ঢাকা

রূপগঞ্জে টিকাদানকেন্দ্রে উপচে পড়া ভিড়

  প্রতিনিধি ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ , ৬:০৭:৫০ প্রিন্ট সংস্করণ

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। উৎসাহ-উদ্দীপনা, ভোগান্তি আর বিড়ম্বনার মধ্য দিয়েই চলছে এ টিকাদান। টিকা গ্রহণে একসঙ্গে টিকাকেন্দ্রে আগমন, আগে গ্রহণের প্রতিযোগিতা ও জনবলের অভাবে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল ২৮ ফেব্রুয়ারি সোমবার পর্যন্ত এখানে ১২ বছর বয়সের উপরে ৫ লক্ষ ৩৪ হাজার মানুষের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ টিকা গ্রহণ করেছে। তবে ৪৯ হাজার ৪শ’ ৫৩ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে শতভাগ টিকা গ্রহণ করেছে। টিকার দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ২ লক্ষ ৮শ’ জন মানুষ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ ১০টি কেন্দ্রে টিকা প্রদান চলছে। তাদের প্রত্যেকটিতেই নারী-পুরুষদের উপচে পড়া ভিড়। তাঁরা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। এলোমেলো লাইনের সারি। গাদাগাদি আর ঘেঁষাঘেষির মধ্যেই অপেক্ষমান। সামাজিক দুরত্ব বলতে কিছুই নেই। টিকাদানকেন্দ্রে নিয়োজিত কর্মকর্তা, কর্মচারী ও স্বেচ্ছাসেবকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউ কারও কথা মানছেন না। কে কার আগে টিকা গ্রহণ করবেন এ নিয়ে টিকা গ্রহণকারীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে। টিকার প্রথম ডোজ নেয়া শেষবারের মতো শেষ হয়ে যাবে, এমন খবরে অনেকের মধ্যেই উৎকন্ঠা ছিল। সে কারণে সকলেই টিকা গ্রহণের জন্য ভিড়ের মধ্যেই দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন।

জন্ম নিবন্ধন, জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়াও মানুষ টিকা গ্রহণ করতে পারছেন। তবে টিকা গ্রহণে সনদপত্র যাদের প্রয়োজন তাদেরকে অবশ্যই অনলাইনে নিবন্ধন করে টিকা গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় সনদপত্র পাওয়া যাবে না। ওমরা হজ¦, হজ্ব ও বিদেশগামীদের অবশ্যই টিকা গ্রহণের সনদ প্রয়োজন। তবে টিকা গ্রহণের শেষ দিন মনে করে অনেকেই অনলাইনের নিবন্ধন ছাড়া টিকা গ্রহণ করতে এসে ভোগান্তি আর বিরম্বনার শিকার হয়েছেন। কেউ কেউ সনদপত্রের প্রয়োজন নেই মনে করে শুধু টিকা গ্রহণ করেছেন। রূপগঞ্জ শিল্পাঞ্চল হিসেবে পরিচিত। এখানে বহিঃরাগত ও ভাসমান লোকের সংখ্যা প্রচুর। তাদেরকেও নিয়মিত টিকাপ্রদান করা হচ্ছে।

রূপগঞ্জ উপজেলা কমপ্লেক্সের টিকাদানকেন্দ্রে ১২ বছর থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদান অব্যাহত রয়েছে। একইদিনে কয়েকটি স্কুলের শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদানের সময়সূচি নির্ধারণ করায় ধাক্কাধাক্কিতে শিক্ষার্থীদের টিকা গ্রহণ করতে হচ্ছে। এখানে নিয়োজিত কর্মীদের অব্যবস্থাপনার জন্য শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সময়মতো টিকা গ্রহণ করতে না পেরে শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ টিকা গ্রহন না করেই বাড়িতে ফিরে গেছে। এছাড়া এ কেন্দ্রে গতকাল ২৮ ফেব্রুয়ারি সোমবার লেখাপড়া থেকে ঝরে পড়া শিক্ষার্থী, পথ শিশু-কিশোর ও ভাসমান মানুষদের মধ্যে টিকার প্রথম ডোজ প্রদান করা হয়। টিকাপ্রদানকেন্দ্র থেকে ফিরে যাওয়া শিক্ষার্থীদেরও টিকার আওতায় আনা হচ্ছে।

প্রথম ডোজ টিকা গ্রহণকারী মুড়াপাড়া ইউনিয়নের গঙ্গানগর গ্রামের গৃহবধূ শাহনাজ পারভীন বলেন, টিকার প্রথম ডোজ আর দেওয়া হবে না জেনেই টিকা গ্রহণ করতে এসেছি। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অক্লান্ত পরিশ্রমে এখানকার অধিকাংশ মানুষ টিকা গ্রহণ করেছে। তাই আমিও টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণ করলাম। নিজেদের প্রয়োজনে প্রত্যেককেই টিকা গ্রহণ করা দরকার।
উপজেলা কমপ্লেক্সের টিকাদান কেন্দ্রে নিয়োজিত স্বাস্থ্য সহকারী সুব্রত চন্দ্র সরকার বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদান করতে হবে। তাই কয়েকটি স্কুলের শিক্ষার্থীদের একই দিনে টিকা প্রদান করা হয়েছে। এখানে শতভাগ শিক্ষার্থীকে টিকা প্রদান করা হয়েছে।
রূপগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রফিক আহমেদ বলেন, শিক্ষার্থীদের পর্যায়ক্রমে টিকা প্রদান করা হয়েছে।

রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আইভী ফেরদৌস বলেন, গতাকল ২৮ ফেব্রুয়ারি সোমবার পর্যন্ত রূপগঞ্জের ৭টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষের মধ্যে টিকা প্রদান করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টিকাদানের প্রথম, দ্বিতীয় ও বুস্টার ডোজ প্রদান অব্যাহত থাকবে। কেউ টিকা গ্রহণের আওতার বাইরে থাকবে না।

 

আরও খবর

Sponsered content

Powered by