবনগল্পের ওই এলাকার হতদরিদ্র মনির হোসেন, আমির হোসেন, আবুল কালামসহ অন্ততঃ ১৫ জনকে রিক্সা কিনে দেন নজরুল ইসলাম।

একই রকম কথা বললেন গৃহহীণ বেলাল হোসেন ও ফেরিওয়ালা পারভেজ। তারা বলেন, অর্থের অভাবে বসত ঘর সংস্কার করাও সম্ভবপর নয় তাদের। এমন খবর পান নজরুল ইসলাম। নতুন চৌচালা টিনের ঘর করে দেওয়া হয়। সারাদিন পরিশ্রম শেষে এখন আর ভাঙ্গা ঘরে থাকতে হয় না বলে জানান তারা। চেয়ারম্যান নজরুলের উদ্যোগে এলাকার মনি আক্তার, মিতু আক্তারসহ অন্ততঃ ৩০ জনের কাউকে নতুন ঘর, আবার কাউকে ঘর সংস্কার করে দেন বলে জানান স্থানীয়রা।

মো. নজরুল ইসলাম লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তর হামছাদী ইউপি চেয়ারম্যান ও জেলা শ্রমিক লীগের যুগ্ম আহবায়ক। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের ডিজিটাল উন্নয়নের ছোঁয়া এ ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রামে পৌঁছে দিতে পরিষদ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। পরিষদের সদস্যদের সমন্বয়ে উন্নয়ন কাজ পরিচালনা করে একটি মডেল ইউনিয়ন হিসেবে গড়ে তুলতে মেয়াদকালীন সময়ের মধ্যে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিটি গ্রামকে শহরে রূপান্তরিত করার বিষয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ। সে লক্ষ্যেই কাজ করছেন তিনি। ইতোমধ্যে এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে প্রত্যন্ত গ্রামের রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট নির্মাণসহ প্রতিটি স্থানে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগাতে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। এছাড়া সরকারি সহায়তার পাশাপাশি গৃহহীন, বেকার, অস্বচ্ছল পরিবারের পাশে দাঁড়াচ্ছেন ব্যক্তিগত অর্থে। আগামীতে বেকারত্ব দূরী করণে ইউনিয়নে কারখানা করারও পরিকল্পনার কথা জানান এই চেয়ারম্যান। তার মতো অসহায় মানুষদের পাশে সমাজের বিত্তবান ও সামর্থ্যবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by