দেশজুড়ে

পীরগাছায় নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বানভাসীরা

  প্রতিনিধি ১৪ জুলাই ২০২০ , ৭:২৪:২৮ প্রিন্ট সংস্করণ

ফজলুর রহমান,পীরগাছা (রংপুর) : অবিরাম বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে রংপুরের পীরগাছায় তিস্তা নদীর বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় উপজেলার নিম্না লের প্রায় ৪ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। অনেকে বন্যার পানির তীব্র ¯্রােতে ব্যবহৃত আসবাবপত্র হারিয়ে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজছে।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুরে কাউনিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উজানের নেমে আসা ঢল ও বর্ষণ অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতির শঙ্কা রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বন্যা কবলিত গ্রামগুলোতে অধিকাংশ বাড়ির শোয়ার বিছানার উপর পানি উঠেছে। বাড়িগুলোতে নলকূপগুলো সম্পূর্ণ পানির নিচে ডুবে গেছে। তাই বিশুদ্ধ পানি ও পয়নিস্কানের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। রান্নার ব্যবস্থা না থাকায় অনেকের অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটছে। ওই এলাকায় নৌকা সংকট দেখা দিয়েছে। প্রয়োজনীয় নৌকা না থাকায় বন্যায় আটকে পড়া লোকজন নিরাপদ স্থানে যেতে পারছে না। অনেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গৃহপালিত পশুসহ শেষ সম্বলটুকু রক্ষার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
উদ্ধারকর্মী মোখলেছুর রহমান বলেন, রবিবার সন্ধ্যা থেকে তিস্তা ভয়াবহ রুপ ধারণ করে। এতে গাবুড়াসহ প্রায় ৬টি গ্রাম পানির নিচে তলিয়ে যায়। ফলে অধিকাংশ লোকজনের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পানির তোড়ে ভেসে যায়। আমরা কয়েকজন মিলে অনেকেরে মালামাল নিরাপদ স্থানে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছি। ৩৩৩ কল করে সাহায্য চাওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ছাওলা ইউনিয়নের কিশামত ছাওলা, গাবুড়া, জুয়ান, রামশিং, শিবদেব , হাগুরিয়া হাশিম ও তাম্বুলপুর ইউনিয়নের রহমত চর গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। নদীতে রয়েছে তীব্র স্রোত।
বন্যা কবলিত রহমত চর গ্রামের সামছিয়া বেগম বলেন, বানের পানি মোর সউগ ভাসে নিয়ে গেইছে। থাইকপার জায়গা নাই। কাইয়ো মোক সাহায্য করে না। কাল থাকি না খায়া আছম।
হাগুরিয়া হাশিম গ্রামের মোরশেদুল ইসলাম জানান, গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ বলেন, বন্যার্তদের জন্য এখন পর্যন্ত ২৫ মে.টন চাল ও ৫ শ প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
বন্যা দুর্গত এলাকায় সরেজমিনে দেখতে আসা উপজেলা চেয়ারম্যান মাহবুবার রহমান বলেন, বন্যা দুর্গতদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। পর্যায়ক্রমে সকলকে সহযোগীতা করা হবে।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদি হাসান বলেন, তিস্তায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ডালিয়া ও কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by