প্রতিনিধি ৩০ মার্চ ২০২০ , ৭:৪৮:১২ প্রিন্ট সংস্করণ
পাবনার সুজানগরের এক সময়ের প্রচন্ড স্রোতস্বিনী গাজনার বিল এখন কৃষি জমিতে পরিণত হয়েছে। ফলে আগে ওই বিল মৎস্যজীবীদের জীবিকা নির্বাহের অন্যতম উৎস্য হিসাবে বিবেচিত হলেও বর্তমানে তা কৃষকদের জীবিকা নির্বাহের সোনালী ভূমিতে পরিণত হয়েছে। উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, সরকারি এবং ব্যক্তি মালিকানা মিলে প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমি নিয়ে গড়ে উঠা ওই বিলে এক সময় সারা বছর পানি থৈ থৈ করতো। সে সময় উপজেলার মৎস্যজীবীরা বিলে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু কালের আবর্তনে বর্তমানে বিলটিতে আর সারা বছর পানি থাকেনা। বিশেষ করে বিলে পানি আসার মূল উৎসহ পদ্মা নদীর পানি অগ্রহায়ণ-পৌষ মাসে কমে যাওয়া মাত্র বিলটি শুকিয়ে যায়। ফলে বিলটিতে বছরের ৬ মাস পানি থাকলেও আর ৬ মাস শুকনো থাকে।
বিলপাড়ের উলাট গ্রামের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম শেখ জানান, গত ১৫/১৬বছর যাবৎ অগ্রহায়ণ মাস শেষ না হতেই বিশাল বিস্তৃীর্ণ গাজনার বিল শুকিয়ে যায়। ফলে বিল পাড়ের প্রায় অর্ধশত গ্রামের হাজার হাজার কৃষক বিশাল বিলের বুক জুড়ে ধান এবং পেঁয়াজসহ বিভিন্ন ফসল আবাদ করেন। বর্তমানে বিল জুড়ে শোভা পাচ্ছে পেঁয়াজ আর ধান। তবে ধানের চেয়ে পেঁয়াজের আবাদ বেশি। পেঁয়াজের ফলন বেশি এবং দামও বেশ ভাল। সেকারণে বিল পাড়ের অধিকাংশ কৃষক পেঁয়াজ আবাদ করেন।
বিল পাড়ের দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা কামরুজ্জামান বলেন, গাজনার বিলে কখনও ফসল আবাদ করা যাবে একথা ভাবাই যায়নি। কেননা বেশি দিন আগের কথা নয়, গাজনার বিলের বিশাল বিশাল ডেউয়ের তোড়ে বিল পাড়ের মানুষের বাড়ি-ঘর ভেঙ্গে লন্ডভন্ড হয়ে যেতো। মানুষ ভয়ে খেয়া নৌকায় ওই বিল পার দিয়ে কোথাও যাওয়ার পর্যন্ত সাহস পায়নি। আর মাছের কথাতো বলেই শেষ করা যাবেনা। বিলে মাছ আর পানি ছিল প্রায় সমান সমান। অথচ কালের আবর্তনে আজ সেই স্রোতস্বিনী গাজনার বিল শুকিয়ে যাওয়ায় সেখানে ফসল আবাদ হচ্ছে। শুধু তাইনা গাজনার বিলে ফসল আবাদ করে অনেক কৃষক স্বাবলম্বী হতে শুরু করেছে বলেও তিনি জানান।