রংপুর

গাইবান্ধায় যত্রতত্র গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি

  প্রতিনিধি ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১ , ৪:৪৩:১৪ প্রিন্ট সংস্করণ

গাইবান্ধা প্রতিনিধি :

গাইবান্ধা জেলা শহরসহ ৭ উপজেলায় অরক্ষিতভাবে অবাধে চলছে লাইসেন্সবিহীন গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি। মান নির্ণয় ছাড়াই এসব সিলিন্ডার গ্রামীণ জনপদের মানুষ ব্যবহার করছে। কোনো প্রকার অনুমোদন ছাড়াই এ জেলার ৮২ইউনিয়ন ও চারটি পৌরসভার বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি হচ্ছে এসব গ্যাস সিলিন্ডার।

বড় মুদির দোকান থেকে শুরু করে পান ব্যবসায়ীও এই গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসা শুরু করেছেন। এসব গ্যাস সিলিন্ডার থেকে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছেন গাইবান্ধাবাসী।

অনুসন্ধানে জানা যায়, সিলিন্ডারের মাধ্যমে আবাসিক খাতে গ্যাস ব্যবহারের জন্য বিস্ফোরক অধিদফতরের কয়েকটি নীতিমালা রয়েছে। মহা বিস্ফোরক অধিদফতর কর্তৃক এসব নীতিমালা বাস্তবায়নের জন্য মনিটরিং সেলও রয়েছে। দেশের বেশ কয়েকটি গ্রুপ অব কোম্পানি আবাসিক খাতে ব্যবহারের জন্য গ্যাস সিলিন্ডার তৈরি এবং বাজারজাত করছে। আর নীতিমালা ভঙ্গ করে এসব সিলিন্ডার এখন যত্রতত্র বিক্রি করা হচ্ছে। বিস্ফোরক অধিদফতর গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির জন্য কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে বিক্রয় ও বিপণন লাইসেন্স প্রদান করলেও সাব-ডিলারের নামে এসব প্রতিষ্ঠান বাজারে মুদি মালের মতো গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করছে।

ফায়ার সার্ভিস কর্তৃক গাইবান্ধা জেলার এসব গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রয় প্রতিষ্ঠান মনিটরিং করার কথা থাকলেও এর কারণ প্রতিফলন দেখা যায় না। বিস্ফোরক আইন ১৮৮৪-এর অধীনে গ্যাস সিলিন্ডার বিধিমালা ২০০৪-এর ৬৯ ধারা অনুযায়ী লাইসেন্স ছাড়া অনধিক ১০টি গ্যাসপূর্ণ সিলেন্ডার মজুদ করা যাবে। তবে বিধির ৭০ ধারা অনুযায়ী এসব সিলিন্ডার মজুদ করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট পরিমাণে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রপাতি এবং আগুন নিয়ন্ত্রক সরঞ্জাম মজুদ রাখতে হবে। সিলিন্ডার গ্যাস স্থাপনা প্রাঙ্গণে দিয়াশলাই বা আগুন লাগতে পারে এমন কোনো বস্তু বা সরঞ্জাম রাখা যাবে না।

মজুদ করা স্থানের কাছাকাছি আলো বা তাপের উৎস থাকা যাবে না। এসব আইনের তোয়াক্কা না করে চা-দোকান থেকে আরম্ভ করে ভ্যারাইটিজ স্টোরেও পাওয়া যায় এ সিলিন্ডার গ্যাসের বোতল। বর্তমান সময়ে গাইবান্ধা জেলায় সিলিন্ডার গ্যাসের ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে। এ জেলায় গ্যাসের লাইন না থাকায় তাদের একমাত্র ভরসা সিলিন্ডার গ্যাস। কিন্তু এ সিলিন্ডার গ্যাস জেলার সর্বত্র বিভিন্ন দোকানে পাওয়া যাচ্ছে অরক্ষিত অবস্থায়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি নীতিমালাকে তোয়াক্কা না করে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার দেদারছে বিক্রি করা হচ্ছে। এসব দোকানে ফায়ার সার্ভিসের অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র রাখার কথা থাকলেও তা নেই অধিকাংশ দোকানে। আবার কোন কোন দোকানে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র থাকলেও তা অকেজো ও মেয়াদোত্তীর্ণ। বর্তমানে এ জেলাতে সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় এক লক্ষাধিক। ব্যাপক চাহিদা থাকার কারণে একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী সিলেন্ডার নিজেদের মনগড়াভাবে যেখানে সেখানে সিলিন্ডারের বোতল ফেলে রেখে ব্যবসা করছে। ঝুঁকিপূর্ণ এ জ্বালানির যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেই এসব দোকানে। বেশিরভাগ দোকানি ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন।

এ বিষয়ে গাইবান্ধা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর উপ-সহকারী পরিচালক মো. এনামুল হক বলেন, জেলা প্রশাসক থেকে নির্দেশনা পেলে যেসব দোকানে সনদ ছাড়া অবৈধ ও মেয়াদোত্তীর্ণ গ্যাস বিক্রি করছে সেগুলোকে আইনের আওতায় আনা হবে। শিগগিরই মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে এসব দোকানির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

আরও খবর

Sponsered content

Powered by