উপ-সম্পাদকীয়

লোডশেডিং-এ অতিষ্ট বাঁশখালীবাসীর জনজীবন!

  প্রতিনিধি ৩ এপ্রিল ২০২৪ , ৭:২৪:০৩ প্রিন্ট সংস্করণ

লোডশেডিং-এ অতিষ্ট বাঁশখালীবাসীর জনজীবন!

রমজান মাস, একদিকে রোদের তীব্র প্রকোপ অন্যদিকে লোডশেডিং-এর অসহ্য যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে চট্টগ্রামের বাঁশখালীবাসী। দৈনন্দিন জীবনে এর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ আর উৎকণ্ঠা। অনেকে বিরক্তি প্রকাশ করে দিচ্ছেন ফেসবুকে পোস্ট।

প্রচণ্ড গরমে জনজীবনে যখন নাভিশ্বাস তখন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা মতো যুক্ত হয়েছে অতিরিক্ত লোডশেডিং। অতিষ্ঠ বাঁশখালীবাসী সহ সারা দেশের মানুষ। দেশের বিভিন্ন স্থানে লোডশেডিং এর চিত্র দেখা মিললেও, বাঁশখালীতে তা যেন কয়েকগুণ। এতে জনজীবনে নেমে এসেছে মারাত্মক প্রভাব। স্থানীয়রা এতে খুবই অতিষ্ঠ। বলতে গেলে এ উপজেলায় ২৪ ঘণ্টায় ১০-১২ ঘণ্টাও বিদ্যুৎ থাকছে কিনা সন্দেহান। দেশের অন্যতম পর্যটন স্থান হিসেবে পরিচিত এই উপজেলার প্রায় কয়েক লাখ মানুষ ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ। সাংসারিক কাজকর্ম থেকে শুরু করে চিকিৎসা, শিক্ষা, শিল্প–কলকারখানা ও কৃষিতে বিপর্যয় নেমে এসেছে। কবে নাগাদ এই বিপর্যয় কাটবে, তা বিদ্যুৎ বিভাগ সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারছে না।

রমজান মাস উপলক্ষে মানুষের সচরাচর খাবার তালিকায় বেশ ধরনের উপকরণ যেমন সবজি, মাছ আর ইফতার সামগ্রী মজুদ থাকে। যা ফ্রিজ কিংবা হিমাগারে মজুদ থাকে। অনেক দোকানদার তাদের দোকানের ইফতার সামগ্রী তৈরির উপকরণ কিনে আগে থেকে ফ্রিজে রেখে দেন। কিন্তু দিনের বেশির ভাগ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় ফ্রিজের খাবার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে তাঁদের পক্ষে জীবন যাপন করা মুশকিল হয়ে পড়েছে।

দীর্ঘ সময় ধরে নিয়মিত বিদ্যুৎ না থাকা আর বিদ্যুৎ বিভ্রান্তির এই ভেলকিবাজিতে শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধরাও ঠিকমতো ঘুমাতে পারছেন না। ফলে রীতিমতো অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ঘেমে জ্বর-কাশিসহ ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে তারা। এছাড়া শিক্ষার্থীরাও ঠিকমতো পড়ালেখা করতে পারছেন না। বলতে গেলে জনজীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে এই লোডশেডিং তথা বিদ্যুৎ বিভ্রাট!

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, শহরের তুলনায় গ্রামে লোডশেডিং বেশি হচ্ছে। এর বহুবিধ কারণও রয়েছে। শহরে গুরুত্বপূর্ণ মানুষের আবাসন, শিল্পকারখানা, বড় বড় অফিস-আদালত; তাই শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহও বেশি। বড় শহরের কোনো একটি অংশে কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকলে বিদ্যুৎ সরবরাহ অফিসে অনেক জায়গা থেকে ফোন আসে। অনেক সময় মানুষ প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসেন, বিদ্যুৎ অফিসে হামলার ঘটনাও ঘটে।

বিপরীতে গ্রামে লোডশেডিং হলে এমন কিছু হয় না। বরং তারা বিদ্যুৎ আসার অপেক্ষায় থাকেন। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় শহরের তুলনায় গ্রামে লোডশেডিংয়ে দুর্ভোগ বেশি হয়। বিদ্যুতের বিকল্প হিসাবে শহরের বেশির ভাগ অফিস-আদালত, শিল্পকারখানা, আবাসিক এলাকা, কিংবা বাড়িতে জেনারেটর বা আইপিএস থাকে। কিন্তু গ্রামের বেশির ভাগ বাড়িতে এসব নেই। কারণ, এসব বিকল্প ব্যবস্থা রাখার সামর্থ্য বেশির ভাগ মানুষের নেই।

বিদ্যুৎ-বিভ্রাটের এমন চিত্রে মানুষের মাঝে বিরুপ প্রভাব ফেলার পাশাপাশি দেখা দিয়েছে অসহনীয় যন্ত্রণা। তারা রীতিমতো বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করছেন। তবে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের এমন কান্ডের পিছনে কি রহস্য? উৎপাদনের তুলনায় চাহিদা বেশি নাকি বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের ফল। যার ফলে এমন চিত্র দেখে অভ্যস্ত হতে হচ্ছে সাধারণ জনগণকে। এর একটা বিহীত চাই। দ্রুত এর সমাধান করে বিদ্যুৎ বিভ্রাট কমিয়ে আনা হোক।

লিখেছেনঃ তৌহিদ-উল বারী

বাঁশখালী, চট্টগ্রাম। 

আরও খবর

Sponsered content

Powered by