কুয়াকাটায় ভেঙে পড়ল নির্মাণাধীন সেতু

পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় নির্মাণাধীন একটি সেতু ভেঙে পড়েছে। কুয়াকাটা পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দোভাষীপাড়া খালের ওপর নির্মাণাধীন সেতুটি রোববার (২৭ জুন) সকালে ভেঙে যায়। ২০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৫.৫ মিটার প্রস্থের সেতুটি দুই গার্ডারের মাঝামাঝি ভেঙে গেছে।

সেতুটি ভেঙে পড়ায় দুই ইউনিয়নের সঙ্গে কুয়াকাটা পৌরসভার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।

জানা গেছে, ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে ২ কোটি ২৬ লাখ ১৫ হাজার ৮৮৩ টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ সরকারের (জিওবি’র) অর্থায়নে কুয়াকাটা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আওতায় পৌরসভার দরপত্রের মাধ্যমে সেতুর কাজটি চলমান রয়েছে। সেতুর প্রায় ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। গত ২৬ জুন কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল।

সেতু ভেঙে পড়ার ঘটনায় কুয়াকাটা পৌর কর্তৃপক্ষ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে কথা বলতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাউকে পাওয়া যায়নি।

কাগজ-কলমে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মোসার্স সৈয়দ মো. সোহেল অ্যান্ড দীপ এন্টারপ্রাইজের নাম থাকলেও মূলত মামুন নামে এক ঠিকাদারের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয় সেতুর কাজ। এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক পটুয়াখালীর টাউন কালিকাপুরের আজাদুল ইসলাম।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সেতুটির নির্মাণকাজের শুরু থেকেই নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী, সিমেন্ট কম ব্যবহারসহ ওয়ার্ক অর্ডার অনুযায়ী কাজ না করার কারণে এমনটি হয়েছে। নির্মাণকাজ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে স্থানীয়রা প্রকৌশলী ও পৌর মেয়রের কাছে অভিযোগ করে আসলেও তারা এতে কর্ণপাত করেনি।

স্থানীয় দোভাষীপাড়ার বাসিন্দা মান্নান বলেন, সেতুটির মাঝে কোনো পিলার নেই। দুটি গার্ডারের ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে, তাই ভেঙে পড়েছে বলে তাদের ধারণা। স্থানীয় পল্লিচিকিৎসক আব্দুল হালিম অভিযোগ করেন, নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই সেতুটি ভেঙে পড়ায় কাজ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে এলাকাবাসীর।

কুয়াকাটা পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মো. মিজানুজ্জামান বলেন, তিনি ২১ জুন কুয়াকাটা পৌরসভায় যোগদান করেছেন। সেতুর নির্মাণকাজের বিষয়ে তার কিছুই জানা নেই। কী কারণে সেতুটি ভেঙে পড়েছে তা তদন্ত ছাড়া বলা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে তদন্ত টিম গঠন করা হচ্ছে।

কুয়াকাটা পৌর মেয়র আনোয়ার হাওলাদার বলেন, কুয়াকাটা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সেতুর নির্মাণকাজ চলমান ছিল। নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই কেন সেতুটি ভেঙে পড়েছে তা বলতে পারবেন এ প্রকল্পের প্রকৌশলীরা। তাদেরকে এ বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছে।