চট্টগ্রাম

লক্ষীপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কতৃক চেয়ারম্যানকে লাঞ্ছিত!

  প্রতিনিধি ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ৫:১৩:০৩ প্রিন্ট সংস্করণ

মোহাম্মদ হাছান, চন্দ্রগঞ্জ(লক্ষীপুর)জেলা প্রতিনিধি :

লক্ষীপুর সদর উপজেলার ১০নং চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিনকে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিজে প্রকাশ্যে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল, শারিরিক ভাবে লাঞ্চিত, লাথি মেরে খালে ফেলে দিবে এবং তুলে নেওয়ার হুমকী ধমকি দিয়েছে। এ ঘটনায় চন্দ্রগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ি, এলাকাবাসী ও রাজনৈতিক মহলে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। গত সোমবার (৩০জানুয়ারী) চন্দ্রগঞ্জ মাছ বাজারে এ লাঞ্চিত করার ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগী চেয়ারম্যান জেলা প্রশাসককে অবহিত করে প্রতিকার চেয়েছেন বলে জানা গেছে। এই ঘটনাটি চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জেলা প্রশাসকের সাথে স্বাক্ষাৎ করে প্রতিকার চেয়েছেন । জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ এ ব্যাপারে প্রতিকার করবেন বলে তাদের আশ^স্থ করেছেন।
জানাযায়,গত সোমবার (৩০ জানুয়ারী) সন্ধ্যার পরে সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন চন্দ্রগঞ্জ মাছ বাজার বহুতল শেড নির্মাণ কাজ আকস্মিক পরিদর্শন করতে আসেন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চেয়াম্যানকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কর্তৃক নিযুক্ত ঠিকাদার কাজ শুরু না করার কারণ জানতে চান এবং এক পর্যায়ে উত্তোজিত হয়ে চেয়ারম্যানকে মা বাবা তুলে অশ্লীল গালাগাল, লাথি মেরে খালে ফেলে দিবেন এবং তুলে নিয়ে যাবেন বলে হুমকী ধমকী দিতে থাকেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার এমন অশ্লীল এবং অশালীন আচরণে ইউপি চেয়ারম্যান ও ঘটনাস্থলে উপস্থিত চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক , প্যানেল চেয়ারম্যান সফিকুল ইসলাম (শিপন খলিফা), ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুর রহমান আরজু ও উপস্থিত ব্যবসায়িরা হতভম্ব হয়ে যান। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মত একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তার এমন আচরণ কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না বাজারের ব্যবসায়ি, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় রাজনৈতিক মহল।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এর আগে একই ভাবে সদর উপজেলার চরশাহী, কুশাখালী, মান্দারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে অশ্লীল আচরণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানতে চাইলে ১২নং চরশাহী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহ সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম রাজু জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমার সাথে কয়েকবার অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন, যা একজন জনপ্রতিনিধির সাথে করা কখনো কাম্য নয়। ১৮নং কুশাখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন মানিকের সাথেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। তিনি আমার বাবা মা তুলে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করেন এবং তাকে বিনা কারনে কয়েকবার কারণদর্শানোর নোটিশ প্রদান করে হয়রানি করেন। চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ আবুল কাশেম চৌধুরী জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অশ্লীল আচরণের কথা জেলা প্রশাসকের সাথে স্বাক্ষাৎ করে প্রতিকার চেয়েছি। ঘটনাস্থলে উপস্থিত চন্দ্রগঞ্জ ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম (শিপন খলিফা) ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সদস্য আব্দুর রহমান আরজু ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, একজন ইউএনও এই ভাবে খারাপ ভাষায় কথা বলতে পারে এটা আমাদের জানা ছিল না। চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে জানতে শুক্রবার বিকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেনের মোবাইলে বার বার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ না করে কেটে দেন। হোয়াটস এ্যাপে লিখিত ভাবে প্রশ্ন পাঠিয়েও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তিনি ম্যাসেজ সিন করেছেন।
শুক্রবার বিকালে লক্ষীপুর জেলার জেলা প্রশাসকের মুঠোফোনে এ বিষয়ে জানতে ফোন করা হলে কল রিসিভ করেন নি। পরে জেলা প্রশাসকের সরকারী নাম্বারে হোয়াটস এ্যাপে লিখিত ভাবে প্রশ্ন পাঠিয়েও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তিনি ম্যাসেজ সিন করেছেন।
প্রসঙ্গত, লক্ষীপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন এর আগে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত থাকা কালে হাতিয়া দ্বীপ সরকারি কলেজের এক শিক্ষককে লাঞ্ছিত করায় কলেজ শিক্ষার্থীরা তাকে অপসারনের দাবীতে মানববন্ধন ও ক্লাশ বর্জন অব্যাহত রাখলে আন্দোলনের মুখে তাকে লক্ষীপুর সদর উপজেলায় বদলী করা হয়।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by