প্রতিনিধি ২৬ জুলাই ২০২০ , ৭:২৬:০৭ প্রিন্ট সংস্করণ
জাহাঙ্গীর লিটন, ল²ীপুর : চোখের সামনে হারিয়ে যাচ্ছে ঘর-বাড়ি সহ জনপথ। অনেকের ঘর-বাড়ী মেঘনায় বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়াও অসংখ্য মসজিদ ও মন্দির মেঘনায় তলিয়ে গেছে গত কয়েক বছরে। মেঘনা তীরের টাংকির বাজারের উত্তর দিকে প্রায় ১২ কি. মি বেড়িবাঁধ। সবুজ বৃক্ষেঘেরা বাঁধ। বাঁধের কোলে আঁছড়ে পড়া নদীর ঢেউয়ের অপরূপ দৃশ্য। কিন্তু প্রায় ৫শ’ মিটার দূরত্বে হেঁটে গেলেই এ অপরুপ দৃশ্যের ভয়ঙ্কর রুপ মুহুর্তে যে কারো মন খারাপ করে দিবে। কারণ, উত্তাল নদীর প্রতিটা ঢেউ গিলে খাচ্ছে অপরূপ সৌন্দয্যে ভরা বেড়িবাঁধ ও সবুজ বৃক্ষ। জানা গেছে, চর উন্নয়ন বসতি স্থাপন প্রকল্প (সিডিএসপি) এর আওতায় নেদারল্যান্ডের অর্থায়নে প্রায় ১০ বছর আগে ল²ীপুর ও নোয়াখালীর সীমান্ত এলাকা বয়ার চরে নির্মাণ করা হয় এ বেড়িবাঁধটি। গত ৫ বছর আগে মেঘনা নদী বেড়িবাঁধ থেকে প্রায় তিন কি.মি. দূরত্বে ছিলো। কিন্তু দিনের পর দিন ভিটেমাটি এবং ফসলি জমি গিলে খেয়েছে করালগ্রাসী মেঘনা। আর এখন বেড়িবাধঁটি মেঘনার পেটে যেতে শুরু করেছে। বাঁধের পাশের বাসিন্দা ছালেহা বেগমের স্বামীর বাড়ি ছিলো রামগতির চরগাসিয়া এলাকায়। তিন বছর আগে ভিটেমাটি হারা হন তিনি। আশ্রয় নেন কামাল বাজার এলাকায়। এক বছরের ব্যবধানে সেই আশ্রয়টিও কেড়ে নেয় মেঘনা। চলে আসেন বয়ারচরে। দুই বছরের মাথায় আবারও ভাঙনের মুখে পড়েছেন। স্বামী ও চার সন্তান এই জেলে পরিবারের পরবর্তী যাত্রা কোথায় হবে তা অনিশ্চিত। সরেজমিনে জানা গেছে, বাঁধের বেশিরভাগ অংশ নদীতে তলিয়ে গেছে। বাঁধ সংলগ্ন বাসিন্দারের অধিকাংশই জেলে এবং কৃষক। কোনরকম দিন পার করছেন তারা। এরই মধ্যে বাসিন্দাদের মধ্যে ভাঙন আতঙ্ক বিরাজ করছে। কোন জনপ্রতিনিধি তাদের দিকে নজর না দেওয়ায় হতাশা বিরাজ করছে তাদের মধ্যে। কয়েকজন এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে বর্তমান সংসদ সদস্য মেজর (অব:) আবদুল মান্নান ভোট চাইতে টাংকি বাজারে আসেন। ওই সময় এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে, বাঁধ মেরামতের প্রতিশ্রæতি দেন তিনি। কিন্তু নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এ এলাকায় তার আর দেখা নেই। স্থানীয় সংবাদকর্মী আবদুল কাইয়ুম বলেন, পুরো বায়ারচর এবং এর আশপাশে প্রায় তিন লাখ লোকের বসবাস। বাঁধটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে তার প্রভাব পড়বে এ সকল লোকের উপর। কেউ ভিটে মাটি হারা হবে, আবার কারো ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বাঁধটি মেরামতের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্যকেই এগিয়ে আসতে হবে। কারণ এ এলাকার প্রায় ৯০ শতাংশ ভোটার রামগতির। টেকসই প্রকল্পের মাধ্যমে সিসি বøক দিয়ে বাঁধটি মেরামতের জন্য প্রধানমন্ত্রী এবং স্থানীয় সাংসদ মেজর (অব:) আবদুল মান্নানের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।