দেশজুড়ে

হালদায় ডিম ছেড়েছে কার্প জাতীয় মা মাছ, নদীতে উৎসবমুখর পরিবেশ

  প্রতিনিধি ২২ মে ২০২০ , ৪:৩৪:২৩ প্রিন্ট সংস্করণ

নেজাম উদ্দিন রানা, রাউজান (চট্টগ্রাম) : এশিয়ার অন্যতম প্রাকৃতিক মৱস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে ডিম ছেড়েছে কার্প জাতীয় (রুই, কাতলা, মৃগেল ও কালিবাউশ)মা মাছ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় শুক্রবার ভোর থেকেই নদীর বিভিন্ন স্পটে জাল, বালতিসহ ডিম সংগ্রহের সরঞ্জাম নিয়ে ২৮০টি নৌকা যোগে ৬১৬জন ডিম সংগ্রহকারী নদীতে অবস্থান নিয়ে ডিম সংগ্রহ করেন।

এ সময় হালদা নদীর রাউজান-হাটহাজারী অংশে উৱসবের আমেজ সৃষ্টি হয়। ডিম সংগ্রহকারীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ২১ মে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে শত শত ডিম সংগ্রহকারী হালদা নদীতে অবস্থান নিয়ে ডিম ছাড়ার অপেক্ষায় থাকেন। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে কিছু কিছু ডিম সংগ্রহকারীদের জালে নিষিক্ত ডিম পা্ওয়া যায়। শুক্রবার ভোর আনুমানিক চারটার দিকে মা মাছ পুরোদমে ডিম ছাড়েন।

এ সময় নদীর আজিমের ঘাট, নাপিতের ঘোনা, অংকুরী ঘোনা, রামদাশহাট,খলিফার ঘোনা, গড়দুয়ারা,সোনাইর মুখ এলাকায় অবস্থান নিয়ে ডিম সংগ্রহ করতে দেখা যায় সংগ্রহকারীদের। হালদা পাড়ের আজিমের ঘাট এলাকার ডিম সংগ্রহকারী পরান, সুবল জাহাংগীর, সেলিম, মুন্সি, সাধন ও প্রফুল্ল জানান, এ বছর সাতটি নৌকা দ্বারা ডিম সংগ্রহ করছেন তারা। বৃহস্পতিবার নদীতে অবস্থান নিয়ে শুক্রবার ভোর চারটা থেকে তারা ডিম সংগ্রহ করতে থাকেন।

শুক্রবার দুপুর বারটা পর্যন্ত সাতটি নৌকায় ১৪/১৫ বালতি ডিম সংগ্রহ করতে পেরেছেন তারা। অংকুরিঘোনা এলাকার ডিম সংগ্রহকারী মিলন বড়ুয়া জানান, চারটি নৌকা নিয়ে ভোর চারটা থেকে নদীতে অবস্থান নিয়ে শুক্রবার দুপুর সাড়ে বারটা পর্যন্ত ১৫-১৬ বালতি ডিম সংগ্রহ করেছেন তিনি। খোকন জলদাশ জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় ভালোই ডিম সংগ্রহ করেছেন তিনি।

শুক্রবার সকালে হালদা নদীতে ডিম সংগ্রহ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন জেলা মৱস্য কর্মকর্তা ফারহানা লাভলী, রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোনায়েদ কবির সোহাগ, হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও হালদা বিশেষজ্ঞ ড. মো. মনজুরুল কিবরীয়া , দে, হাটহাজারী উপজেলা সি.মৱস্য কর্মকর্তা নাজমুল হুদা, রাউজান উপজেলা সি.মৱস্য কর্মকর্তা পিযুষ প্রভাকর, মাঠ কর্মকর্তা রুবেল কান্তি।

রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোনায়েদ কবির সোহাগ বলেন, হালদা নদীতে আমরা সকাল থেকে অবস্থান করে ডিম সংগ্রহকারীদের সাথে কথা বলে জানতে পেরেছি এ বছর অন্যান্য বছরের তুলনায় নদীতে বেশী পরিমান ডিম ছেড়েছে মা মাছ। এটা আমাদের প্রত্যাশিত ছিল। কারণ হালদার মা মাছ, ডলফিন এবং জীব বৈচিত্র রক্ষায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের নির্দেশে এবং রাউজানের সাংসদ এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীর পরামর্শক্রমে রাউজান উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করেছি।

রাউজান উপজেলা সি. মৱস্য কর্মকর্তা পিযুষ প্রভাকর বলেন, শুক্রবার সকাল সাতে সাতটা থেকে হালদা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ২৮০টি নৌকায় ৬১৬ জন ডিম সংগ্রহকারী ডিম সংগ্রহ করে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে এ বছর হালদা নদী থেকে ২৫ হাজার ৫ শত ৩৬ কেজি ডিম সংগ্রহ করা হয়।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by