মিরসরাইয়ে বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যা

ট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায় পূর্ব শত্রুতার জেরে রেহান উদ্দিন(৬৫) নামে এক বৃদ্ধকে হত্যা করা হয়েছে। 

শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে উপজেলা ৬ নং ইছাখালী ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড বহদ্ধার গ্রামে এই হত্যার ঘটনা ঘটে। নিহত রেহান উদ্দিন ওই এলাকার চোকধন মিয়ার ছেলে।

জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে। 

স্থানীয় সূত্রে ঘটনার বিবরণে জানা যায়, বৃদ্ধ রেহান উদ্দিনের একটি মৎস্য প্রকল্প স্থানীয় দাউদুল ইসলাম নামক এক ব্যক্তির কাছে লিজ দেন। কিন্তু দাউদুল ইসলাম রেহান উদ্দিন কে না জানিয়ে তার মৎস্য প্রকল্পের মাটি অপসারণ করে বাইরে বিক্রি করে দেন। এ বিষয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে দাউদুল ইসলাম স্থানীয় সন্ত্রাসী মনিরুল ইসলাম টুটুল কে দিয়ে বৃদ্ধ রেহান উদ্দিনকে মারধর করেন। মারধরের সেই রাগ ক্ষোভ থেকে বৃদ্ধ রেহান উদ্দিন মনিরুল ইসলাম টুটুল কে শুক্রবার রাত নয়টার দিকে দোকান থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে দা দিয়ে হামলা করে। হামলায় মনিরুল ইসলাম টুটুল সামান্য আহত হয়।

পরবর্তীতে মনিরুল ইসলাম টুটুল তার লোকজন নিয়ে ধারালো অস্ত্র ও লাঠি সোটা নিয়ে বৃদ্ধ রেহান উদ্দিনের উপর হামলা করে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে নিজেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রাত এগারোটায় চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়। অপরদিকে বৃদ্ধ রেহান উদ্দিনকে স্থানীয় লোকজন রাত ১টার দিকে রাস্তার পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক বৃদ্ধ রেহান উদ্দিনকে মৃত ঘোষণা করেন। ।

বৃদ্ধ রেহান উদ্দিনের পরিবারের অন্য কোন পুরুষ সদস্য ও দায়িত্বশীল কেউ না থাকায় অসহায় পরিবারটি নানামুখী চাপে পড়ে আইনি ব্যবস্থা না নিয়ে দ্রুত লাশ দাফনের বন্দোবস্তী করে। বিষয়টি জানাজানি হলে মিরসরাই সার্কেল এএসপি মনিরুল ইসলাম জোরারগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ জাহিদ হোসেন নিহতের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে লাশের সুরতহাল করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। 

নিহতের স্ত্রী শিরিনা আক্তার ভয়ে আতঙ্কে ঘটনার বিবরণ বর্ণনা করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন আমার স্বামীর সাথে কার ঝগড়া হয়েছে কি হয়েছে আমরা কিছুই জানিনা। আমার স্বামী সাম্প্রতিক মানসিকভাবে বিধ্বস্ত এবং মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। আমরা কোন প্রকার আইনি পদক্ষেপ নিতে ইচ্ছুক নই। আপনারা আমার স্বামীর লাশ বুঝিয়ে দেন আমরা তার জানাজা ও দাফনের ব্যবস্থা করব। আমরা লাশের ময়না তদন্ত ও মামলার খরচ পরিচালনা করতে পারব না আমাদের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ। তাই আমরা কোন ঝামেলায় জড়াতে আর চাই না। 

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মোস্তফা জানান, রেহান উদ্দিন কে হত্যার খবর পেয়ে তার বাড়িতে উপস্থিত হই। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানতে পারি স্থানীয়  দাউদুল ইসলামের সাথে মৎস্য প্রকল্প নিয়ে ঝামেলা সৃষ্টি হয় রেহান উদ্দিনের সাথে। ঝামেলাকে কেন্দ্র করে দাউদুল ইসলাম স্থানীয় টুটুল কে ব্যবহার করে বৃদ্ধ রেহান উদ্দিনকে মারধর করে বেশ কিছুদিন আগে। সে ঘটনা কে কেন্দ্র করে বিদ্যার রাহান উদ্দিন টুটুলকে শুক্রবার রাতে দা দিয়ে কোপাতে গেলে পাল্টা হামলাও হত্যার ঘটনা ঘটে।

মিরেসরাই সার্কেল এসপি মনিরুল ইসলাম জানান, নিহতের বাড়িতে গিয়ে তার লাশ ময়না তদন্তের জন্য আইনি হেফাজতে নেয়া হয়েছে। তবে নিহতের পরিবার কোন প্রকার অভিযোগ বা হত্যার ঘটনায় মুখ খুলতে অপারগতা প্রকাশ করছে। তারপরও বিষয়টি সুস্থ তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জোরারগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ জাহিদ হোসেনকে নির্দেশ দিয়েছি।