প্রতিনিধি ১৬ জুন ২০২১ , ৬:২৮:৫৭ প্রিন্ট সংস্করণ
গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর-ঠুটিয়াপাকুর রাস্তায় একটি বক্স কালভার্টের এক পাশের বেশকিছু অংশ ভেঙে পড়েছে। এতে করে এই পাকা রাস্তায় চলাচলকারী যানবাহন এবং পথচারীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রাস্তার ভেঙে যাওয়া স্থানে দূর্ঘটনা রোধে সর্তকতা চিহ্ন হিসেবে ‘লাল পতাকা’ টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কয়েকদিন ধরে এই অবস্থা চললেও রাস্তার ওই বক্স কালভার্টটি মেরামতের কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। অথচ এই রাস্তায় প্রতিদিন চলেন দুই উপজেলার কয়েক ইউনিয়নের মানুষ।
জানা গেছে, ‘রোড পারমিট’ না থাকা সত্ত্বেও গ্রামীণ এই পাকা রাস্তা দিয়ে অতিরিক্ত মালামাল নিয়ে অবৈধ ভাবে ট্রাক, ট্রাক্টর, কাকড়া এবং যাত্রীবাহী কোচ চলাচল করে। এতে ওই রাস্তার বিভিন্ন অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যেই সাম্প্রতিক সময়ের বৃষ্টির মাঝে উপজেলার ভাতগ্রাত ইউনিয়নের পাকুরিয়াবিল বাজার পার হয়ে কৃষ্ণপুর জোড়া গাবেরতল নামকস্থানে বক্স কালভার্টটির উত্তরপাশের বেশকিছু অংশ ভেঙে পড়ে।
সড়ক পথে সাদুল্যাপুর শহর থেকে পাশ্বর্বর্তী পলাশবাড়ী উপজেলার সঙ্গে অতিদ্রæত সংযোগ স্থাপন করা এই রাস্তা দিয়ে আশপাশের অত্যন্ত ৬ থেকে ৮ টি ইউনিয়নের মানুষজন যাতায়াত করেন। কিন্তু বক্স কালভার্টটির একপাশের অংশ ভেঙে পড়ায় ভারি যানবাহন নিয়ে চলাচলে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। যেকোন সময় বক্স কালভার্টটির অপর অংশও ভেঙে পড়তে পারে বলে স্থানীয়রা ধারণা করছেন।
স্থানীয় ক্ষোর্দ্দকোমরপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাজু মিয়া জানান, বক্স কালভার্টটির এক পাশের অংশ ভেঙে যাওয়ার পরের দিনই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রকৌশলীসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। কিন্তু আজ অবধি সেটি মেরামত না করায় জনদুর্ভোগ বেড়েছে। আস্তে আস্তে কালভার্টটির অপর অংশ ভেঙে যাচ্ছে। তাই এটির দ্রæতই মেরামত প্রয়োজন।
এই রাস্তায় চলাচলকারী সাদুল্যাপুর সরকারী কে.এম পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মশিউর রহমান জানান, বক্স কালভার্টটি মেরামত করা জরুরী। কারণ এই রাস্তায় প্রতিদিন প্রচুর পরিমান মানুষ যাতায়াত করেন। বিশেষ করে সাদুল্যাপুর উপজেলা শহর এবং পাশ্ববর্তী পলাশবাড়ী উপজেলায় যেতে এই রাস্তার কোন বিকল্প নেই।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সাদুল্যাপুর উপজেলা প্রকৌশলী এ.এইচ.এম কামরুল হাসান রনী জানান, এই পাকা রাস্তায় ‘হেভিলোডেট ট্রাইকোল’ মানা হচ্ছেনা। অর্থাৎ এই রাস্তা যে লোডেড ডিজাইনে তৈরি করা হয়েছে, বাস্তবে তার চেয়ে অনেক বেশি লোড নিয়ে চলাচল করছে বেশকিছু যানবাহন।
বিশেষ করে রাতে আঁধারে অতিরিক্ত লোড নিয়ে ট্রাক, ট্রাক্টর, কাকড়া, যাত্রীবাহী কোচ চলাচল করছে অবাধে। এতে রাস্তাটি দ্রুতই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সেজন্য অতিরিক্ত লোড বহনকারী যানবাহনের কারণে বক্স কালভার্টটি ভেফু পড়েছে। তাই ওই স্থানে আবার নতুন একটি উন্নত বক্স কালভার্ট নির্মাণের ব্যবস্থা করা হবে। তবে সেটি কতদিনের মধ্যে নির্মাণ করা সম্ভব হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছেনা।
সাদুল্যাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদ রানা জানান, সাদুল্যাপুর-ঠুটিয়াপাকুর পাকা রাস্তায় অতিরিক্ত লোড নিয়ে ভারি যানবাহন চলাচলের নিয়ম নেই। কিন্তু রাতের আঁধারে ওই রাস্তায় মালবাহী ট্রাকসহ যাত্রীবাহী কোচ চলাচল করে বলে জানতে পেরেছি। তাই এখন থেকে এগুলো বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নবীনেওয়াজ বলেন, বক্স কালভার্টটি যাতে দ্রæত সময়ের মধ্যে মেরামত করা যায় সেই ব্যবস্থা করা হবে। আর মেরামত না হওয়া পর্যন্ত পথচারী এবং যানবাহনকে ওই স্থানে সতর্কতার সঙ্গে পারাপার হতে হবে।